তীর্থ-সলিল/মৃত্যুরূপা মাতা
মৃত্যুরূপা মাতা।
নিঃশেষে নিবেছে তারাদল, মেঘ এসে আবরিছে মেঘ,
স্পন্দিত, ধ্বনিত অন্ধকার, গরজিছে ঘূর্ণ্য-বায়ু-বেগ!
লক্ষ লক্ষ উন্মাদ পরাণ বহির্গত বন্দী-শালা হ’তে,
মহাবৃক্ষ সমূলে উপাড়ি’ ফুৎকারে উড়ায়ে চলে পথে!
সমুদ্র সংগ্রামে দিল হানা, উঠে ঢেউ গিরি-চূড়া জিনি’
নভস্তল পরশিতে চায়! ঘোররূপা হাসিছে দামিনী,
প্রকাশিছে দিকে দিকে তা’র,—মৃত্যুর কালিমা মাথা গায়
লক্ষ লক্ষ ছায়ার শরীর!—দুঃখ রাশি জগতে ছড়ায়,—
নাচে তা’রা উন্মাদ তাণ্ডবে; মৃত্যুরূপা মা আমার আয়!
করালী! করাল তোর নাম, মৃত্যু তোর নিশ্বাসে প্রশ্বাসে;
তোর ভীম চরণ-নিক্ষেপ প্রতি পদে ব্রহ্মাণ্ড বিনাশে!
কালী তুই প্রলয় রূপিণী, আয় মাগো, আয় মোর পাশে।
সাহসে যে দুঃখ দৈন্য চায়,—মৃত্যুরে যে বাঁধে বাহু পাশে,—
কাল-নৃত্য করে উপভোগ,—মাতৃরূপা তা’রি কাছে আসে।
বিবেকানন্দ।