চিত্ত-মুকুর/হিতকরী সভার সাম্বাৎসরিক সম্মিলন উপলক্ষে

হিতকরী সভার সাম্বাৎসরিক

সম্মিলন উপলক্ষে।

মিলিত বঙ্গের সুত দেশ-হিত সাধনে,
উজলিল সভাতল মরি বঙ্গ-রতনে!

সারঙ্গ গম্ভীরে বাজ, বাজ জোড়ে পাখয়াজ,
উচ্চ তারে তানপুরা গহরে আমার সনে।
তুষিব পীযুষ ঢালি বঙ্গের সুধীর গণে
ভাগ্যবতী তুমি উত্তর নগরি,
তাই এ রতনে দীপ্ত তব পুরী।
জাহ্নবী গরভে ঢাকা ছিলে বনে,
এ সৌভাগ্য তব কে ভাবিত মনে।
এ চারি সন্তান তব লভিলে কি শুভক্ষণে!
ভাতৃদ্বয় জয় বিজয় প্যারী বামাচরণে।
পুত্ররাজকৃষ্ণ দয়ার জলধি,
বদান্য তাহার নাহিক অবধি।
সুধু তাই কেন প্রত্যেক সন্তানে
দেশ-হিতে রত অবিচল মনে,
হেন পুত্রগণ যার, ভাগ্যবতী সে নগরী,
ভূতলে অতুল ধাম, জগতে সে স্বর্গপুরী।
ভাতৃশ্রেষ্ঠ প্যারি কোথাহে এখন,
ফাটে বক্ষ তোরে করিয়ে স্মরণ!
বৎসরান্তে এই শুভ সম্মিলন,
ইথেও তোমার হবে না মিলন!

যেই হিতকরী-সভা সংস্থাপিলে যতনে,
মিলিতে নারিলে ভাই তারি শুভ মিলনে।
সৃজিলে যে কীর্তিস্তম্ভ দেখিলে না নয়নে,
সুধু ক্লেশ সুধু শ্রম সহিলে হে জীবনে।
কাঁদরে মৃদঙ্গ সকরুণ স্বরে,
কাঁদ পাখোয়াজ সে প্যারীর তরে,
কাঁদ তানপূরা কাঁদরে হারমিন্,
কাঁদ শিশু যুবা কাঁদরে প্রবীণ।
তরুলতা পশুপক্ষী কাঁদমিলি সর্ব্বজনে,
কাঁদলো জাহ্নবি আজি উথলি আমার সনে।
মুছি নেত্র-জল পুন দেখরে নয়ন তুলি,
ওইযে সোদরগণ রয়েছে সভা উজলি।
বাজরে বাদিত্র আনন্দেতে পুন,
ডাক জগদীশে ডাক ঘন ঘন।
ছিল ক্ষুদ্র পল্লী হয়েছে নগরী,
কিছু দিন পরে হবে স্বর্গপুরী।
হারমিন পাখোয়াজ, বাজ মিলি উচ্চতানে,
দীর্ঘজীবী করি বিধি রাখুন এ ভাতৃগণে।