নীতিকণা/সন্তুষ্ট অন্ধ বালক
< নীতিকণা
(পৃ. ১১-১২)
সন্তুষ্ট অন্ধ বালক
আলোক কেমন বস্তু বলনা আমায়,
কখন করিতে ভোগ হইল না তায়।
দর্শন কেমন তাহা নাহি বুঝিলাম,
কি সুখ তাহাতে হয় নাহি জানিলাম।
তোমরাই কত বার বলেছ আমারে,
অনেক অদ্ভূত বস্তু দেখিছ সংসারে।
তোমাদেরি মুখে আমি করে’ছি শ্রবণ,
সংসারে ছড়ায় রবি উজ্জ্বল কিরণ।
কিন্তু আমি কভু নাহি নিরখি সে সব,
কেবল রবির তাপ করি অনুভব।
দিবা হয়, রাতি হয়, শুনিতেই পাই,
কিন্তু দিবা-রজনীর ভেদ বুঝি নাই।
আমার দুঃখের কভু অবসান নাই,
সেই হেতু দুঃখ কর তোমরা সবাই।
কিন্তু কি যে ক্ষতি তায় জানিতে না পারি,
সে কারণ ক্ষণকাল দুঃখও না করি।
যাহা আমি এ জীবনে কখন পাবনা,
তার তরে কেন আশা করিব বলনা?
যে আশা নাশিবে মম মানসের সুখ,
তারে স্থান দিতে সদা হইব বিমুখ।
যে সুখে রয়েছি আমি এই অবস্থায়,
নৃপতি সদৃশ সুখী ভাবিব আমায়।
সন্তুষ্ট থাকিলে হ’ব সুখী নিরন্তর,
সন্তুষ্টের সদা সুখ সংসার ভিতর।