তীর্থরেণু/রহস্য কুঞ্চিকা

রহস্য—কুঞ্চিকা।
অমরু—খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীর পূর্ব্বে প্রাদুর্ভূত হন। কথিত আছে, যে শঙ্করাচার্য অমরু নামক একজন রাজার মৃতদেহে প্রবিষ্ট হইয়া, মণ্ডন মিশ্রের পত্নী শারদাদেবীর প্রশ্নের উত্তর স্বরূপ অমরু-শতক রচনা করেন। শঙ্কর—দিগ্বিজয়ে, কিন্তু, এ কথার উল্লেখ নাই।
অলরিচি—প্রাচীন রােমাণ্টিক যুগের কবি, জন্মভূমি জর্ম্মনি।
আরাণী—(১৮১৭-১৮৮২) হাঙ্গেরির কবি; গাথা রচনায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন।
আর্ণৎ—(১৭৬৬-১৮৩৮) ইনি নেপােলিয়নের পরম ভক্ত ছিলেন; পৃথ্বীরাজের যেমন চাঁদ কবি, নেপােলিয়নের তেমনি আর্ণৎ।
আসায়াসু—জাপানের কবি। ইহাঁর পিতা য়াসুহিদে ও কবি ছিলেন। খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীর শেষভাগে জন্মগ্রহণ করেন।
ইকুজু—ইনি জাপানী কবি। তান্‌কা রচনার জন্য প্রসিদ্ধ।
ঊকন্—ইনি একজন স্ত্রী—কবি; জন্মভূমি জাপান।
ওয়াইল্ড্—(অস্কার) ইহাঁর রচনা সৌন্দর্য্য ও মাধুর্যের জন্য বিখ্যাত। জন্মভূমি ইংলণ্ড।
ওয়াং-চাং-লিং—চীন দেশের কবি ও সাহিত্যিক; লুশানের বিদ্রোহের পর, রাজপুরুষের সন্দেহে ধৃত ও নিহত হন।
ওয়াং-সেং-জু—চীন দেশের কবি; জন্ম, খৃষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে।
ওয়াট্‌সন্—ইংলণ্ডের কবি; ইনি জীবিত।
ওয়ার্টিমার—জর্ম্মনির কবি; জন্ম ১৮৭৪ খ্রীষ্টাব্দে।
কণ্ণ গনর—দাক্ষিণাত্যের কবি।
কপিলর—দ্রাবিড় কবি; বেদব্যাসের মত ইহাঁর পিতা ব্রাহ্মণ এবং মাতা দাসজাতীয়া ছিলেন।
কামৈন্স—পাের্ত্তুগালের কবি; প্রধান রচনা ‘লুসিয়াড’।
কিনাে—জাপানের বিখ্যাত বীর উচিশকুনির পৌত্র। জন্ম খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীতে।
কিপ্লিং—ইনি জাতিতে ইংরাজ; জন্ম, পঞ্জাবের রাধিয়ার হ্রদের নিকট; হইয়াছেন মার্কিনবাসী। ইহাঁর রচনায় সহৃদয়তার একান্ত অভাব পরিলক্ষিত হয়।
কিস্‌ফালুডি—(১৭৭২-১৮৪৪) হাঙ্গেরির কবি; ইহাঁর ভাইও কবি ছিলেন।
