চিঠিপত্র (দশম খণ্ড, ১৯৬৭)/দীনেশচন্দ্র সেনকে লিখিত/৫
[এপ্রিল ১৯০২]
ওঁ
বোলপুর
প্রীতিসম্ভাষণমেতৎ
অতি সাধু প্রস্তাব। স্টেশনের নিকটে, শান্তিনিকেতন হইতে মাইল খানেক তফাতে ১০/১২ টাকা ভাড়ায় একটি বাসা পাওয়া যাইতে পারে। যদি ইচ্ছা করেন তবে সেই বাসাটি আপনার জন্য অধিকার করিবার চেষ্টা করা যায়। এখানে মারীভয় হইতে দূরে নিশ্চিন্ত চিত্তে বন্ধুত্ব ও বিদ্যার চর্চ্চা করিতে পারিবেন। আর একবার শিলাইদহে উপস্থিত হইবার প্রস্তাবটিকে যেভাবে সম্পূর্ণ মাটি করিয়াছিলেন এবারে তাহার আশঙ্কা নাই ত? একবার না হয় আপনি আপনার ছেলেটিকে সঙ্গে লইয়া এখানকার বাসাটা পর্যবেক্ষণ করিয়া যান— তাহার পরে আপনার কোন আত্মীয়ের সাহায্যে পুত্র কলত্রগণকে এখানে আনিয়া ফেলিবেন। কি বলেন? মহাপ্রাজ্ঞ চাণক্য পরামর্শ দিয়াছেন যে এক পা আগে দিয়া অন্য পা-টা পরে টানিয়া লওয়া কর্ত্তব্য।
আপনি একবার আমার এলাকার মধ্যে আসিয়া পড়িলে তাহার পরে যে কাণ্ডটা করা যাইরে সে আমার মনেই আছে। তাই বলিয়া বিনোদিনীর রহস্যনিকেতনে আপনাকে অকালে প্রবেশ করিতে দেওয়া আমার সম্পাদকধর্ম্মসঙ্গত হইবে কিনা তাহা এখনো স্থির করিয়া উঠিতে পারিতেছি না।
যাহা হউক্ আর বিলম্ব করিবেন না।— পুঁথিপত্রসহ লুপমেলের গাড়ীতে চড়িয়া বলুন তাহার পরে আর আপনাকে কে নিবারণ করিতে পারে? ইতি ১৩ই বৈশাখ ১৩০৯।
শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর