পওহারী বাবা/প্রথম অধ্যায়
পওহারী বাবা।
(গাজিপুরের বিখ্যাত সাধু।)
প্রথম অধ্যায়।
উপক্রমণিকা।
তাপিত জগৎকে সাহায্য কর—ইহাই সর্ব্বশ্রেষ্ঠ কর্ম্ম, ভগবান্ বুদ্ধ ধর্ম্মের অন্যান্য প্রায় সকল ভাবকেই সেই সময়ের জন্য বাদ দিয়া পূর্ব্বোক্ত ভাবেরই প্রাধান্য দিয়া গিয়াছেন; কিন্তু তাঁহাকেও স্বার্থপূর্ণ আমিত্বে আসক্তি যে সম্পূর্ণ ভ্রমমাত্র, ইহা উপলব্ধি করিবার জন্য অনেক বর্ষ ধরিয়া আত্মানুসন্ধানে কাটাইতে হইয়াছিল। আমাদের উচ্চতম কল্পনাশক্তিও ইঁহা অপেক্ষা নিঃস্বার্থ ও অশ্রান্ত কর্ম্মীর ধারণায় অক্ষম, কিন্তু তাহাকে সমুদয় বিষয়ের রহস্য বুঝিতে যেরূপ প্রবল সংগ্রাম করিতে হইয়াছিল, আর কাহার তদ্রূপ দেখা যায়? এ কথা সকল সময়েই খাটে যে, কার্য্য যে পরিমাণে মহত্তর, সেই পরিমাণে তাহার পশ্চাতে প্রত্যক্ষ-উপলব্ধি-জনিত শক্তি আছে। পূর্ব্ব হইতেই প্রস্তুত একটী সুচিন্তিত কার্য্যপ্রণালীর প্রত্যেক খুঁটিনাটিকে কার্য্যে পরিণত করিবার জন্য অধিক একাগ্র চিন্তাশক্তির প্রয়োজন না হইতে পারে, কিন্তু প্রবল শক্তিতরঙ্গসমূহ কেবল প্রবল একাগ্র চিন্তার পরিণাম মাত্র। সামান্য চেষ্টার জন্য হয়ত মতবাদমাত্রেই পর্য্যাপ্ত হইতে পারে, কিন্তু যে ক্ষুদ্র বেগের দ্বারা ক্ষুদ্র লহরীর উৎপত্তি হয়, তাহা অবশ্য প্রবল উর্ম্মির জনক তীব্র বেগ হইতে অতিশয় পৃথক্। তাহা হইলেও ঐ ক্ষুদ্র লহরীটী প্রবল উর্ম্মি-উৎপাদন-কারী শক্তির এক ক্ষুদ্র অংশেরই বিকাশ মাত্র।
মন নিম্নতর কর্ম্মভূমিতে প্রবল কর্ম্মতরঙ্গ উত্থাপিত করিতে সক্ষম হইবার পূর্ব্বে তাহাকে তথ্যসমূহের—আবরণহীন তথ্যসমূহের (উহারা বিকটদৃশ্য ও বিভীষিকাপ্রদ হইলেও) নিকট পৌঁছিতে হইবে; সত্যকে—খাঁটী সত্যকে (যদিও উহার তীব্র স্পন্দনে হৃদয়ের প্রত্যেক তন্ত্রী ছিন্ন করিয়া ফেলিতে পারে) লাভ করিতে হইবে এবং নিঃস্বার্থ ও অকপট অভিসন্ধি (যদিও উহা লাভ করিতে একটীর পর আর একটী করিয়া প্রত্যেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাটিয়া ফেলিতে হয়) উপার্জ্জন করিতে হইবে। সূক্ষ্ম বস্তু কালচক্রে প্রবাহিত হইতে হইতে ব্যক্তভাব ধারণ করিবার জন্য উহার চতুর্দ্দিকে স্থূলবস্তুসমূহ একত্রিত করিতে থাকে; অদৃশ্য দৃশ্যের ছাঁচ ধারণ করে; সম্ভব বাস্তবে, কারণ কার্য্যে ও চিন্তা পৈশিক কার্য্যে পরিণত হয়।
সহস্র সহস্র ঘটনায় যে কারণকে এখন কার্য্যরূপে পরিণত হইতে দিতেছে না, তাহা শীঘ্র বা বিলম্বে কার্য্যরূপে প্রকাশিত হইবে; এবং এখন যতই শক্তিহীন হউক না কেন, জড়জগতে শক্তিশালী চিন্তার গৌরবের দিন আসিবে। আর যে আদর্শে ইন্দ্রিয়সুখ প্রদানের সামর্থ্য হিসাবে সকল বস্তুর গুণাগুণ বিচার করে, সে আদর্শও ঠিক নহে।
যে প্রাণী যত নিম্নতর, সে ইন্দ্রিয়ে তত অধিক সুখ অনুভব করে, সে তত অধিক পরিমাণে ইন্দ্রিয়ের রাজ্যে বাস করে। সভ্যতা—যথার্থ সভ্যতা অর্থে বুঝা উচিত—বাহ্য সুখের পরিববর্ত্তে উচ্চতর রাজ্যের দৃশ্য দেখাইয়া ও তথাকার সুখ আস্বাদ করাইয়া পশুভাবাপন্ন মানবকে অতীন্দ্রিয় রাজ্যে লইয়া যাইবার শক্তি।