‘কুরাল’-গ্রন্থ—‘কুরু’ অর্থাৎ ‘ক্ষুদ্র’, ক্ষুদ্র কবিতার সমষ্টি কুরাল; কপিলর নামক দ্রাবিড় কবির সহােদর তিরু বল্লুবর কুরাল-গ্রন্থের রচয়িতা। জন্ম মাদ্রাজের নিকটস্থ মাইলাপুরে।
কুরেনবার্গ—ইনি জর্ম্মনির প্রাচীন যুগের কবি।
কোমাচি—(৮৩৪-৮৮০) ইহাঁকে জাপানের স্যাফো বলা যায়। ইনি সুকবি এবং সুন্দরীও ছিলেন।
কোমিয়ু—ইনি জাপানের রাণী ছিলেন; কবিতা ও লিখিতেন।
ক্যাপলন্—শিশু-জগতের কবি; জন্ম ইংলণ্ডে।
গায়গার—নব্য জর্ম্মনির কবি; জন্ম ১৮৬৬ খ্রীষ্টাব্দে। মনস্তত্ত্বের রহস্যবিদ্।
গেটে—(১৭৪৯-১৮৩২) ইনি কবি, বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, ঔপন্যাসিক ও রসজ্ঞ সমালােচক। জন্ম জর্ম্মনিতে।
গােকু—জাপানের বিখ্যাত ফুজিবারা বংশের সন্তান; জন্ম খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে।
ঘোষ (অরবিন্দ)—ইনি “স্বদেশ-আত্মার বাণী মূর্ত্তি” নামে অভিহিত হইয়াছেন।
চাং-চি-হো—(৭০০-৭৫০) কবি ও ‘তও’-পন্থী; ইনি “কুজ্ঝটিকার প্রবীণ ধীবর” নামে বিখ্যাত।
জয়নাব—ইনি তুরস্কের একজন স্ত্রী-কবি; স্বামীর হুকুমে ইহাকে কাব্যালোচনা বন্ধ করিতে হইয়াছিল।
জাফর—ইনি তুরস্কের কবি ও দ্বিতীয় বায়াজিদের একজন অমাত্য ছিলেন। রাজভৃত্যদিগের ষড়যন্ত্রে ইনি হারুণ-অল্-রসীদের মন্ত্রী জাফরের মত প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত হন।
জামি—(১৪১৪-১৪৯২) পারস্যের স্বনাম ধন্য কবি ও সুফি। ইহার পূরা নাম নূরদ্দিন্‌ আব্দর রহমন্ জামি। ইনি নির্লোভ ছিলেন; একবার তুরস্কের সুল্‌তান্ পাঁচ হাজার মোহর পাঠাইয়াছিলেন ইনি তাহা স্পর্শ করেন নাই।
জিউলে—হাঙ্গেরির কবি; ক্ষুদ্র গাথার প্রবর্ত্তক।
জুম্ সুলতান্—(১৪৫৯-১৪৯৫) ইনি তুরস্কের সুলতান দ্বিতীয় বায়াজিদের কনিষ্ঠ। পিতার মৃত্যুর পর ইনি অর্দ্ধেক রাজ্য দাবী করেন। কিন্তু সফলকাম হইতে পারেন নাই। মহম্মদীয় শাস্ত্রানুসারে কন্যারাও পুত্রের মত পিতৃ-ধনের অংশ পায়; কিন্তু রাজপুত্রেরা এই ব্যবস্থার সুফল ভোগ করিতে পান্‌ না। ঔরঙ্গজেবের ভ্রাতৃ-বিরোধের মূল এইখানে, জুম্ সুলতানের যুদ্ধের কারণও এইখানে। পক্ষপাতহীন মহম্মদীয় আইনের নির্দেশ, বোধ হয়, সাম্যবাদের দিকে; ইহার স্বাভাবিক পরিণতি, সম্ভবতঃ, Democracyতে।
