কাশ্মীর

সেই বিশ্রী দম-আটকানাে কুয়াশা আর নেই,
নেই সেই একটানা তুষার বৃষ্টি,
হঠাৎ জেগে উঠেছে—
সূর্যের ছোঁয়ায় চমকে উঠেছে ভূস্বর্গ।
দু’হাতে তুষারের পর্দা সরিয়ে ফেলে
মুঠো মুঠো হলদে পাতাকে দিয়েছে উড়িয়ে,
ডেকেছে রৌদ্রকে,
ডেকেছে তুষার-উড়িয়ে-নেওয়া বৈশাখী ঝড়কে,
পৃথিবীর নন্দন কানন কাশ্মীর।

কাশ্মীরের সুন্দর মুখ কঠোর হ’লাে
প্রচণ্ড সূর্যের উত্তাপে:
গলে গলে পড়ছে বরফ
ঝ’রে ঝ’রে পড়ছে জীবনের স্পন্দন;
শ্যামল আর সমতল মাটির
স্পর্শ লেগেছে ওর মুখে,
দক্ষিণ সমুদ্রের হাওয়ায় উড়ছে ওর চুল:
আন্দোলিত শাল, পাইন আর দেবদারুর বনে
ঝড়ের পক্ষে আজ সুস্পষ্ট সম্মতি।
কাশ্মীর আজ আর জমাট-বাঁধা বরফ নয়:
সূর্য-করােত্তাপে জাগা কঠোর গ্রীষ্মে
হাজার হাজার চঞ্চল স্রোত।
তাই আজ কাল-বৈশাখীর পতাকা উড়ছে
ক্ষুব্ধ কাশ্মীরের উদ্দাম হাওয়ায় হাওয়ায়;
দুলে দুলে উঠছে

লক্ষ লক্ষ বছর ধরে ঘুমন্ত নিস্তব্ধ
বিরাট ব্যাপ্ত হিমালয়ের বুক॥