অলক্ষণ

শুক্র যদি দীপ্ত বেশে সন্ধ্যাকাশে ওঠে,
ধূমকেতুটার ধূমল পুচ্ছ পিছনে তার লোটে,
অজ্ঞাচার্য্য চেঁচিয়ে বলেন “একি! বিষম দায়!
আমারি এই কুটীর ‘পরে সবার দৃষ্টি? হায়!
না জানি অদৃষ্টে কত কষ্ট আছে আর।”

এমন সময় বলছে ডেকে প্রতিবেশী তার,
“গ্রহের ফেরে এবার আমি ডুবেছি নির্ঘাত,
বাপের হাঁপ আর সারবে কিসে মায়ের পায়ের বাত?
জ্বরের জ্বালায় ধুঁক্‌ছে থোকা, শান্তি নাইকো চিতে,
ভার্য্যা হ’ল বদমেজাজী গ্রহের কুদৃষ্টিতে!
হপ্তাখানেক বন্ধু ছিল মোদের দ্বন্দ্বরণ,
আবার বেধে যায়;—আকাশে দেখ্‌ছ অলক্ষণ?
লোকের মুখে, কানাঘুষায়, বুঝছি আমি বেশ,
উল্টাবে পৃথিবী এবার হবে কলির শেষ।”
অজ্ঞাচার্য্য বলেন “বন্ধু! তোমার কথাই ঠিক্,
গ্রহতারার গতিক দেখে ভুলেছি আহ্নিক!
চল দেখি ভিন্ন গাঁয়ে তল্পী আমার নিয়ে,
ও গ্রামটাতে গ্রহের দৃষ্টি কেমন? দেখি গিয়ে।”
সেথাও দেখে শুকতারা সে তেম্‌নি চেয়ে আছে,
তেম্‌নি লুটায় ধূম্র পুচ্ছ ধূমকেতুটার পাছে!
ফিরে তখন গেল দোঁহে আপন আপন ঘর,
ধৈর্য্য-ধনে ধনী তারা হল অতঃপর।

গেটে।