ঝিন্দন—পাঞ্জাবের কবি।
টেনিসন্—(১৮০৯-১৮৯২) ইনি মহারাণী ভিক্টোরিয়ার সভাকবি ছিলেন।
ডান্‌বার—কাফ্রি কবি; ইহার পিতা ক্রীতদাস ছিলেন; কানাডায় পলাইয়া নিষ্কৃতি লাভ করেন। অনেকের বিশ্বাস কাফ্রিরা সৌন্দর্য্য বোধে ও বুদ্ধির প্রাখর্য্যে অন্যান্য জাতি অপেক্ষা হীন; ডান্‌বারের কবিতা এই মতের অসারতা প্রমাণিত করিতেছে।
ডিরোজিয়ো—(১৮০৯—১৮৩১) ইহাকে লোকে “ইউরেশিয় বায়রণ” বলিয়া থাকে; কলিকাতায় মৌলা আলির দর্‌গার নিকট ইঁহার জন্ম হয়। ইনি হিন্দু কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। পিয়ারীচাঁদ মিত্র, রামগোপাল ঘোষ প্রভৃতি ইহার ছাত্র।
ডুম্ মীরণ—আফগানিস্থানের কবি। আমরা ডোম বলিয়া যাহাদিগকে ঘৃণা করিয়া থাকি ইহার পূর্ব্বপুরুষেরা সেই ডোম ছিলেন। ডোমেরা সঙ্গীতানুরাগের জন্য চিরপ্রসিদ্ধ। য়ুরোপের জিপ্‌সি, পারস্যের লুরি, আফগানিস্থানের ডুম্ এবং ভারতের ডোম এক।
ডেহ্মেল (রিকার্ড)— শিলারের সঙ্গে গেটের যে সম্বন্ধ, ডেহ্মেলের সঙ্গে লিলিয়েঙ্ক্রনের সেই সম্বন্ধ; বর্ত্তমান যুগে, জন্মনির কাব্য জগতে ইঁহারা দুই জনই নেতা। জন্ম ১৮৬৩ খ্রীষ্টাব্দে। ইনি পল্ ভার্লেনের শিষ্য।
ৎসেন্-ৎসান্—চীন দেশের কবি; মহাকবি তু-ফু ইঁহার বন্ধু ছিলেন। ছন্দের অনেক নূতন নিয়ম ইনি আবিষ্কার করিয়া যান।
তরু দত্ত—(১৮৫৬—১৮৭৭) ইনি রামবাগানের স্বর্গীয় গোবিন্দচন্দ্র দত্তের কন্যা। ইনি ইংরাজীতে কবিতা এবং ফরাসীভাষায় উপন্যাস লিখিয়াছিলেন। তরু একুশ বছর ছয় মাস ছাব্বিশ দিন মাত্র জীবিত ছিলেন।
তাচিবানে-নো-মাসাতো—‘তান্‌কা’ ও ‘হোক্কু’ রচনার জন্য বিখ্যাত; জন্মভূমি জাপান।
তুকারাম—মহারাষ্ট্রীয় সাধু ও ভজন-রচয়িতা; পঞ্জাবের যেমন নানক্, বারাণসীর যেমন কবীর মহারাষ্ট্রের তেমনি তুকারাম। ইঁহার রচনা ‘অভঙ্গ’ নামে বিখ্যাত।
তু-ফু—(৭১২—৭৭০) চীনবাসীরা ইহাকে “কাব্যের দেবতা” নামে অভিহিত করেন। ইনি সাত বৎসর বয়সে কবিতা লিখিতে আরম্ভ করেন। কাব্যালোচনার খাতিরে ইনি রাজদরবারের চাকরী ছাড়িয়া দেন। শেষে অশেষ দুর্দ্দশা ভোগ করিয়া অনশনে প্রাণত্যাগ করেন। “হায় মা ভারতী!”
