ডিটেক্টিভ পুলিস (প্রথম কাণ্ড)/ডাক্তার বাবু বক্তা/চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ
চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ।
গোলাপের বাড়ী হইতে তাড়িত হইবার কিছুদিবস পর হইতেই আমার ক্রোধের ভাগ এত বৃদ্ধি হইয়াছিল যে, তাহা বলিতে পারি না। সেই সময়ে সামান্য ক্রোধের বশবর্ত্তী হইয়া আমি যে প্রকার একটী লোমহর্ষণকর ও অস্বাভাবিক কার্য্য করিয়াছিলাম, তাহা শ্রবণ করিলেও প্রায়শ্চিত্তের প্রয়োজন হয়।
গোলাপের ভবনে আর স্থান না পাইয়া সেই সময়ে আমাকে আমাদিগের বাড়ীতেই বাধ্য হইয়া থাকিতে হইয়াছিল। বাড়ীতে আমার একটা তৃতীয় বৎসর বয়স্কা কন্যা ছিল। সেই সময় আমার ঐ কন্যাটীর একটু অসুখ বোধ হইয়াছিল। অসুখ অবস্থায় একদিবস সন্ধ্যার সময় সে এরূপ ক্রন্দন করিতে আরম্ভ করে যে, কোন প্রকারে কেহই তাহাকে সান্ত্বনা করিতে সমর্থ হয় না। আমিও প্রথমে তাহাকে সান্ত্বনা করিবার নিমিত্ত অনেক চেষ্টা করিলাম, কিন্তু কোন রূপেই তাহাকে শান্ত করিতে সমর্থ না হওয়ায় হঠাৎ আমার প্রচণ্ড ক্রোধের উদয় হইল। হিতাহিতজ্ঞান-বিবর্জ্জিত হইয়া, অপত্যস্নেহের সুদৃঢ় বন্ধন ছেদন করিয়া, আমার নিকট যে সকল ঔষধ ছিল, তাহার মধ্য হইতে একটী ঔষধ বাহির করিলাম। উহার কিয়দংশ একটী কাচপাত্রে ঢালিয়া লইয়া, কিঞ্চিৎ জল সহযোগে উহা নিজহস্তেই আমার সেই কন্যাকে পান করাইয়া দিলাম। মহাশয়! বলিব কি, দেখিতে দেখিতে তাহার রোদন থামিল, সে ঘুমাইয়া পড়িল; কিন্তু সেই অঘোর নিদ্রা হইতে সুকুমারী কন্যা আমার আর উত্থিত হইল না। পিতামাতা স্ত্রী প্রভৃতি সকলেই বুঝিলেন, প্রবল রোগের প্রতাপেই আমার অবোধ কন্যা ইহজীবন পরিত্যাগ করিল। সকলের অবস্থা আমি স্বচক্ষে সন্দর্শন করিলাম, কিন্তু কাহাকেও কিছু বললাম না। আপনার হৃদয়ের ভিতর মুখ লুকাইয়া একবারমাত্র অতি অল্পকালের নিমিত্ত রোদন করিয়াছিলাম, কিন্তু আমার প্রস্তর-কঠিন মন তখনই আরও দৃঢ়তর হইল। মনের অবস্থা দেখিয়া আসন্ন দুঃখ সুদূরে পলায়ন করিল।
