নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে কনভেনশন
নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা
মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে
কনভেনশন
Bengali version of
Convention against Torture and Other Cruel, Inhuman or Degrading Treatment or Punishment
DPI/876
Published by:
United Nations Information Centre
Dhaka, Bangladesh
Published in November 2005
UNIC/PUB/2005/05/1500
নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে কনভেনশন
জাতিসংঘ তথ্য কেন্দ্র
ঢাকা, বাংলাদেশ
পুনর্মুদ্রণ: নভেম্বর ২০০৫
ইউনিক/প্রকাশ/২০০৫/০৫/১৫০০
জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হবার মাত্র অল্প কয়েক বছরের মধ্যে সংস্থা যে কয়েকটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে বিশ্বজুড়ে নির্যাতন বন্ধের প্রচেষ্টা তার মধ্যে অন্যতম। সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা এবং আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার চুক্তির মতো জাতিসংঘের বিভিন্ন দলিলে এর ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে কনভেনশন গ্রহণ করে, যা ১৯৮৭ সালের ২৬ জুন কার্যকর হয়।
সাধারণ পরিষদের ১৯৯৭ সালের ১২ ডিসেম্বর গৃহীত ৫২/১৪৯ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতি বছর ২৬ জুন নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো এই দিবসটি পালিত হয়।
১৯৯৮ সালের মে মাস পর্যন্ত বিশ্বের ১০৫টি দেশ এই কনভেনশন অনুমোদন করে। কনভেনশনের প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষ তাদের জাতীয় আইনে নির্যাতনকে একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে সম্মত হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষসমূহকে কনভেনশন প্রতিপালন পরিবীক্ষণ ও কনভেনশনের বিধানাবলী বাস্তবায়নের জন্যে ১৯৮৭ সালে গঠিত মানবাধিকার চুক্তি সংস্থা নির্যাতনবিরোধী কমিটির কাছে রিপোর্ট করতে হয়। রাষ্ট্রপক্ষসমূহ কর্তৃক নির্বাচিত ১০ জন স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞের সমন্বরে এই কমিটি গঠিত।
মানবাধিকার ঘোষণার ৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'কাউকে নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা মর্যাদাহানিকর আচরণের শিকার করা যাবে না।'
সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ৫০তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে এ কনভেনশনের বাংলা ভাষায় প্রথমবারের মতো প্রকাশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। আশা করি অগণিত পাঠক এর থেকে উপকৃত হবেন।
পরিচালক
জাতিসংঘ তথ্য কেন্দ্র
ঢাকা।
নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা
মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে
কনভেনশন
১৯৮৪ সালের ১০ই ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত ৩৯/৪৬ মোতাবেক স্বাক্ষরদান, অনুসমর্থন ও যোগদানের জন্য গৃহীত ও উন্মুক্ত।
কনভেনশনের ২৭ (১) ধারা অনুযায়ী ২৬শে জুন ১৯৮৭ থেকে কার্যকর।
এই কনভেনশনের রাষ্ট্রপক্ষসমূহ,
এতদ্বারা জাতিসংঘ সনদে বিঘোষিত আদর্শের সাথে সঙ্গতি রেখে এবং মানব পরিবারের সকল সদস্যের সমান এবং অবিচ্ছিন্ন অধিকারই যে স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং বিশ্বশান্তির মূল ভিত্তি, এ কথা স্বীকার করে,
এই অধিকারগুলো যে মানুষের আত্মমর্যাদাবোধ থেকে উদ্ভূত একথা স্বীকার করে,
জাতিসংঘ সনদ, বিশেষ করে ৫৫ ধারার অধীনে মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি সদস্য রাষ্ট্রবর্গের শ্রদ্ধা এবং আনুগত্যের কথা বিবেচনা করে,
৫ ধারায় বিঘোষিত মানব অধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা এবং ৭ ধারায় বর্ণিত নাগরিক এবং রাজনৈতিক অধিকারের স্বীকৃতি (উভয়েরই অঙ্গীকার হলো কেউ যাতে দৈহিক নির্যাতন, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ কিংবা শাস্তির শিকারে পরিণত না হয়) এর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে,
এবং এতদ্সহ ১৯৭৫-এর ৯ই ডিসেম্বর তারিখে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত সকল মানুষকে দৈহিক নির্যাতন, অমানবিক এবং মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তি থেকে মুক্ত রাখার ব্যাপারে সর্বজনীন ঘোষণার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে,
এতদ্বারা বিশ্বব্যাপী নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা মর্যাদাহানিকর আচরণ কিংবা শাস্তির বিরুদ্ধে পরিচালিত আন্দোলনকে আরও কার্যকর করে তোলার লক্ষ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলিতে সম্মতি প্রদান করছে—
পরিচ্ছেদ-১
ধারা ১
১) এই কনভেনশনের প্রয়োজনে ব্যবহার্য 'নির্যাতন' শব্দটির অর্থ যে কোন কাজ যা দৈহিক বা মানসিক ব্যথা বা দুর্ভোগ বৃদ্ধি করে এবং যা অন্য কোন মানুষ বা তৃতীয় কারো কাছ থেকে কোন তথ্য বের করার কাজে বা স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহার করা হয়; নির্যাতিত ব্যক্তি বা ততীয় কোন ব্যক্তিকে কোন অপরাধ করে থাকলে বা করেছে বলে সন্দেহবশত শাস্তি প্রদান করা হলে; অথবা ভয় দেখানোর জন্য বা মানবিক আতংক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কোন সরকারি কর্মকর্তার নির্দেশে, সম্মতিক্রমে বা অন্য কোন পন্থায় এ ধরনের যন্ত্রণা ও দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী নির্যাতন যে কোন যুক্তিতে বা যে কোন ধরনের বৈষম্যের কারণে চাপিয়ে দেয়া হয়। অবশ্য আইনগতভাবে কার্যকর কোন দণ্ডজনিত যন্ত্রণা বা দুর্ভোগ এর আওতায় পড়বে না।