দু-ফ্রেনি—(১৬৪৮—১৭২৪) কবি ও উদ্যান-শিল্পী; ইঁহার রচিত কমেডিগুলি হাস্যরসে উৎপূর্ণ। জন্মভূমি ফ্রান্স্‌।
দূদেতোৎ (মাদাম্)— ইনি ফরাসী দেশের একজন মহিলা কবি। জন্ম উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমে।
দে-জুয়ি—(১৭৬৪—১৮৪৬) ইনি ফরাসী দেশের কবি। অ্যাডিসনের ‘স্পেক্টেটরের’ অনুকরণে ইনি অনেক সন্দর্ভ রচনা করেন।
দে-মুসে—(১৮১০—১৮৫৭) ফরাসী কবি ও নাট্যকার; ইনি অলঙ্কার শাস্ত্রকে অবজ্ঞার চক্ষে দেখিতেন; এবং তৎসত্ত্বেও সুকবি।
দৈনী-নো-সাম্মি—বিখ্যাত মহিলা ঔপ্যাসিক মুরাসাকি শিকিবুর কন্যা; জন্মভূমি জাপান।
‘নাল-আদিয়ার’-গ্রন্থ—দাক্ষিণাত্যের জৈন কবির রচিত কোষ-কাব্য। এই গ্রন্থে একাধিক কবির রচনা আছে।
নিমতুল্লা—ইনি সৈয়দবংশ সম্ভৃত এবং কবি।
নেজাতি—ইনি তুরস্কের কবি; ক্রীতদাসের পুত্র হইয়াও চরিত্রগুণে সুলতান্ বায়াজিদের পুত্রগণের শিক্ষকপদে নিযুক্ত হইয়াছিলেন। তুরস্কের সমালোচকেরা বলেন “সিদ্ধপুরুষ ও ঐন্দ্রজালিকে যে তফাৎ নেজাতি ও তাঁহার সমসাময়িক কবিদের মধ্যেও ঠিক সেইরূপ প্রভেদ।”
নৈলি—(১৬৭৩—১৭৩৮) তুরস্কের কবি। ইঁহার পিতা কষ্টাণ্টিনোপলের হাকিম ছিলেন। ইনি স্মর্ণা, কাইরো ও শেষে মক্কার মোল্লা হইয়াছিলেন।
পট্টণত্তু পিল্লাই—দাক্ষিণাত্যের কবি; ইনি শিবের উপাসক ছিলেন, কিন্তু, গোঁড়ামি সহ্য করিতে পারিতেন না। জন্ম খ্রীষ্টীয় দশম শতাব্দীতে।
পাউণ্ড—ইংলণ্ডের উদীয়মান কবি; জাতিতে ইহুদী।
ফজুলী—ইনি তুর্কী, আরবি ও ফার্সী ভাষায় কবিতা লিখিতেন; বোগ্দাদ নগরে ইঁহার জীবনের অধিকাংশ অতিবাহিত হয়। ১৫৫৫ খ্রীষ্টাব্দে প্লেগে মারা যান। ইনি “হৃদয়ের কবি” নামে অভিহিত হইয়াছেন।
ফর্দ্দসী—ইঁহার প্রকৃত নাম আবুল কাসিম মন্‌সুর; ইঁহার প্রধান রচনা “শাহ-নামা”; ত্রিশ বৎসরে এই মহাকাব্য সম্পূর্ণ হইয়াছিল। সুলতান্ মামুদের কৃপণতায় ক্রুদ্ধ হইয়া ইনি এক ব্যঙ্গকাব্য রচনা করেন।
ফিজ্‌বল্—ইনি একজন ইংরাজ কবি।
ফৈজী —আকবরের সভাকবি ও আবুল ফজলের সহোদর; ইঁহার কতকগুলি রচনা “মস্ক্‌-গজল্” বা কস্তুরী-কবিতা নামে প্রসিদ্ধ। বেদমর্ম্ম জানিবার জন্য সম্রাট আকবর ইঁহাকে এক ব্রাহ্মণের গৃহে রাখিয়া দেন। এই কাহিনী অবলম্বনে স্বর্গীয় কবি সুরেন্দ্রনাথ মজুমদার ‘সবিতা-সুদর্শন’ নামক কাব্য রচনা করেন।