কিছু দিবসের মধ্যেই গোলাপকে ভুলিলাম, কিন্তু এক গোলাপের পরিবর্ত্তে শত গোলাপ আসিয়া জুটিল। তখন সোণাগাছির এমন কোন স্থান বাকি ছিল না, যে স্থানে আমার পদধূলি না পড়িয়াছিল। কিন্তু তখন আমার হস্তে একটীও পয়সা ছিল না; অতএব কি প্রকারে কিছু টাকা সংগ্রহ করিব, তাহার চিন্তায় নিযুক্ত হইলাম। ভাবিয়া ভাবিয়া তাহারও এক অভূতপূর্ব্ব উপায় বাহির করিলাম। পাঠকগণ মনোযোগ পূর্ব্বক পাঠ করিলে বুঝিতে পারিবেন যে, আমার পরিণামদর্শিতা কতদূর ছিল এবং আমি কি প্রকার চতুরতার সহিত সকল সময়ে কার্য্য করিয়াছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, আমার এই প্রকার তীক্ষ্ণবুদ্ধিকে সৎপথে না চালাইয়া সতত অসৎপথ অবলম্বন করিতেই প্রশ্রয় দিয়াছি। আমি যে প্রকার নিকৃষ্টবৃত্তি অবলম্বন পূর্ব্বক অর্থ সংগ্রহের উপায় বাহির করিলাম, তাহা প্রথম হইতে ক্রমে বলিতেছি।
আমার স্ত্রীর নিকট যে ২০০০৲ টাকা ছিল, তাহা লইয়া কলিকাতার নিকটবর্ত্তী একটী প্রসিদ্ধ স্থানে গমন করিলাম। তথায় একটা বড় গোছের বাটী ভাড়া লইলাম এবং ঐ দুই সহস্র টাকার দ্বারা কতকগুলি ঔষধ সংগ্রহ করিয়া একটা ঔষধালয় (ডিস্পেন্সারী) স্থাপিত করিলাম। বলা বাহুল্য, আমি “এম্, বি” ডাক্তার বলিয়া পরিচয় দিয়া চিকিৎসা করিতে লাগিলাম। ঐ চিকিৎসালয় আমার ছোট ভ্রাতার নামে স্থাপিত হইল। এক্সচেঞ্জ গেজেটে বিজ্ঞাপন বাহির করিয়া সর্ব্ব সাধারণকে জানাইতে লাগিলাম যে, এই ঔষধালয়ের অধিকারী আমি নহি, আমার ভ্রাতা। সেইস্থান হইতে ১০।১৫ দিবস পরে কলিকাতায় আসিলে আমার দুষ্কর্মের সাথী অথচ সঙ্গতিশালী কতিপয় ইয়ার আমাকে বলিলেন, “ডাক্তার, তুমি নূতন ডাক্তারখানা করিয়াছ; তোমার উচিত সেইস্থানে আমাদিগকে একদিন নিমন্ত্রণ করিয়া আমোদ-আহ্লাদ করা।” তাঁহাদিগের প্রস্তাবে আমি স্বীকৃত হইলাম। এই সুযোগে অর্থ উপার্জনের আর একটী অদ্ভুত অসৎ উপায় উদ্ভাবন করিয়া তাঁহাদিগকে নিমন্ত্রণ করিবার একটী দিন স্থির করিলাম। সেই নির্দ্দিষ্ট দিবসে তাহাদিগের আটজনকে ও তাহাদিগের আটটী রক্ষিতা বারবনিতাকে নিমন্ত্রণ করিয়া অতিশয় যত্নের সহিত সেই ঔষধালয়ে আনয়ন করিলাম। বারবনিতাগণ উত্তম উত্তম অলঙ্কারে অলঙ্কৃত হইয়া বাবুদের সহিত আসিয়া উপস্থিত হইল। উহাদিগকে নিমন্ত্রণ করিলাম সত্য, কিন্তু কোন প্রকার আহারাদির আয়োজন করিলাম না। কেবল কিছু সুরা আনিয়া, অল্প মাত্রায় পান করিলেও যাহাতে অতিশয় নেসা হয়, এইরূপ একটু একটু ঔষধি তাহাতে মিশাইয়া রাখিয়া দিলাম। সকলে আসিলে একত্র বসিয়া সুরাপান করিতে লাগিলাম। আমি প্রথমে অল্প পরিমাণ পান করিলাম এবং সকলকে অধিক পরিমাণ দিয়া আমি অল্প অল্প করিয়া আরও ২।