তীর্থ-সলিল/যৌবন ও বার্দ্ধক্য
যৌবন ও বার্দ্ধক্য।
জগৎ যে সুখ হরণ করে তা’ ফিরে আর দিতে নারে,
কিশোর ভাবের অরুণিমা, হায়, ক্ষয় সে অন্ধকারে;
কপোল কেবলি হয় না পাণ্ডু যৌবন যবে যায়,
মনের পেলব কুসুম-সুষমা তা’রো আগে টুটে, হায়!
মগ্ন সুখেরে ঘিরিয়া তখনো যাহারা ভাসিতে থাকে,
অত্যাচারের আবর্ত্তে কিবা মজে কলঙ্ক পাঁকে;
দিক্-নিরূপণ হয় না তখন; দিশা যদি মিলে, তবু,
সাগর অকূল! ছেঁড়া পাল তুলে পৌঁছিতে নারে কভু।
মরণের হিম পরাণে তখন নামিয়া ভরে গো বুক,
পরের বেদনা বুঝিতে না পারে, না ভাবে আপন দুখ!
অশ্রুজলের উৎস নিরোধ হয় সে হিমের ভারে,
আঁখি ছলছলে উজলে যদি বা―সে শুধু তুষার-ধারে।
রসের ভাষণে রসনা যদিও মনেরে ভুলায়ে রাখে,
নিশীথ অবধি; হেতু তা’র হায়, ঘুম চোখে নাহি লাগে।
সে যেন জীর্ণ প্রাসাদ ঘিরিয়া শ্যামা লতিকার শোভা,
নিকটে ধূসর জর্জ্জর অতি, দূর হ’তে মনোলোভা!
হায় গো হইতে পারিতাম যদি যেমন ছিলাম আগে,
আগের মতন অনুভূতি যদি আবার মরমে জাগে;
অতীত স্মরিয়া তেমনি করিয়া আঁখি জল যদি ঝরে,
সে আবিল ধারা মিঠা হ’বে মোর জীবন মরুর ’পরে