২) এই ধারা কোনভাবেই আরও বিশদ অর্থপূর্ণ বা আইনগত বিধান সংবলিত অন্য কোন আন্তর্জাতিক বিধি বা জাতীয় পর্যায়ে গৃহীত আইনের প্রতি পক্ষপাতিত্বপূর্ণ হবে না।
ধারা ২
১) প্রত্যেক রাষ্ট্রপক্ষ এর সার্বভৌমত্বের আওতাধীন প্রতিটি অঞ্চলে নির্যাতনমূলক আচরণ প্রতিরোধের জন্য কার্যকর আইনগত, প্রশাসনিক, বিচার পদ্ধতিগত এবং অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
২) কোন রকম ব্যতিক্রমধর্মী পরিস্থিতি, যেমন যুদ্ধাবস্থা, যুদ্ধের হুমকি, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বা অন্য কোন সরকারি জরুরি অবস্থা নির্যাতন চালানোর যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
৩) কোন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা সরকারি কর্তৃপক্ষের নির্দেশকে নির্যাতন চালানোর যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
ধারা ৩
১) কোন রাষ্ট্রপক্ষ কোন ব্যক্তিকে এমন কোন রাষ্ট্রে বহিষ্কার, ফেরত প্রদান বা দেশান্তরিত করতে পারবে না যেখানে তার ওপর দৈহিক নির্যাতন চালানো হতে পারে, এই মর্মে যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে।
২) এই ধরনের যুক্তিসঙ্গত কারণ বিদ্যমান কিনা, তা নিরূপণের জন্য বিচক্ষণ কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখবে, বিশেষ করে উক্ত রাষ্ট্রে ব্যাপক, বেপরোয়া এবং পাইকারি হারে মানবাধিকার লংঘিত হয়ে আসছে কিনা তা বিবেচনা করবে।
ধারা ৪
১) প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষকে এই মর্মে নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, দেশের অপরাধ আইনের আওতায় নির্যাতনমূলক আচরণসমূহ অপরাধের পর্যায়ভুক্ত বলে গণ্য করা হবে।
২) প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষ এ সকল অপরাধকে অপরাধের ধরন অনুসারে যথোপযুক্ত দণ্ড দ্বারা শাস্তিযোগ্য করে তুলবে।
ধারা ৫
১) প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষ নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে ধারায় বর্ণিত অপরাধের সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে:
- ক) এ সকল অপরাধ যখন সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন ভূখণ্ডে অথবা সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রে নিবন্ধনকৃত জাহাজ বা বিমানে সংঘটিত হবে;
- খ) যখন অভিযুক্ত অপরাধী ব্যক্তি (নির্যাতনকারী) সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিক;
- গ) যখন নির্যাতিত ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিক (যদি ঐ রাষ্ট্রটি সেরকম বিবেচনা করে)।
২) প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষ এর নিয়ন্ত্রণাধীন ভূখণ্ডের যে কোন স্থানে কথিত নির্যাতনকারী অবস্থান করুক না কেন, তার অপরাধের বিচার করার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং এই ধারার ১ উপধারায় চিহ্নিত কোন রাষ্ট্রে (৮ ধারার সাথে সঙ্গতি রেখে) তাকে দেশান্তরী করবে না।
৩) এই কনভেনশন অভ্যন্তরীণ আইনে অপরাধ বিচারের এখতিয়ার বহির্ভূত বলে গণ্য হবে না।
ধারা ৬
১) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের ভূখণ্ডে সংঘটিত ৪ ধারায় সংজ্ঞাধীন কোন অপরাধকারীকে, যদি রাষ্ট্র সে রকম কোন তথ্য পেয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে সন্তুষ্ট হয়, তাহলে তাকে গ্রেফতার করবে অথবা তার অপরাধের বিচারের জন্য অন্যান্য আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। গ্রেফতার এবং অন্যান্য আইনগত বিধান সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের আইন অনুসারে হবে, তবে তা কোন ফৌজদারী বা দেশান্তর মোকাদ্দমা শুরু হওয়া পর্যন্ত খণ্ডকালীন সময়ের প্রয়োজনে কার্যকর হবে।
২) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষ এ বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য প্রাথমিক তদন্ত তাৎক্ষণিকভাবে শুরু করবে।
৩) প্রতিটি সদস্যরাষ্ট্রকে এই ধারার প্রথম অনুচ্ছেদে বর্ণিত পরিস্থিতিতে গ্রেফতারকৃত যে কোন ব্যক্তিকে, সে যে রাষ্ট্রের নাগরিক তার নিকটস্থ প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করার অনুমতি দিতে হবে, অথবা যদি সেই ব্যক্তি কোন রাষ্ট্রে নাগরিকত্বের দাবিদার না হয়, তাহলে যে দেশে সে বেশিরভাগ সময় কাটায় সে দেশের প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করার জন্য সাহায্য করতে হবে।
৪) এই ধারা মোতাবেক কোন রাষ্ট্রপক্ষ যদি কাউকে গ্রেফতারপূর্বক কারাবন্দী করে তাহলে ৫ম ধারার ১ম অনুচ্ছেদের বর্ণিত রাষ্ট্রসমূহকে অবহিত করতে হবে এবং কেন ও কোন্ পরিস্থিতিতে তাকে বন্দী রাখা হয়েছে তার কারণ জানাতে হবে। ২য় অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিয়মে যে রাষ্ট্র প্রাথমিক তদন্ত অনুষ্ঠিত করবে তাকে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রকে তদন্তের ফলাফল সম্পর্কে দ্রুত অবহিত করতে হবে এবং এই রাষ্ট্র তার বিচারের এখতিয়ার প্রয়োগ করতে আগ্রহী কিনা তাও জানাতে হবে।
ধারা ৭
১) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষটি যার বিচারের এখতিয়ার অধীন ভূখণ্ডের কোন ব্যক্তি ৪ ধারায় বর্ণিত কোন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে যে অভিযুক্ত হয়েছে, সেই রাষ্ট্র ৫ ধারার বর্ণিত পরিস্থিতিতে যদি তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার না করে তাহলে বিচারের উদ্দেশ্যে উক্ত রাষ্ট্রের যোগ্যতম কর্তৃপক্ষের বিচার্য গুরুতর ধরনের অন্যান্য সকল সাধারণ অপরাধ বিচারের ন্যায় অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সহকারে তাদের বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। ৫ ধারার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের চিহ্নিত ক্ষেত্রে বিচার এবং দণ্ডের জন্য প্রয়োজনীয় গুরুত্বসম্পন্ন প্রমাণাদি ৫ ধারার ১ উপধারায় বর্ণিত ক্ষেত্রসমূহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণাদির চেয়ে কোন অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ হতে পারবে না।