১ বার পান করতঃ সেইস্থানে যেন অজ্ঞান হইয়া পড়িলাম। সকলে ভাবিলেন, আমার অতিশয় নেসা হইয়াছে। কেহ কিছু না বলিয়া আমাকে উঠাইয়া একখানা কোচের উপর শোয়াইয়া রাখিয়া দিলেন। আমি মাতাল হইয়াছি, এইরূপ ভান করিয়া সেইস্থানে শুইয়া শুইয়া তাহাদিগের অবস্থা দেখিতে লাগিলাম। ইহারা সকলে সুরাপান করিতে করিতে এক এক করিয়া ক্রমে সকলেই হত-চেতন হইয়া পড়িলেন। আমি যখন দেখিলাম আর কাহারও সংজ্ঞা মাত্র নাই, তখন আমি উঠিয়া আস্তে আস্তে স্ত্রীলোক আটটীর শরীরে যতগুলি অলঙ্কার ছিল, তাহার সমস্ত গুলিই খুলিয়া লইয়া, আমার ডিস্পেন্সারীর পশ্চাদ্ভাগে একস্থানে মাটীর ভিতর পুঁতিয়া রাখিলাম, এবং যাহাতে আমারও অতিশয় নেসা হয়, সেই প্রকার সুরাপান করিয়া রহিলাম। পরদিন সকলের শেষে আমার নেসা ছুটিল; উঠিয়া দেখি সকলেই হাহাকার করিতেছেন। আমি তাঁহাদিগের অবস্থা দৃষ্টি করিয়া অতিশয় দুঃখ প্রকাশ করিতে লাগিলাম। স্ত্রীলোক কয়টী থানায় গিয়া নালিস করিতে চাহিল; কিন্তু বাবুগণ তাহাদিগকে নিবারণ করিয়া বলিলেন, “তোমাদিগের গহনা যে আমাদের দোষে চোরে চুরি করিয়া লইয়া গিয়াছে, তাহার আর কিছুমাত্র ভুল নাই; কিন্তু নালিস করিলেই যে গহনাগুলি পাওয়া যাইবে, তাহারই বা সম্ভাবনা কি? লাভের মধ্যে আমাদের এই অকার্য্য প্রকাশ হইয়া পড়িবে। ঐ সকল গহনা আমরাই দিয়াছিলাম, গিয়াছে, না হয় পুনরায় প্রস্তুত করিয়া দিব।” এই বলিয়া তাহাদিগকে নিবৃত্ত করিয়া সকলেই কলিকাতায় চলিয়া আসিলেন। আমি সেই স্থানে থাকিলাম। কিছুদিবস পরে ঐ সকল অলঙ্কার ক্রমে ক্রমে বাহির করিয়া বিক্রয় করিলাম। তাহাতে প্রায় ৮০০০৲ টাকা সংগ্রহ হইল; কিন্তু এক বৎসরের মধ্যেই সুরাপান প্রভৃতি দুষ্কর্ম্মে উহা নিঃশেষ হইয়া গেল।
আমি যে উদ্দেশ্যে আমার ছোট ভ্রাতার নামে ডাক্তার খানা স্থাপন করিয়াছিলাম, এতদিবস সে উদ্দেশ্য সাধনের চেষ্টা করিতে হয় নাই; কারণ হঠাৎ বিনাকষ্টে ৮০০০৲ আট হাজার টাকা পাওয়ায় এক বৎসরকাল আর কোনও কষ্ট ছিল না। এখন পুনরায় আবার টাকার প্রয়োজন হইল, এখন চেষ্টা দেখিতে আরম্ভ করিলাম। সেই সময় আমার ছোট ভ্রাতা, তাহার স্ত্রী ও আমার স্ত্রী, সকলকে সেইস্থানে লইয়া গিয়া অতিশয় যত্নের সহিত রাখিলাম। আমার ভ্রাতা আমার ব্যবহারে যে কতদূর সন্তুষ্ট হইল, তাহা বলিতে পারি না। সেই সময় আমি আমার এক বৎসর পূর্ব্বের আশাকে ক্রমে ফলবতী করিতে ইচ্ছা করিলাম।