বড্‌ম্যান—নব্য জর্ম্মনির কবি; জন্ম ১৮৭৪ খ্রীষ্টাব্দে; ইনি একজন ব্যারন্‌।
বদ্‌লেয়ার—(১৮২১-১৮৬৭) ফরাসী কবি; ইনি ‘সুন্দরকে মন্দ’ দেখিতেন না, কিন্তু ‘মন্দকে সুন্দর’ দেখিতেন। ইহাকে বীভৎস রসের কবি বলা যাইতে পারে।
বাবর (সম্রাট)—সম্রাট আকবরের পিতামহ; ইনি কবিতাও লিখিতেন।
বায়ের্‌বম্—(১৮৬৫) জর্ম্মনির বর্তমান যুগের কবি।
ব্রাউনিং (এলিজাবেথ)—(১৮০৬-১৮৬১) সাত বৎসর বয়সে কবিতা লিখিতে আরম্ভ করেন। নারীর হৃদয়, পণ্ডিতের বুদ্ধি এবং কবির প্রাণ একাধারে ইঁহাতে সম্মিলিত ছিল। ইনি রবার্ট ব্রাউনিঙের পত্নী।
ব্রাউনিং (রবার্ট)—(১৮১২-১৮৮৯) ইহার রচনা স্থল বিশেষে অস্পষ্ট এবং শ্রুতি কটু হইলেও ইনি প্রকৃত কবি ছিলেন। মানব-হৃদয়ের ভাব বৈচিত্র্যের সঙ্গে এরূপ গভীর পরিচয় অল্প কবিরই দেখা যায়।
বেইলি—ইংলণ্ডের সৈনিকদিগের প্রিয় কবি।
বেমন—তেলুগু কবি; রচিত গ্রন্থের নাম ‘পদ্যমুলু’।
ভর্ত্তৃহরি—রাজা ও কবি, প্রধান রচনা বৈরাগ্যশতক ও নীতিশতক।
ভল্‌তেয়ার—(১৬৯৪-১৭৭৮) ফ্রান্সের সাহিত্য-সম্রাট। হাস্য-বিদ্রূপে অদ্বিতীয়।
ভার্লেন্ (পল্)—(১৮৪৪-১৮৯৬) ইহাঁর কবিতা ভাব-সঙ্কেতে অতুলনীয়; জন্ম ফ্রান্সে।
ভিক্ষু—ইনি একজন ঋগ্বেদের মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষি।
ভোরোজমার্টি—(১৮০০-১৮৫৫) ইনি হাঙ্গেরির কাব্যের ভাষার চেহারা বদ্‌লাইয়া দ্যান্। ইঁহার পূর্ব্ববর্ত্তী ও পরবর্ত্তী কবিদের ভাষায় আকাশ পাতাল প্রভেদ!
মরিস্ (উইলিয়ম্)—সাম্যবাদের কবি; জন্ম ইংলণ্ডে।
মাণিক্য-বাচকর—দাক্ষিণাত্যের কবি; খৃষ্টীয় দশম শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করেন। প্রধান রচনা ‘তিরু বাচকম্’ অর্থাৎ আনন্দবাণী।
মামুদ শাবিস্তারী—ইনি একজন সুফি ছিলেন।
মায়গেল্ (অ্যাগ্নেস্)—নব্য জর্ম্মনির মহিলা কবি; ইহার মৌলিকতা উল্লেখ যোগ্য; জন্ম ১৮৭৯ খৃষ্টাব্দে।
মিচি-নোবু-ফুজ়িবারা—কবি ও রাজমন্ত্রী; জন্মভূমি জাপান।
মিলার—ইনি আমেরিকার কবি।