২) যে কোন ব্যক্তি, যার বিরুদ্ধে ৪ ধারায় বর্ণিত অপরাধের সংশ্লিষ্টতার কারণে অভিযোগ আনা হয়েছে বা বিচারকার্য চলছে, বিচার চলাকালীন বিভিন্ন পর্যায়ে তার প্রতি সদাচরণ সুনিশ্চিত করতে হবে।
ধারা ৮
১) ৪ ধারায় বর্ণিত অপরাধসমূহ দুই সদস্য দেশের মধ্যে বিদ্যমান অপরাধ প্রত্যর্পণ (এক্সট্রাডিশন) চুক্তির আওতায় অপরাধী প্রত্যর্পণমূলক অপরাধের পর্যায়ভুক্ত বলে গণ্য করতে হবে। যে সকল রাষ্ট্র তাদের মধ্যে অপরাধী প্রত্যর্পণমূলক চুক্তি সম্পাদন করবে, সেই চুক্তিতে তারা এ ধরনের অপরাধকে অপরাধী প্রত্যর্পণমলক অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করবে।
২) যদি কোন রাষ্ট্রপক্ষে কোন অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তিতে অপরাধী প্রত্যর্পণকে বাধ্যতামূলক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে তাহলে চুক্তির অপর দেশটি অপরাধী ফেরত প্রদানের জন্য সে দেশের প্রতি অনুরোধ জানাতে পারবে। যে রাষ্ট্রপক্ষের সাথে এ ধরনের কোন রাষ্ট্রের অপরাধী প্রত্যর্পণমূলক চুক্তি নেই তারা এহেন অপরাধে অভিযুক্ত অপরাধীকে ফেরত প্রদানের জন্য এই 'কনভেনশনকে' একটি আইনগত ভিত্তি হিসেবে গণ্য করতে পারবেন। অপরাধীকে প্রত্যর্পণ করা হবে কিনা, তা নির্ভর করবে অনুরোধকারী দেশের আইনে অন্যান্য পরিস্থিতি কেমন বিরাজ করছে, তার ওপর।
৩) যে সকল রাষ্ট্রপক্ষ তাদের মধ্যে সম্পাদিত অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তিতে অপরাধী ব্যক্তিকে ফেরত প্রদানের বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করেনি, সংশ্লিষ্ট দেশের আইনের বিধান সাপেক্ষে উক্ত অপরাধকে প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করবে।
৪) রাষ্ট্রপক্ষসমূহের মধ্যকার অপরাধী প্রত্যর্পণমূলক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উক্ত অপরাধকে এই মর্মে গণ্য করতে হবে যে, যে স্থানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সে স্থানটিই বড় কথা নয়, বিচার্য বিষয় হলো ৫ ধারার ১ উপধারায় বর্ণিত পরিস্থিতি অনুযায়ী রাষ্ট্রের যে অংশে ঘটনা ঘটেছে সেই ভূখণ্ডটি সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের বিচারের এখতিয়ারাধীন কিনা?
ধারা ৯
১) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষসমূহ ৪ উপধারায় বর্ণিত অপরাধসমূহের ব্যাপারে অপরাধ বিচারকার্যে ব্যাপকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করবে এবং বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় যেসব তথ্যপ্রমাণ যে পক্ষের কাছে থাকবে তারা বিচারের স্বার্থে তা বিনিময় করবে।
২) এই ধারার ১ উপধারায় বর্ণিত দায়-দায়িত্বসমূহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় পক্ষগুলি তাদের মধ্যে যদি পারস্পরিক আইনগত সহযোগিতামূলক কোন চুক্তি থেকে থাকে, তাহলে সেই ধরনের চুক্তির সাথে সঙ্গতি রেখে পালন করবে।
ধারা ১০
১) প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষকে গ্রেফতার, অন্তরীণাদেশ বা কারাদণ্ড কার্যকর করার কাজে নিযুক্ত ও নিরাপত্তা হেফাজত, স্বীকারোক্তি আদায় বা অন্যান্য শাস্তিমূলক আচরণের সাথে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সামরিক বা বেসামরিক ফৌজি সদস্য, চিকিৎসা কর্মী, স্বীকারোক্তি আদায়কারী বা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মীদের প্রশিক্ষণে নির্যাতন নিষিদ্ধমূলক শিক্ষা এবং তথ্যাদি সন্নিবেশিত করতে হবে।
২) প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষকে নির্যাতন নিষিদ্ধ করার এই শিক্ষা ও তথ্য উপরোক্ত কাজ ও দায়িত্বে নিয়োজিত যে কোন ব্যক্তির জন্য ইস্যুকৃত কর্ম নির্দেশিকায় সন্নিবেশিত করতে হবে।
ধারা ১১
প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষকে তার বিচার এখতিয়ারের অধীন ভূখণ্ডে নির্যাতন রোধ কার্যকর করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বন্দীকরণ অথবা স্বীকারোক্তি আদায়মূলক আচরণের ও আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থাপনায় স্বীকারোক্তি আদায়ের নিয়মনীতি, পদ্ধতি ও প্রথাসমূহকে নিয়মানুগভাবে পর্যালোচনার মধ্যে রাখতে হবে।
ধারা ১২
প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষকে এই মর্মে নিশ্চিত করতে হবে যে, যদি তার বিচারের এখতিয়ারাধীন ভূখণ্ডের কোথাও কোন দৈহিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে বিশ্বাস করার মত যুক্তিযুক্ত কারণ থাকে, তাহলে উক্ত অপরাধের দ্রুত এবং নিরপেক্ষ তদন্তানুষ্ঠানের জন্য যথাযোগ্য কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দিতে হবে।
ধারা ১৩
কোন রাষ্ট্রপক্ষের বিচার এখতিয়ারাধীন ভূখণ্ডে নির্যাতিত হয়েছে বলে কারো অভিযোগ থাকলে তার সেই অভিযোগ দায়ের করার অধিকার রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে এবং তার বিষয়টি যথাযোগ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দ্রুত এবং নিরপেক্ষভাবে অনুসন্ধানের ব্যবস্থা করতে হবে। অভিযোগকারী অথবা সাক্ষীদের অভিযোগ দায়ের বা সাক্ষ্যদানের জন্য যাতে দুর্ব্যবহার বা হুমকির সম্মুখীন হতে না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