একদিবস আমার ভ্রাতাকে বলিলাম, “ভাই! আমি ইচ্ছা করিয়াছি, ৩০,০০০৲ ত্রিশ হাজার টাকায় আমার জীবনকে বীমা করিব; কিন্তু আমার শরীর সুস্থ নহে, একারণ আমার জীবন বীমা হইতে পারে না। তুমি বোধ হয়, ইহার অবস্থা বিশেষরূপ অবগত নহ। কলিকাতায় এই জন্য কয়েকটী আফিস প্রতিষ্ঠিত আছে, যদি কেহ তাহার জীবনকে কোন নির্দ্দিষ্ট টাকার নিমিত্ত বীমা করিতে চাহে, তাহা হইলে প্রথমে ডাক্তার তাহাকে পরীক্ষা করে। যদি তাহার কোন প্রকার রোগ না থাকে, তাহা হইলে তাহার যে পরিমাণ বয়স হইয়াছে, ও যত টাকার জন্য সে তাহার জীবনকে বীমা করিতে চাহে, তাহা ধরিয়া হিসাব করিয়া, অন্ততঃ তিন মাস অন্তর একটা নির্দ্দিষ্ট টাকা ঐ আফিসে জমা দিতে হয়। পরে সে অতিশয় বৃদ্ধ, বা তাহার মৃত্যু হইলে, যত টাকার জন্য জীবন বীমা থাকে, সেই টাকাটী, সে বা তাহার উত্তরাধিকারী, একেবারে সেই আফিস হইতে প্রাপ্ত হয়। আমি ইচ্ছা করিয়াছি যে, তুমি আমার নিমিত্ত তোমার জীবনকে বীমা কর। ইহাতে যে টাকা প্রতি তিনমাসে দিতে হইবে, তাহা আমি দিব। পরে তোমার নিকট হইতে আমি লেখাপড়া করিয়া উহা ক্রয় করিয়া লইব। তাহাতে কাহারও কোন ক্ষতি হইবে না, বিশেষতঃ সকলেরই একটী মোটা টাকার সংস্থান থাকিবে।”
আমার হতভাগ্য ভ্রাতা আমার চাতুরী বুঝিল না। সে সরল অন্তঃকরণে আমার প্রস্তাবে সম্মত হইল। তাহার জীবনকে ৩০০০০৲ ত্রিশ হাজার টাকায় বীমা করিয়া, একবার যে টাকা জমা দিবার আবশ্যক, তাহা আমি জমা করিয়া দিলাম, এবং উহা আমার ভ্রাতার নিকট হইতে ১০০০০৲ দশ হাজার টাকায় ক্রয় করিয়া লইলাম। উক্ত প্রয়োজন অনুযায়ী লেখাপড়া হইল, কিন্তু ঐ ১০০০০৲ দশ হাজার টাকা আমাকে দিতে হইল না, উহা কেবল কাগজ-কলমে রহিল। টাকা জমা দেওয়ার পর হইতে আর দুই মাস গত হইল; আর এক মাস অতীত হইলেই আবার নিয়মিত টাকা জমা দিতে হইবে, এই ভাবনা একবার মনে মনে ভাবিলাম। ইতিমধ্যে ভ্রাতাকে সঙ্গে লইয়া কলিকাতায় আসিলাম, তাহার স্ত্রী সেইস্থানেই রহিল।