মিহ্রি—ইহার পূরা নাম ‘মিহ্র-মাহ্’ বা ‘সূর্য্য শশী’; ইনি তুরস্কের কবি নেজাতির শিষ্যা। ইনি রসিকা এবং স্বভাবতঃ প্রেমশীলা হইয়াও চরিত্র নির্ম্মল রাখিতে পারিয়াছিলেন। মিহ্রি চিরকুমারী ছিলেন।
মীরাবাই—ইনি রাণা কুম্ভের পত্নী এবং পরম বৈষ্ণবী। ইঁহার ভক্তিমূলক সঙ্গীত সমূহ অতীব মধুর।
মেং-হৌ-জান্—(৬৮৯-৭৪০) ইঁহার রচনা ‘অনুশোচনার অশ্রুর মত মনোজ্ঞ।’ ইনি চিরজীবন সাহিত্য-সাধনায় নিরত ছিলেন। জন্ম চীনদেশে।
মেসিহি—(১৪৬০-১৫১২) ইনি তুরস্কের কাব্যে নবজীবন সঞ্চার করেন, সেইজন্য ইহাকে মেসিহি বা মেসায়া বলা হয়; ইহার প্রধান রচনা ‘গুল্-ই-শদ্‌বর্গ’ ‘শহর-এঙ্গিজ্‌’ প্রভৃতি। “শায়ের শহরের শাহ” নামেও ইনি পরিচিত।
যজুর্ব্বেদ—চতুর্ব্বেদের অন্যতম; ইহা তৈত্তিরীয় সংহিতা ও বাজসনেয়ী সংহিতায় বিভক্ত; এই দুই বিভাগকে সাধারণতঃ কৃষ্ণ ও শুক্ল যজুর্ব্বেদ বলা হয়।
যূনাস্—ইনি তপ্‌দুখ্‌ নামক মহাপুরুষের শিষ্য; যূনাস্ গুরুর জন্য যে ইন্ধন আনিতেন তাহার মধ্যে একখানিও বাঁকা থাকিত না, গুরু এ সম্বন্ধে প্রশ্ন করায় তিনি বলিয়াছিলেন “স্বর্গে মর্ত্ত্যে কোথাও যাহার আদর নাই তাহা তোমার ঘরে কেমন করিয়া আনিব?” যূনাস্ নিরক্ষর, কিন্তু কবি।
রসেটি (ক্রিষ্টিনা)--(১৮৩০-১৮৯৪) ইংলণ্ডের স্ত্রী-কবি।
রাবেয়া—বস্রা-বাসিনী স্ত্রী কবি ও ধর্ম্মিষ্ঠা সুফি। ইনি চিরকুমারী ছিলেন। ৭৫৩ খৃষ্টাব্দে জেরুসালেমে ইঁহার মৃত্যু হয়।
রুমি (জালালুদ্দিন্)— (১২০৭-১২৭৩) ইনি পারশ্যের একজন প্রধান কবি; জন্মভূমি বাল্‌খ্‌। ইঁহার চরিত্র অতি মধুর ছিল, ইনি পথ দিয়া যাইবার সময় শিশুদিগকেও অভিবাদন করিতেন।
রেক্সফোর্ড্‌—ইনি আমেরিকার কবি।
লাওয়েল—ইনি আমেরিকার কবি; হুইট্‌ম্যানের পরে ইঁহার নাম উল্লেখ যোগ্য।
লাতাঞাঁ।—ফ্রান্সের কবি, হাসির গানের জন্য বিখ্যাত।
লায়াল্ (আলফ্রেড্‌)— সিভিলিয়ান কবি। জন্মভূমি ইংলণ্ড।
লি-পো— (৭০২-৭৬২) চীনদেশের কবি ও যোদ্ধা; ইঁহার কবিতা বিচিত্রতার জন্য প্রসিদ্ধ।
লিলিয়েঙ্ক্রন-(১৮৪৪-১৯০৯) জর্ম্মনির কবি ও সৈনিক পুরুষ; চল্লিশ বৎসর বয়সে প্রথম কবিতা রচনা করেন। ইহাকে ‘মুক্ত বায়ুর কবি’ বলে।
লী-হাণ্ট—(১৭৮৪-১৮৫৯) ইংলণ্ডের কবি; ইঁহার গদ্য রচনা ও সুখপাঠ্য।