ধারা ১৪
১) দৈহিক নির্যাতনের শিকার কোন বন্দী যাতে আইনগত প্রতিকার এবং যতটা সম্ভব পরিপূর্ণ পুনর্বাসনের বন্দোবস্তসহ পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের সুযোগ পান, সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে। দৈহিক নির্যাতনে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির ক্ষেত্রে তার পোষ্যবৃন্দ উক্ত ক্ষতিপূরণের অধিকারী হবে।
২) জাতীয় আইনের আওতায় নির্যাতিত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণের কোন অধিকার এই ধারার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বা বাধাপ্রাপ্ত হবে না।
ধারা ১৫
প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষকে এই মর্মে নিশ্চিত করতে হবে যে, দৈহিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে কারো কাছ থেকে কোন বিবৃতি আদায় করা হলে, অভিযুক্ত নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের সাক্ষ্যপ্রমাণ হাজির করা ছাড়া, সেই বিবৃতিকে কোন বিচারের ক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে না।
ধারা ১৬
১) প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষকে তার বিচারাধীন ভূখণ্ডের যে কোন স্থানে নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তি, যা ১ ধারায় বর্ণিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী নির্যাতনের পর্যায়ে পড়ে সেই ধরনের কোন আচরণ কোন সরকারি কর্মকর্তা বা অন্য কোন ব্যক্তি সরকারি ক্ষমতাবলে যাতে সংঘটিত করতে না পারে বা তার নির্দেশে যেন সংঘটিত হতে না পারে, সে জন্য প্রতিবিধানমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে ১০, ১১, ১২ ও ১৩ ধারায় বর্ণিত দায়িত্বসমূহ নির্যাতন বা নির্যাতনের অন্যান্য মাধ্যম যেমন নিষ্ঠুর অমানবিক বা মর্যাদাহানিকর আচরণ ও শাস্তির বেলায় প্রযোজ্য হবে।
২) এই কনভেনশনের বিধানসমূহ নিষ্ঠুর অমানবিক ও মর্যাদাহানিকর আচরণ কিংবা শাস্তি নিষিদ্ধকারী অন্যান্য আন্তর্জাতিক সনদ বা জাতীয় আইনের অনুরূপ বিধানাবলীর প্রতি পক্ষপাতিত্বমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রণীত হয়নি।
পরিচ্ছেদ - ২
ধারা ১৭
১) নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি কমিটি গঠন করা হবে (যাকে এর পর থেকে 'কমিটি' হিসেবে অভিহিত করা হবে), পরবর্তী পর্যায়ে বর্ণিত দায়দায়িত্ব সে কমিটি পালন করবে। এই কমিটি গঠিত হবে উচ্চ নৈতিক চরিত্র এবং মানবাধিকার আন্দোলনে যোগ্যতার স্বীকৃতিসম্পন্ন দশজন বিশেষজ্ঞ সমবায়ে, যারা তাঁদের ব্যক্তিগত ক্ষমতায় কাজ করে যাবেন। সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলো এই বিশেষজ্ঞবৃন্দকে ভৌগোলিক বিন্যাসের দিকে লক্ষ রেখে এবং আইনি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের সংশ্লিষ্টতার উপকারিতাকে বিবেচনায় রেখে নির্বাচিত করবে।
২) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষসমূহের মনোনীত ব্যক্তিবর্গের গোপন ভোটে কমিটির সদস্যবৃন্দ নির্বাচিত হবেন। প্রতিটি সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র তার নাগরিকদের মধ্য থেকে একজনকে মনোনীত করবে। ইণ্টারন্যাশনাল কোভেন্যাণ্ট অন সিভিল অ্যাণ্ড পলিটিক্যাল রাইটস (নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি)-এর সদস্য এবং নির্যাতনবিরোধী কমিটির সদস্য হতে ইচ্ছুক এমন ব্যক্তির মনোনয়ন দানের উপকারিতার কথা সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় পক্ষ বিবেচনায় রাখতে হবে।
৩) জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বানে অনুষ্ঠিতব্য সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলির দ্বিবার্ষিক সভায় কমিটির সদস্যবর্গের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভাসমূহে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে 'কোরাম' পূর্ণ হবে এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটপ্রাপ্ত ব্যক্তি কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত বলে পরিগণিত হবেন।
৪) প্রথম নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে এই কনভেনশন কার্যকর হবার দিন থেকে অন্তত ছয় মাসের মধ্যে। প্রতিবার নির্বাচনের অন্তত চার মাস আগে তিন মাসের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেবার আমন্ত্রণ জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোর কাছে পত্র দেবেন। এভাবে মনোনীত ব্যক্তিবর্গের একটি তালিকা (আক্ষরিক ক্রমবিকাশ মোতাবেক প্রণীত) এবং মনোনয়নকারী দেশগুলোর নাম চিহ্নিত করে মহাসচিব সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোর কাছে পাঠাবেন।
৫) কমিটির সদস্যগণ চার বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হবেন। পুনঃমনোনীত হলে তাঁরা পরবর্তী মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হবার যোগ্যতা অর্জন করবেন। যদিও প্রথম নির্বাচনে নির্বাচিত সদস্যবৃন্দের মধ্যে পাঁচজনের সদস্যপদের মেয়াদ দ্বিতীয় বছরের শেষ নাগাদ উত্তীর্ণ হবে। প্রথম নির্বাচনের পরপরই এই ধারার ৩ প্যারায় উল্লিখিত সভার চেয়ারম্যান উক্ত পাঁচজন সদস্যের নাম লটারির মাধ্যমে বাছাই করবেন।