কলিকাতা আসিয়া ভ্রাতা আমাকে বলিল, “দাদা! আমার একটু মাথা ধরিয়াছে।” আমি তাহাকে একটী ঔষধ দিয়া বলিয়া দিলাম, “ইহাতে তোমার মাথা ধরা ভাল হইবে।” ঔষধ খাইতে খাইতেই তাহার ভেদবমি আরম্ভ হইল। সকলেই বলিল, “ইহার কলেরা হইয়াছে।” আমিও তাহাই বলিলাম। একজন প্রধান ইংরাজ ডাক্তারকে ডাকিয়া আনিলাম, তাহাকেও কলেরা বলিয়া বুঝাইলাম; তিনিও ভাল করিয়া দেখিলেন না। ডাক্তারগণ প্রায়ই কলেরা রোগীর নিকট না যাইয়া দূর হইতেই অবস্থা শুনিয়া ঔষধের ব্যবস্থা করিয়া চলিয়া যান। ইনিও তাহাই করলেন। আমি সেই ঔষধ একটী প্রধান ঔষধালয় হইতে আনিলাম। বলা বাহুল্য, আমি নিজেই ঔষধ খাওয়াইতে লাগিলাম; কিন্তু যে ঔষধ আনিয়াছিলাম, তাহার এক এক দাগ ফেলিয়া দিয়া তাহার পরিবর্ত্তে আমার নিজের ঔষধ এক একবার খাওয়াইতে লাগিলাম।
ব্যারাম ক্রমেই বৃদ্ধি হইতে লাগিল, ডাক্তার সাহেবকে আবার আনাইলাম; আবার সেইরূপে বুঝাইলাম, আবার সেইরূপে ঔষধ আনাইলাম এবং সেইরূপে পরিবর্ত্তন করিয়া আমার নিজের ঔষধ সেবন করাইলাম। পাঠকগণের মধ্যে হয় ত কেহ কেহ জিজ্ঞাসা করিতে পারেন যে, যখন আমার অন্যরূপ উদ্দেশ্য দেখা যাইতেছে, তখন ভাল ডাক্তার ও ঔষধ আনাইবার প্রয়োজন কি? ইহার উত্তর, বোধ হয়, আমার দেওয়া নিষ্প্রয়োজন। তথাপি বলি, এরূপ অবস্থায় যদি কোন প্রকার গোলযোগ উপস্থিত হয়, পুলিস যদি কোনরূপ সন্দেহ করিয়া অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হয়, তাহা হইলে তাহাদিগের চক্ষে ধূলি দেওয়ার প্রয়োজন হইবে বলিয়াই, আমি এই পথ অবলম্বন করিলাম।
রাত্রি প্রায় দুইটার সময় আমার সেই হতভাগ্য ভ্রাতা অকালেই আমা-কর্ত্তৃক ইহজীবন পরিত্যাগ করিল! তাহার মৃত্যুতে বাড়ীর সকলেই শোকসাগরে নিমগ্ন হইলেন। তাঁহাদের সকলের রোদনধ্বনিতে দিঙ্মণ্ডল প্রতিধ্বনিত হইতে লাগিল। বিশেষ তাহার স্ত্রীর আর্ত্তনাদ সকলের হৃদয় বিদীর্ণ করিতে লাগিল, আমার মত পাষণ্ডর চক্ষেও জলবিন্দু আসিয়া উপস্থিত হইল।
সকলেই মৃতদেহ লইয়া ব্যস্ত, সকলেই শোকসাগর নিমগ্ন। আমি কিন্তু আমার কঠিন হৃদয়কে আরও দৃঢ় করিলাম। সেই হৃদয়বিদারক আর্ত্তনাদ-মিশ্রিত ক্রন্দন-ধ্বনির দিকে ক্ষণকালের নিমিত্ত কর্ণপ্রদান না করিয়া, যাহাতে শীঘ্র তাহার সৎকার কার্য্য সমাপন করিতে সমর্থ হই, আমি তাহারই বন্দোবস্ত করিতে লাগিলাম। যত শীঘ্র পারিলাম, সেই হতভাগ্যের মৃতদেহ সেই পতিপ্রাণ হতভাগিনীর হৃদয় হইতে কাড়িয়া লইয়া, গঙ্গাতীরের যে স্থানে মৃতের সৎকার কার্য্য সমাধা হয়, সেইস্থানে লইয়া গেলাম; এবং যত শীঘ্র সেই কার্য্য সমাধা করিতে সমর্থ হই, তাহারই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ করিতে প্রবৃত্ত হইলাম।