লেকঁৎ-দে-লিল্—(১৮২০-১৮৯৪) ‘কীর্ত্তি ভবন যাত্রী’ নামক ফরাসী কবিদিগের অগ্রণী; জন্মভূমি রি-ইউনিয়ন্‌ দ্বীপ।
লেবিয়ে—ডাক্তার, কাব্য-রচয়িতা ও নারীহন্তা; জন্মভূমি ফ্রান্স।
লেবেন্ (হার্ট)—(১৮৬৪-১৯০৫) জর্ম্মনির কবি।
ল্যাণ্ডর—(১৭৭৫-১৮৬৪) ইংলণ্ডের কবি; ইঁহার শ্রেষ্ঠ রচনা “Imaginery Conversations” বা “কাল্পনিক কথাবার্ত্তা।”
শাক্যো-নো-তায়ু-আকিসুকে— জাপানের কবি; ‘শ্রাব্য-চিত্র' রচনায় অদ্বিতীয়। খ্রীষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করেন।
‘শি-কিং’-গ্রন্থ—কং ফুশিয়ো বা প্রভুপাদ কং কর্ত্তৃক সংগৃহীত প্রাচীন চীনদেশীয় কবিতার চয়ন-গ্রন্থ।
শিলার—(১৭৫৯-১৮০৫) কবি ও নাট্যকার; ইঁহার নাটকগুলি, সাধারণতঃ, উদ্দেশ্য মূলক হইলেও কাব্য হিসাবে নিকৃষ্ট নহে। জন্মভূমি জর্ম্মনি।
শ্বেতাশ্বতরোপনিষৎ—একশত পঞ্চাশখানি উপনিষদের অন্যতম।
সাউদী—(১৭৭৪-১৮৪৩) ইংলণ্ডের কবি; ইনি আমাদের নবীনচন্দ্রের মত অনেকগুলি মহাকাব্য লিখিয়াছিলেন।
সাগামি—ইনি একজন স্ত্রী কবি; জন্মভূমি জাপান।
সাদায়োরি—জাপানের কবি; ইহাঁর পিতাও কবি ছিলেন।
সুইবার্ণ—(১৮৩৭-১৯০৮) ইঁহার কবিতা সমূহ্ সৌন্দর্য্যের খনি। ইনি অনূঢ় ছিলেন।
সুকুম্ভ-—(৮৩৪-৯০৮) কবি ও দার্শনিক; ইঁহার কাব্য সৌন্দর্য্যে মাধুর্য্যে ও আধ্যাত্মিকতায় অতুলনীয়। জন্ম চীন দেশে।
সেন (দেবেন্দ্রনাথ)—‘অশোকগুচ্ছে’র কবি। ইনি গদ্য রচনাতেও সুনিপুণ। ইংরাজীতেও কবিতা লিখিয়া থাকেন।
হাইন্—(১৭৯৯-১৮৫৬) ইনি ‘ছোট ছোট ফুলে মালা’ গাঁথিতেন; সে গুলি প্রফুল্ল মল্লিকার মত চিরসুরভি; ইনি জাতিতে ইহুদী। জন্মভূমি জর্ম্মনি।
হাউটন্ (লর্ড) (১৮০৯-১৮৮৫) ইঁহার পূর্ব্ব নাম রিচার্ড মংটন্ মিল্‌নেজ্‌; ইংলণ্ডের কবি।
হাতিফি-—নূরুদ্দিন জামির ভাগিনেয়; খোরাসানের অন্তর্গত জাম নামক স্থানে ইঁহার জন্ম। ইঁহার ‘লয়লা-মজনু’ কাব্যের প্রথম শ্লোক জামির রচিত।
হুইটম্যান্—আমেরিকার কবি; বাতাসের মত ইঁহার ছন্দ কাহারও বশে আসিতে চায় না। আমেরিকায় ইনি বিশ্বপ্রেমের অগ্রদূত।
হুগো (ভিক্তর)—(১৮০২-১৮৮৫) ইঁহার কবিতা বিশ্ব-সাহিত্যের অলঙ্কার; ইঁহার উপন্যাস ফরাসী দেশের মহাভারত। টেনিসন্ ইঁহাকে ‘হাসি ও অশ্রুর সম্রাট’ নামে অভিহিত করিয়াছেন।