৬) কমিটির কোন সদস্য যদি মৃত্যুবরণ করেন বা পদত্যাগ করেন অথবা অপর যে কোন কারণে কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে অপারগ হন, তাহলে তার মনোনয়নদানকারী রাষ্ট্র বাকি মেয়াদের দায়িত্ব পালনের জন্য তার নাগরিকদের মধ্য থেকে অপর সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র পক্ষগুলোর সম্মতি সাপেক্ষে অন্য একজন বিশেষজ্ঞকে মনোনীত করতে পারবে। জাতিসংঘ মহাসচিব কর্তৃক প্রস্তাবিত মনোনয়নের ব্যাপারে অবহিত হবার পর ছয় সপ্তাহের মধ্যে যদি অর্ধেক বা ততোধিক সংখ্যক রাষ্ট্র উক্ত মনোনয়নের ব্যাপারে অবহিত হবার পর ছয় সপ্তাহের মধ্যে যদি অর্ধেক বা ততোধিক সংখ্যক রাষ্ট্র উক্ত মনোনয়নের ব্যাপারে নেতিবাচক মন্তব্য বা আপত্তি উত্থাপন না করে, তাহলে বিকল্প সদস্যের মনোনয়ন অনুমোদিত হয়েছে বলে গণ্য করা হবে।
৭) কমিটির সদস্যবর্গের দায়িত্ব পালনের ব্যয়ভার সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষসমূহ বহন করবে।
ধারা ১৮
১) কমিটি দুই বছরের মেয়াদে কর্মকর্তা নির্বাচন করবে। কর্মকর্তাগণ পুনঃনির্বাচিত হতে পারবেন।
২) কমিটি নিজস্ব ‘রুলস অব প্রসিডিওর' প্রণয়ন করবে। তবে তার মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয় দু'টি হুবহু থাকতে হবে, যেমন—
- ক) ছয়জন সদস্যের উপস্থিতিতে ‘কোরাম’ পূর্ণ হবে;
- খ) উপস্থিতি সদস্যবর্গের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে;
৩) এই কনভেনশনের আওতায় কমিটিকে কার্যকরভাবে ভূমিকা পালনে সহায়তার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব মহোদয় প্রয়োজনীয় কর্মী এবং সুযোগ-সুবিধা দেবেন।
৪) কমিটির প্রথম সভাটি আহ্বান করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব। প্রথম সভার পর পরবর্তী সভাগুলো অনুষ্ঠিত হবে কমিটির ’রুলস্ অব প্রসিডিওর’ মোতাবেক।
৫) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষগুলোর মধ্যকার বৈঠক, কমিটি সভা প্রভৃতি অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার এবং জাতিসংঘ কর্তৃক ব্যয়কৃত অর্থ, যেমন এই ধারার ৩ উপধারায় বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কমিটির কর্তকর্তা ও সুযোগ-সুবিধা প্রভৃতির ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোর ওপরই বর্তাবে।
ধারা ১৯
১) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষগুলো এই কনভেনশন প্রতিষ্ঠার পরবর্তী একবছরের মধ্যে কনভেনশনে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়নে কতটা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পেরেছে, তা উল্লেখপূর্বক জাতিসংঘ মহাসচিবের মাধ্যমে প্রতিবেদন কমিটি সমীপে পেশ করবে; এর পর পরবর্তী চার বছরে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলো এই কনভেনশন বাস্তবায়নে গৃহীত নতুন পদক্ষেপ এবং কমিটির অনুরোধে গৃহীত অন্যান্য কর্মসূচী বাস্তবায়নে অর্জিত সাফল্য উল্লেখ করে অতিরিক্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করবে।
২) জাতিসংঘ মহাসচিব প্রতিবেদনসমূহ সকল সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের কাছে প্রেরণ করবেন।
৩) কমিটি প্রতিটি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করবে এবং যথোপযুক্ত সাধারণ মন্তব্য সহকারে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের কাছে পাঠিয়ে দেবে। সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রটি তখন কোন মন্তব্যের ব্যাপারে কমিটির সাথে যোগাযোগ করবে।
৪) এই ধারার ৩ উপধারায় বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কমিটি তার কোন মন্তব্য সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রাপ্ত পর্যবেক্ষণের সাথে যুক্ত করে ২৪ ধারায় বর্ণিত বিধান অনুযায়ী প্রণীত বার্ষিক প্রতিবেদনে যুক্ত করতে পারে। সংশ্লিষ্ট কোন রাষ্ট্র এই মর্মে অনুরোধ জানালে এই ধারার ১ অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী পেশকৃত প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি এতদ্সঙ্গে সংযোজন করতে পারে।
ধারা ২০
১) কোন সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের পক্ষের কোন অংশে সুপরিকল্পিত পন্থায় নির্যাতন চালানো হচ্ছে এই মর্মে সুনির্দিষ্ট লক্ষণযুক্ত কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য কমিটির গোচরে এলে সেই তথ্য প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় তদন্ত অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কমিটি সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সহযোগিতা আহ্বান করবে এবং এই লক্ষ্যে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর মন্তব্য বা পর্যবেক্ষণ পেশ করবে।
২) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষ কর্তৃক পেশকৃত মন্তব্য কিংবা অন্য কোন প্রাসঙ্গিক তথ্য পর্যালোচনা করে কমিটি যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে কমিটির এক বা একাধিক সদস্যকে গোপনে একটি তদন্ত চালিয়ে কমিটি বরাবর রিপোর্ট দাখিল করার জন্য নিয়োজিত করতে পারে।
৩) এই ধারায় ২ উপধারায় বর্ণিত বিধান অনুযায়ী যদি কোন তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের প্রতি কমিটি অনুরোধ জানাবে।
৪) এই ধারায় ২ উপধারায় বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কমিটির কোন সদস্য বা সদস্যবৃন্দ কর্তৃক পেশকৃত তদন্ত রিপোর্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার পর কমিটি রিপোর্টটি উপস্থিত ক্ষেত্রে কমিটির বিবেচনায় উপযুক্ত বলে বিবেচিত মন্তব্য বা পরামর্শসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের কাছে ফেরত পাঠাবে।
৫) এই ধারার ১ থেকে ৪ উপধারায় বর্ণিত কমিটির তদন্ত সম্পর্কিত বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয় হিসেবে পরিগণিত হবে এবং তদন্তের সমগ্র পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সহযোগিতা কামনা করা হবে। ২ উপধারায় বর্ণিত বিধান অনুযায়ী তদন্তকার্য সম্পাদনের পর কমিটি সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সাথে পরামর্শক্রমে তদন্তসংক্রান্ত কার্যাবলীর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ ২৪ নং ধারায় বিধৃত বার্ষিক প্রতিবেদনে সংযুক্ত করতে পারে।
