স্বপন-গাথা।

সুষুপ্তির প্রাণে,—
মাথাটি রাখিয়ে
যখন নীরবে
ঘুমায়ে রই,–

চাঁদিনী জোছনা,
চালিছে অমিয়া,
যেন দিশে হারা,—
আমাতে নই!

নিথর নীলিমা,
বিবশা কুন্তলা,
যেন সে বিহ্বলা,
—মোহিত হই!

সুযুপ্তির মোহে,
সুষুপ্তে ঢালিয়ে,
মধুরে ফুটেছে
অমনি রই!


গলান জোছনা—
রজত বরণা,
হেম আভরণা,
মরি কি শোভা!

স্বপনের কোলে,
ঘুমের ঘোরেতে,
আকুল করিয়ে,
শোনায় গাথা!

সুষমা বালিকা,
হইয়ে বিমনা,
কাল-ধনু-বাঁকা,
—উজলে শোভা!

জ্যোতিব কণিকা,
জোছনার পাবা,
—সরমেতে সারা
মধুর আহা!

ভ্রুকুটী করিয়ে,
ধনুকে জুড়িয়ে,

পড়ে আছাড়িয়ে,
পাগল হ’য়ে!

ফুলরাশি আহা,
কত না গুছিয়া,
গাঁথিয়া মালিকা
পরায় গলে!

মোহিত হইয়ে,
দেবতা সকলে,
অবাক্‌ হইয়ে,
চাহিয়া রহে!

কুসুমের কোলে,—
তাহাব প্রাণেতে,—
আমার প্রাণেতে—
মিলায়ে যাবে?

এ হেন স্বপন,
আর ত কখন,
দেখেনি ভুবন,
এই সে মধু!


সকলি তাহার,—
জগৎ আমার,—
সেই সুষমার,—
সকলি শুধু।

আমিও তাহার,—
সেও যে আমার,—
এবে সুষমার—
প্রাণের বঁধু!

গভীর যামিনী,
নীরব অবনী,
সুন্দর মালিনী,
একেলা বঁধু!

থেলিছে সোহাগে,
আমার সহিতে,
—মধুরে ফুটেছে,
কুসুম-রাজি!

নিলীমা নিথর,
দূর পারাবার,

অকূল পাথার
কনকবাশি!

মালিকা গাঁথিয়ে,
সুন্দর করিয়ে,
সুন্দরের সাথে,—
বাজিছে বাঁশি!

সাঁঝের তারাটী,
হইয়া উদাসী,
সেই হাসি হাসি,
ঢালিছে রাশি!

অকস্মাৎ আহা,
কোথা সে বালিকা?—
জগৎ শৃঙ্খলা,
তাহার কাছে।

—লুকাইল দূরে,
—গহন কাননে,
—অজানিত দেশে,
আমারে ভুলে!


নাহি আর তারে,
পাইব জনমে,
শ্মশানের মাঝে,
অভাগা প্রাণে!

কোথায় লুকা'ল,
কোথায় সে গেল,—
স্বপন টুটিল,
অভাগ। শিরে!