হূড—(১৭৯৮-১৮৪৫) ইংলণ্ডের কবি; হাস্য-রসাত্মক কবিতা রচনার জন্য বিখ্যাত।
হেষ্টিংস্ (ওয়ারেন্)— বঙ্গের গবর্ণর; ইনি কবিতা লিখিতে পারিতেন।
হোপ্—অ্যাংলো ইণ্ডিয়ান্‌ কবি।
হোরিকায়া—মন্ত্রীকন্যা ও রাজমাতার সহচরী; জন্মভূমি জাপান; খ্রীষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করেন।
হোল্‌জ্‌ (আর্ণো)—নব্য জর্ম্মনির কবি; জন্ম ১৮৬৩ খ্রীষ্টাব্দে।


ছায়া-সুষমা—ভারতীয় চিত্র-শিল্পীরা, ইংরাজীতে যাহাকে Shading বলে, তাহাকে ‘সায়া-সুস্‌মা’ বা ছায়া-সুষমা বলিয়া থাকেন।

পান্তুম্—ইতালির যেমন সনেট্, মলয় উপদ্বীপের তেমনি পান্তুম্। পান্তুম্ অর্থে গান বা গীতি কবিতা। পান্তুমের প্রতি শ্লোকের দ্বিতীয় এবং চতুর্থ চরণ পরবর্ত্তী শ্লোকের প্রথম এবং তৃতীয় চরণ-রূপে ব্যবহৃত হয়। প্রত্যেক শ্লোকে চারি চরণ থাকা আবশ্যক, এবং সাধারণতঃ চারি শ্লোকে একটি পান্তুম্ সম্পূর্ণ হয়। তদ্ভিন্ন প্রতি শ্লোকের প্রথম ও দ্বিতীয় পংক্তিগুলির সঙ্গে তৃতীয় ও চতুর্থ পংক্তিগুলির বর্ণিতব্য বিষয়ের, সঙ্গম স্থলে গঙ্গা যমুনার মত একেবারে পাশাপাশি থাকা সত্ত্বেও, সম্পূর্ণ পার্থক্য থাকাই নিয়ম। মাইকেল মধুসূদন যেমন বঙ্গভাষায় প্রথম সনেট লেখেন, ভিক্তর হুগো তেমনি ফরাসী ভাষায় প্রথম পান্তুমের অনুবাদ করেন। হুগো মৌলিক পান্তুম্ রচনা না করিলেও তৎকৃত অনুবাদ প্রকাশিত হইবার পর হইতে ফরাসী সাহিত্যে পান্তুমের প্রভাব ক্রমশঃ বিস্তৃতিলাভ করিয়া আসিয়াছে। পরবর্ত্তী অনেক কবি অনেকগুলি সুন্দর সুন্দর মৌলিক পান্তুম্ রচনা করিয়া স্বদেশের ছন্দোবিদ্যা ও কাব্য-সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করিয়াছেন।
বোটা—মরুযাত্রীরা জল রাখিবার জন্য যে চামড়ার বোতল ব্যবহার করে তাহাকে বোটা বলে। ইংরাজী bottle শব্দ, বোধ হয় এই বোটা হইতে উৎপন্ন।
লম্ব—মাদাগাস্কার বাসীরা কম্বলকে লম্ব বলে! সংস্কৃত, ভদ্রবেশধারী, “লম্বশাট পটাবৃতের” ভিতর হইতে ঐ মাদাগাস্কারী পরিচ্ছদটা দেখা যাইতেছে না তো! ‘জুজু’টা তো ঐ দিকেরই আম্‌দানী।