ধারা ২১
১) এই কনভেনশনে স্বাক্ষরদানকারী কোন রাষ্ট্রপক্ষ এই ধারাবলে যে কোন সময় এই মর্মে ঘোষণা দিতে পারবে যে, এই কনভেনশনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ দায়িত্ব পালনে কোন রাষ্ট্র অপারগ বলে অপর কোন রাষ্ট্র যদি অভিযোগ উত্থাপন করে তাহলে প্রথমোক্ত রাষ্ট্রটি অনুরূপ অভিযোগ সম্পর্কিত আবেদন বা নালিশ গ্রহণ বা বিবেচনার জন্য কমিটিকে যোগ্য বলে মনে করে। এই অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিধি মোতাবেক অনুরূপ অভিযোগ গ্রহণ বা পর্যালোচনা করা যাবে, তবে তা এই শর্তে যে, সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রটি ঘোষণা করবে যে সে কমিটির বিচার-বিবেচনার যোগ্যতাকে স্বীকার করে। যে পক্ষ অনুরূপ ঘোষণা প্রদান করবে না, এই ধারা অনুযায়ী সেই পক্ষের অভিযোগ কমিটি গ্রহণ বা বিবেচনা করবে না। নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিতে কোন অভিযোগ গৃহীত হবে:
- ক) যদি কোন রাষ্ট্রপক্ষ মনে করে যে, অন্য একটি রাষ্ট্র এই কনভেনশনের বিধান বাস্তবায়ন করছে না, তাহলে সে লিখিতভাবে শেষোক্ত রাষ্ট্রের কাছে বিষয়টি পেশ করতে পারে। অনুরূপ অভিযোগ প্রেরণের তিন মাসের মধ্যে অভিযোগ গ্রহণকারী রাষ্ট্রকে অভিযোগকারী রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিটি বিষয়ের ব্যাখ্যা অথবা বিষয়টি বিশ্লেষণ উপযোগী অন্য কোন ধরনের বিবৃতি মারফত জবাব দেবে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রটির প্রাসঙ্গিক অভ্যন্তরীণ নিয়মপদ্ধতি, গৃহীত অথবা বিবেচনাধীন প্রতিবিধানমূলক পদক্ষেপের বিবরণ, প্রভৃতি।
- খ) যদি বিবাদটি উভয় রাষ্ট্রপক্ষের নিকট সন্তোষজনকভাবে অভিযোগ গ্রহণকারী রাষ্ট্র কর্তৃক গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যেও নিষ্পত্তি না হয়, তাহলে বিবাদের যে কোন রাষ্ট্রপক্ষ অত্র কমিটি এবং অন্যান্য রাষ্ট্রপক্ষ বরাবরে বিজ্ঞপ্তি প্রদানের মাধ্যমে কমিটির কাছে পেশ করার অধিকার সংরক্ষণ করবে।
- গ) এই ধারাবলে কমিটি তার বরাবরে পেশকৃত বিবাদটি সুরাহা করতে পারবে। তবে তার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে, আন্তর্জাতিক আইনের সাধারণত স্বীকৃত মূলনীতির সাথে সঙ্গতি রেখে সর্বপ্রকার অভ্যন্তরীণ প্রতিকারের ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে এবং সব ধরনের প্রতিবিধান গ্রহণের পদক্ষেপ নিঃশেষ হয়ে গেছে। তবে প্রতিবিধানমূলক পদক্ষেপগুলো অকারণে দীর্ঘসূত্রতাপূর্ণ করার কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যন্ত্রণা লাঘব না হলে সেই সব ক্ষেত্রে এই নির্দেশ কার্যকর হবে না।
- ঘ) এই ধারাবলে আবেদনসমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলাকালীন কমিটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসবে।
- ঙ) উপধারা ‘গ’-এ বর্ণিত বিধানসাপেক্ষে বিবদমান রাষ্ট্রপক্ষদ্বয়ের মধ্যে কমিটি এই কনভেনশনে প্রদত্ত দায়িত্ব অনুযায়ী মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে। এই উদ্দেশ্যে কমিটি তার বিবেচনা অনুযায়ী একটি অস্থায়ী সম্মিলনী কমিশন (রিকনসিলিয়েশন কমিশন) গঠন করতে পারবে।
- চ) এই ধারা মোতাবেক যদি কোন বিষয় কমিটির কাছে পাঠানো হয় তাহলে কমিটি রাষ্ট্রপক্ষসমূহকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের জন্য উপধারা ‘খ’ অনুযায়ী অনুরোধ করতে পারবে।
- ছ) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রসমূহের ব্যাপারে কমিটি যখন কার্যব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা নেবে তখন রাষ্ট্রগুলো উপধারা ‘খ’ অনুযায়ী কমিটিতে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার রাখবে এবং মৌখিক বা লিখিতভাবে আবেদন পেশ করতে পারবে।
- জ) উপধারা ‘খ’ অনুযায়ী পেশকৃত বিজ্ঞপ্তি প্রাপ্তির এক বছরের মধ্যে কমিটি এই মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করবে যে,:
- এক) ‘ঞ’ উপধারা মোতাবেক যদি কোন সমাধানে উপনীত হওয়া যায়, তাহলে কমিটি তার প্রতিবেদন সংক্ষিপ্ত বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবে যার মধ্যে ঘটনার বর্ণনা এবং সমাধান উল্লিখিত থাকবে।:
- দুই) ‘ঞ’ উপধারা মোতাবেক যদি কোন সমাধানে উপনীত হওয়া না যায়, সে ক্ষেত্রে কমিটি শুধু ঘটনার বিবরণের মধ্যেই তার বিবৃতি সীমাবদ্ধ রাখবে এবং উক্ত প্রতিবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিনিধি কর্তৃক পেশকৃত আবেদনের কপি এবং বক্তৃতার ধারণকৃত রেকর্ড সংযুক্ত করা হবে। প্রতিটি বিষয়েই প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট সকল রাষ্ট্রপক্ষ বরাবরে পাঠানো হবে।
২) এই অনুচ্ছেদে বিধৃত বিধানাবলী ১ ধারা মতে এই কনভেনশনে পাঁচটি রাষ্ট্রপক্ষের ঘোষণা প্রদানের মধ্য দিয়ে কার্যকর হবে। পাঁচটি রাষ্ট্রপক্ষের এই ঘোষণা জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবরে দাখিল করতে হবে। মহাসচিব অতঃপর ঘোষণাসমূহ অন্যান্য রাষ্ট্রপক্ষের মধ্যে বিলি করবেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের বরাবরে আবেদনের মাধ্যমে অবশ্য ঘোষণা যে কোন সময় প্রত্যাহার করে নেবার সুযোগ ঘোষণা থাকবে। এই ধারা বলে প্রেরিত আবেদনসমূহ যে বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রণীত হচ্ছে, অনুরূপ ঘোষণা প্রত্যাহার তার প্রতি পক্ষপাতিত্বপূর্ণ বলে পরিগণিত হবে না। মহাসচিব কর্তৃক উক্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা গৃহীত হবার পর সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের আর কোন আবেদন এই ধারা অনুযায়ী বিবেচনাযোগ্য হবে না, যদি উক্ত রাষ্ট্রপক্ষ নতুন কোন ঘোষণা প্রদান না করে।
