ছড়া/গলদা চিংড়ি তিংড়িমিংড়ি

গলদা চিংড়ি তিংড়িমিংড়ি,
  লম্বা দাঁড়ার করতাল।
পাকড়াশিদের কাঁকড়া-ডােবায়
  মাকড়সাদের হরতাল।
পয়লা ভাদর, পাগলা বাঁদর—
  লেজখানা যায় ছিঁড়ে।
পালতে মাদার, সেরেস্তাদার
  কুটছে নতুন চিঁড়ে।
কলেজ-পাড়ায় শেয়াল তাড়ায়
  অন্ধ কলুর গিন্নি।
ফটকে ছোঁড়া চটকিয়ে খায়
  সত্যপীরের সিন্নি।
মুল্লুক জুড়ে উল্লুক ডাকে,
  ঢোলে কুল্লুক ভট্ট,
ইলিশের ডিম ভাজে বঙ্কিম,
  কাঁদে তিনকড়ি চট্ট।
গরানহাটায় সজনোডাঁটা
  কিনছে পুলিস সার্জন,
চিৎপুরে ওই নাগা সন্ন্যাসী
  কাত হয়ে মরে চারজন।

পঞ্চায়েতের চুপড়ি বেতের,
  সরষে ক্ষেতের চাষী।
কাঁচালঙ্কার ফোড়ন লাগায়
  কুড়োনচাঁদের মাসি।
পটোলডাঙায় চক্ষু রাঙায়
  মুরগিহাটার মিঞা।
শম্ভু বাজায় তম্বুরাটায়
  কেঁয়াও কেঁয়াও কিঞা।
ঠন্‌ঠনে অজি বেচে লণ্ঠন
  চার পয়সায় আটটা।
মুখ ভেংচিয়ে হেড্‌মাস্টার
  মন্তুরে করে ঠাট্টা।
চিন্তামণির কয়লাখনির
  কুলির ইনফ্লুয়েঞ্জা।
বিরিঞ্চিদের খাজাঞ্চি ওই
  চণ্ডীচরণ সেন-জা।
শিলচরে হায় কিলচড় খায়
  হস্টেলে যত ছাত্র।
হাজি মােল্লার দাঁড়িমাল্লার
  বাকি একজন মাত্র।
দাওয়াইখানায় শিঙাড়া বানায়,
  উচ্চিংড়েটা লাফ দেয়।

কনেস্টেব্‌ল্‌ পেতেছে টেব্‌ল্‌
  খুদিরে চায়ের কাপ দেয়।
গুবরে পােকার লেগেছে মড়ক,
  তুবড়ি ছােটায় পঞ্চু।
ন্যায়রত্নের ঘাড়ের উপর
  কাকাতুয়া হানে চঞ্চু।
সিরাজগঞ্জে বিরাট মিটিং,
  তুলাে-বের-করা বালিশ।
বংশু ফকির ভাঙা চৌকির
  পায়াতে লাগায় পালিশ।
রাবণের দশ মুণ্ডে নেমেছে।
  বকুনি ছাড়ায়ে মাত্রা।
নেড়ানেড়ি দলে হরি হরি বলে,
  শেষ হল রামযাত্রা।

 পুনশ্চ
১১ নভেম্বর ১৯৪০