তীর্থ-সলিল/প্রিয়া যবে পাশে
প্রিয়া যবে পাশে।
প্রিয়া যবে পাশে, হস্তে পেয়ালা, গোলাপের মালা গলে;—
কেবা সুল্তান্? তখন আমার গোলাম সে পদতলে।
ব’লে দাও বাতি না জ্বালায় আজি আমোদের নাহি সীমা,
আজ প্রেয়সীর মুখ-চন্দ্রের আনন্দ পূর্ণিমা!
আমাদের দলে সরাব যা’চলে তাহে কারো নাহি রোষ,
তবে ফুলময়ী! তুমি না থাকিলে পরশিতে পারে দোষ।
আমাদের এই প্রেমিক সমাজে আতর ব্যাভার নাই,
প্রিয়ার কেশের সুরভিতে মোরা মগন সর্ব্বদাই।
শরের মুরলী শুনি আমি ওগো সমস্ত কান ভরি’,
আঁখি ভরি’ দেখি সুরার পেয়ালা—তব রূপ সুন্দরী!
শর্করা মিঠা আমারে ব’ল’ না, প্রিয়া! আমি তাহা জানি,
তবু সব চেয়ে ভালবাসি ওই মধুর অধর খানি।
অখ্যাতি হ’বে? অখ্যাতিতেই বেজে গেছে মোর নাম,
নাম যাবে? যাক্, নামই আমার সব লজ্জার ধাম;
মত্ত, মাতাল, ব্যসনী আমি গো, আমি কটাক্ষ-বীর,
একা আমি নই, আমারি মতন অনেকেই নগরীর।
মোল্লার কাছে মোর বিরুদ্ধে করিয়োনা অনুযোগ,
তাঁর’ আছে, হায়, আমারি মতন সুরা-মত্ততা রোগ!
প্রিয়ারে ছাড়িয়া থেক না হাফেজ! ছেড়না পেয়াল লাল,
এ যে গোলাপের চামেলির দিন—এ যে উৎসব কাল!
হাফেজ।