ধারা ২২
১) এই কনভেনশনের কোন রাষ্ট্রপক্ষ এই ধারার আওতায় যে কোন সময় কমিটিকে অন্য কোন রাষ্ট্রপক্ষ কর্তৃক এই কনভেনশন ভঙ্গপূর্বক নির্যাতনের ঘটনার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পক্ষে আবেদন গ্রহণ এবং নিষ্পত্তির উপযুক্ত বলে ঘোষণা করতে পারবে। যে রাষ্ট্রপক্ষ অনুরূপ ঘোষণা করবে না, সেই সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের পক্ষে কমিটি কোন আবেদন গ্রহণ করবে না;
২) এই ধারার আওতায় কমিটি অজ্ঞাত পরিচয় কোন সূত্র থেকে প্রেরিত আবেদন অগ্রহণযোগ্য বলে গণ্য করবে এবং এ ধরনের আবেদনকে অনুরুপ আবেদনের অধিকার অপব্যবহার করার শামিল অথবা এই কনভেনশনের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে বিবেচনা করবে;
৩) উপধারা ২-এর শর্তানুসারে কমিটি তার নিকট পেশকৃত কোন আবেদনকে এই ধারাবলে উপধারা ১ অনুযায়ী ঘোষণা প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের দৃষ্টিগোচরীভূত করবে। অনুরূপ দৃষ্টিগোচরমূলক বিজ্ঞপ্তি প্রাপ্তির ছয় মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষ ঘটনার বিবরণ জানিয়ে লিখিত বিবৃতি দিতে বাধ্য থাকবে যাতে রাষ্ট্রপক্ষ কর্তৃক গৃহীত প্রতিকারমূলক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করতে হবে;
৪) কমিটি এই ধারাবলে গৃহীত আবেদনপ্রাপ্ত সকল তথ্যের আলোকে বিবেচনা করবে অথবা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে বিবেচনা করবে;
৫) এই ধারাবলে কমিটি নিম্নলিখিত বিষয়সমূহে সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোন ব্যক্তির পক্ষ থেকে পেশকৃত আবেদন বিবেচনাযোগ্য বলে গণ্য করবে না:
- ক) এই বিষয়টি নিয়ে অন্য কোন আন্তর্জাতিক তদন্ত বা নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার অধীনে অনুসন্ধান চলেনি বা চলছে না;
- খ) ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি জাতীয় পর্যায়ে প্রতিকার বা প্রতিবিধানের সব সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলেছেন। যেখানে প্রতিকার ব্যবস্থা অহেতুক দীর্ঘসূত্র করে তোলা হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে এই কনভেনশনের লংঘনপূর্বক নিপীড়নের কার্যকর প্রতিকারের আশা সুদূরপরাহত, সেখানে এই বিধান কার্যকর হবে না;
৬) এই ধারার বলে কমিটি আবেদনসমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলাকালীন রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হবে।
৭) কমিটি তার পর্যবেক্ষণাদি রাষ্ট্রপক্ষসমূহ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বরাবরের পাঠিয়ে দেবে;
৮) এই অনুচ্ছেদে বিধৃত বিধানাবলী ১ ধারা মতে এই কনভেনশনে পাঁচটি রাষ্ট্রপক্ষের ঘোষণা প্রদানের ফলে কার্যকর হবে; পাঁচটি রাষ্ট্রপক্ষের এই ঘোষণা জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবরে দাখিল করতে হবে। মহাসচিব অতঃপর ঘোষণাসমূহ অন্যান্য রাষ্ট্রপক্ষের মধ্যে বিলি করবেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের বরাবরে বিজ্ঞপ্তি দাখিলের মাধ্যমে অবশ্য ঘোষণা যে কোন সময় প্রত্যাহার করে নেবার সুযোগ ঘোষণা থাকবে। এই ধারা বলে প্রেরিত বার্তাসমূহ যে বিষয়কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে, অনুরূপ ঘোষণা প্রত্যাহার তার প্রতি পক্ষপাতিত্বপূর্ণ বলে পরিগণিত হবে না। মহাসচিব কর্তৃক উক্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা গৃহীত হবার পর সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের আর কোন যোগাযোগ এই ধারা অনুযায়ী বিবেচনাযোগ্য হবে না, যদি না উক্ত রাষ্ট্রপক্ষ নতুন কোন ঘোষণা প্রদান না করে।
ধারা ২৩
কমিটির সদস্য এবং ধারা ২১-এর উপধারা ১ (ঙ)-এর আওতায় যাঁরা অস্থায়ী নিষ্পত্তি (অ্যাডহক রিকনসিলিয়েশন) কমিশনের সদস্য হবেন, তাঁদেরকে জাতিসংঘের প্রিভিলেজ ও ইম্যুনিটিজ কনভেনশনে দায়িত্বপালনরত বিশেষজ্ঞদের জন্য মঞ্জুরকৃত সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার প্রদান করা হবে।
ধারা ২৪
কমিটি এই কনভেনশনের আওতায় গৃহীত তৎপরতার ওপর একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষসমূহ ও জাতিসংঘ মহাসচিবের বরাবরে দাখিল করবে।
পরিচ্ছেদ ৩
ধারা ২৫
১) এই কনভেনশন সকল রাষ্ট্রের স্বাক্ষরের জন্য উন্মুক্ত।
২) এই কনভেনশন অনুমোদনসাপেক্ষ। অনুরূপ অনুমোদন প্রদানের আনুষ্ঠানিকতাসমূহ জাতিসংঘ মহাসচিবের নিকট পেশ করা হবে।
ধারা ২৬
এই কনভেনশনে সকল রাষ্ট্র অংশ নিতে পারে। অংশগ্রহণের জন্য সুনির্দিষ্ট বিধানপত্র জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে জমা দেয়া হবে।
ধারা ২৭
১) জাতিসংঘ মহাসচিবের নিকট অংশগ্রহণের বিধানের বিশতম অনুস্বাক্ষর প্রদান করার ৩০তম দিনের মাথায় এই কনভেনশন কার্যকর হবে।
২) কনভেনশন অনুমোদনের বা অংশগ্রহণের বিশতম অনুস্বাক্ষর জমাদানের পর যদি কোন রাষ্ট্রপক্ষ এই কনভেনশনে অনুমোদন দান বা অনুস্বাক্ষর করে, তা হলে ঐ এবং রাষ্ট্রপক্ষের নিজস্ব অনুস্বাক্ষর বা অনুমোদনের ৩০ দিনের মাথায় এই কনভেনশনকে কার্যকর বলে গণ্য করবে।
ধারা ২৮
১) এই কনভেনশন অনুমোদন বা অনুস্বাক্ষরকালে প্রতিটি রাষ্ট্রপক্ষ এই মর্মে ঘোষণা দিতে পারবে যে কনভেনশনের ২০তম ধারায় বর্ণিত কমিটির যোগ্যতাকে ঐ রাষ্ট্রপক্ষ স্বীকার করে না।
২) এই ধারায় ১ উপধারায় বর্ণিত বিধানের সাথে অসম্মতি পোষণকারী কোন রাষ্ট্রপক্ষ যে কোন সময় জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবরে আবেদনের মাধ্যমে অনুরূপ অসম্মতি প্রত্যাহার করে নিতে পারে।
ধারা ২৯
১) এই কনভেনশনের যে কোন রাষ্ট্রপক্ষ যে কোন ধরনের সংশোধনী আনার প্রস্তাব করতে পারে। সেক্ষেত্রে সংশোধনী প্রস্তাব জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবরে পেশ করতে হবে। জাতিসংঘ মহাসচিব অতঃপর সংশোধনী প্রস্তাবনার বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষসমূহকে উক্ত প্রস্তাবনা বিবেচনা অথবা তার ওপর ভোটাভুটির জন্য সম্মেলন আহ্বানে সম্মত আছে কিনা তা জানাতে অনুরোধ করবেন। এ ধরনের আবেদনের অন্তত চার মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষসমূহের এক-তৃতীয়াংশ ভাগ যদি অনুরূপ সংশোধনীর জন্য সম্মিলিত আহ্বানে সম্মতি জ্ঞাপন করে তাহলে জাতিসংঘের উদ্যোগে মহাসচিব অনুরূপ সম্মেলন আহ্বান করবেন। উপস্থিত রাষ্ট্রপক্ষগুলোর উপস্থিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদিত সংশোধনী মহাসচিব মহোদয় সকল সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের নিকট অনুমোদনের জন্য বিলি করবেন।
২) এই ধারার ১ উপধারায় বর্ণিত বিধান অনুসারে অনুমোদিত কোন সংশোধনীর ক্ষেত্রে যদি এই কনভেনশনের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য রাষ্ট্রপক্ষ কর্তৃক মহাসচিবকে এই মর্মে অবগত করা হয় যে, তারা তাদের দেশের নিজ নিজ শাসনতন্ত্র অনুযায়ী উল্লিখিত সংশোধনী অনুমোদন করেছে, শুধুমাত্র তাহলেই সংশোধনীটি কার্যকর হবে।
৩) অনুরূপ সংশোধনীসমূহ কার্যকর হলে সংশোধনীতে অনুমোদনকারী সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এই কনভেনশনের অন্যান্য বিধানে সম্মতিদানকারী রাষ্ট্রসমূহ এবং পূর্বেকার সংশোধনীসমূহে সম্মতিদানকারী সকল রাষ্ট্রপক্ষের নিকটই তা কার্যকর করা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়বে।
ধারা ৩০
১) দুই বা ততোধিক রাষ্ট্রের মধ্যে যদি এই কনভেনশনের ব্যাখ্যা বা প্রয়োগ নিয়ে কোন বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং আলোচনার মধ্য দিয়ে মীমাংসা সম্ভব না হয় তাহলে রাষ্ট্রপক্ষদ্বয়ের যে কোন একটির অনুরোধে বিষয়টি সালিশের জন্য পেশ করা যেতে পারে। এ ধরনের সালিশের জন্য আবেদন জানানোর ছয় মাসের মধ্যে যদি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো সালিশ সংগঠিত করার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছুতে না পারে, তাহলে যে কোন একটি পক্ষ বিষয়টি আন্তর্জাতিক সমমর্যাদাসম্পন্ন আদালতের অনুরোধে আন্তর্জাতিক আদালতে পেশ করা যাবে।
২) প্রতিটি রাষ্ট্র এই কনভেনশনে অনুমোদন দান কিংবা অনুস্বাক্ষরকালে এই মর্মে ঘোষণা দিতে পারে যে, এই ধারার ১ উপধারাটি মেনে চলতে রাষ্ট্রপক্ষটি বাধ্য নয়। এই ধারার ১ উপধারায় বর্ণিত বিধান অনুযায়ী অন্য রাষ্ট্রপক্ষগুলিও অনুরূপভাবে অনুমোদন বা অনুস্বাক্ষরে বাধ্য নয়।
৩) এই ধারার উপধারা ২-এ বর্ণিত বিধান অনুযায়ী যদি কোন সদস্য রাষ্ট্র কোন আপত্তি উত্থাপন করে থাকে, তাহলে রাষ্ট্রটি জাতিসংঘ মহাসচিবের নিকট আর্জির মাধ্যমে অনুরূপ আপত্তি প্রত্যাহার করে নিতে পারবে।
ধারা ৩১
১) কোন রাষ্ট্রপক্ষ জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর আবেদনের মাধ্যমে এই কনভেনশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উথাপন করতে পারে। এই ধরনের অভিযুক্তিকরণ জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবরে পেশকৃত আবেদনপ্রাপ্তির এক বছর পর্যন্ত মেয়াদি হতে পারে।
২) অভিযুক্তিকরণের পূর্ববর্তী পর্যায়ে এই কনভেনশন কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করা থেকে রহিত করবে না কিংবা অভিযুক্তিকরণ কার্যকর হবার পূর্ববর্তী পর্যায়ের কোন বিষয় বিবেচনাধীন থাকলে এ ধরনের অভিযুক্তিকরণ তার ওপর কোন প্রভাব ফেলতে পারবে না।
৩) সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রে উক্ত প্রকৃতির অভিযুক্তিকরণ কার্যকর হবার দিনকে অনুসরণ করে কমিটি উক্ত রাষ্ট্রের নতুন কোন বিষয়কে বিবেচনাধীনে আনবে।
ধারা ৩২
জাতিসংঘ মহাসচিব মহোদয় সকল সদস্য রাষ্ট্রবর্গ এবং এই কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী সকল রাষ্ট্রপক্ষকে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ সম্পর্কে অবহিত রাখবেন:
- ক) ২৫ এবং ২৬ ধারার অধীনে কনভেনশনে স্বাক্ষরদান, অনুমোদন এবং আন্তর্ভুক্তিকরণ;
- খ) ২৭ ধারা অনুযায়ী কনভেনশন কার্যকর করার তারিখ এবং ২৯ ধারা অনুযায়ী কোন সংশোধনী কার্যকর করার তারিখ নির্ধারণ;
- গ) ৩১ ধারা অনুযায়ী অভিযুক্তকরণ;
ধারা ৩৩
১) এই কনভেনশনের অবিকল ও নির্ভরযোগ্য আরবী, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, রাশিয়ান এবং স্প্যানিশ অনুবাদ জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে পেশ করা হবে।
২) জাতিসংঘের মহাসচিব মহোদয় এই কনভেনশনের সত্যায়িত অনুলিপি সকল রাষ্ট্রের কাছে পাঠাবেন।
এই লেখাটি জাতিসংঘের প্রাতিষ্ঠানিক নথি থকে গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘ প্রকাশনার সম্ভাব্য চিন্তাভাবনা যতদূর সম্ভব ছড়িয়ে দেওয়ার উদেশ্যে এই সংস্থা তাদের বেশির ভাগ নথি পাবলিক ডোমেইনে সকলের জন্য মুক্ত রেখেছে।
জাতিসংঘের প্রশাসনিক দিগ্নির্দেশনা (ইংরেজি) অনুসারে, নিম্নলিখিত নথিগুলি সারা বিশ্বব্যাপী পাবলিক ডোমেইনে মুক্ত:
- প্রাতিষ্ঠানিক রেকর্ড (সম্মেলনের কার্যবিবরণী, আক্ষরিক ও সারসংক্ষেপ, ...)
- জতিসংঘের চিহ্নযুক্ত জাতিসংঘের নথি
- জাতিসংঘের কার্যাবলী সম্বন্ধে জনগণকে অবহিত করার প্রাথমিক উদ্দেশ্যে তৈরি তথ্য উপাদান (বিক্রয়ের জন্য প্রযোজ্য তথ্য উপাদান নয়)।