মানব প্রাণে প্রাণে ইহা জানে। সকল অবস্থায় সে ইহা স্পষ্টরূপে নিজেও না বুঝিতে পারে। ধ্যানময় জীবন সম্বন্ধে তাহার হয়ত ভিন্ন মত থাকিতে পারে। কিন্তু এ সকল সত্ত্বেও তাহার প্রাণের এই স্বাভাবিক ভাব লুপ্ত হয় না, উহা সদাই প্রকাশ হইবার চেষ্টা করে—তাহাতেই সে বাজীকর, বৈদ্য, ঐন্দ্রজালিক, পুরোহিত অথবা বিজ্ঞানের অধ্যাপককে সম্মান না করিয়া থাকিতে পারে না। মানব যে পরিমাণে ইন্দ্রিয়ের রাজ্য ছাড়াইয়া আসিয়া উচ্চ ভূমিতে বাস করিবার শক্তিলাভ করে, তাহার ফুসফুস যে পরিমাণে বিশুদ্ধ চিন্তাবায়ু গ্রহণ করিতে পারে এবং যতটা সময় সে এই উচ্চাবস্থায় থাকিয়া কাটাইতে পারে, তাহাতেই তাহার উন্নতির পরিমাণ হয়।
সংসারে ইহা দেখাও যায় এবং ইহার অবশ্যম্ভাবিতা সহজেই বুঝা যায় যে, উন্নত মানবগণ জীবন ধারণের জন্য যতটুকু আবশ্যক, ততটুকু ব্যতীত তথা-কথিত আরামের জন্য সময় ব্যয় করিতে সম্পূর্ণ অসম্মত, আর যতই তাঁহারা উন্নত হইতে থাকেন, ততই আবশ্যকীয় কার্য্যসমূহ পর্য্যন্ত করিতে তাঁহাদের উৎসাহ কমিয়া আসিতে থাকে।
এমন কি, মানবের ধারণা ও আদর্শ অনুসারে তাহার বিলাসের ধারণা পর্য্যন্ত পরিবর্ত্তিত হইতে থাকে। মানবের চেষ্টা হয়, সে যে চিন্তা-জগতে বিচরণ করিতেছে, তাহার বিলাসের বস্তুগুলি যথাসম্ভব তদনুযায়ী হয়—আর ইহাই শিল্প।
“যেমন এক অগ্নি জগতে প্রবিষ্ট হইয়া নানারূপে প্রকাশ পাইতেছে, অথচ যতটুকু ব্যক্ত হইয়াছে, তাহা হইতেও উহা অনেক বেশী”[১]—ঠিক কথা—অনন্তগুণে অধিক। এক কণা—সেই অনন্ত চিতের এক কণা—মাত্র আমাদের সুখবিধানের জন্য জড়ের রাজ্যে অবতরণ করিতে পারে—উহার অবশিষ্ট ভাগকে জড়ের ভিতর লইয়া আসিয়া আমাদের স্থূল কঠিন হস্তে এইরূপে নাড়াচাড়া করা যাইতে পারে না। সেই পরম
সূক্ষ্ম পদার্থ সর্ব্বদাই আমাদের দৃষ্টিক্ষেত্র হইতে পলাইতেছে এবং আমাদের উহাকে আমাদের স্তরে আনিবার চেষ্টায় উপহাস করিতেছে। এ ক্ষেত্রে মহম্মদকেই পর্ব্বতের নিকট যাইতে হইবে—‘না’ বলিবার উপায় নাই। মানব যদি সেই উচ্চতর রাজ্যের সৌন্দর্য্য-রাশি সম্ভোগ করিতে চায়, যদি সে উহার বিমল আলোকে অবগাহন করিতে চায়, যদি সে আপন প্রাণ সেই জগৎকারণ জগৎপ্রাণের সহিত একযোগে নৃত্য করিতেছে, দেখিতে চায়, তবে তাহাকে তথায় উঠিতে হইবে।
জ্ঞানই বিস্ময়-রাজ্যের দ্বার খুলিয়া দেয়, জ্ঞানই পশুকে দেবতা করে, এবং যে জ্ঞান আমাদিগকে সেই বস্তুর নিকট লইয়া যায়, যাঁহাকে জানিলে আর সকলই জানা হয় (যস্মিন্নু ভগবো বিজ্ঞাতে সর্ব্বমিদং বিজ্ঞাতং ভবতি[২])—যাহা সকল জ্ঞানের হৃদয় স্বরূপ, যাহার স্পন্দনে সমুদয় বিজ্ঞানের মৃত দেহে জীবন সঞ্চার হয়—সেই ধর্ম্মবিজ্ঞানই নিশ্চিত সর্বশ্রেষ্ঠ, কারণ, উহাই কেবল মানবকে সম্পূর্ণ ধ্যানময় জীবন যাপনে সমর্থ করে। ধন্য সেই দেশ, যাহা উহাকে “পরাবিদ্যা” নামে অভিহিত করিয়াছে!
কর্ম্মজীবনে তত্ত্বকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত প্রায় দেখিতে পাওয়া যায় না, কিন্তু তথাপি আদর্শটী কখনও নষ্ট হয় না। একদিকে, আমাদের কর্ত্তব্য এই যে,—আমরা আদর্শের দিকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপেই অগ্রসর হই বা অতি ধীরে ধীরে অননুভাব্য গতিতে উহার দিকে হামাগুড়ি দিয়াই অগ্রসর হই, আমরা যেন উহাকে কখনও বিস্মৃত না হই। আবার অপর দিকে দেখা যায়, যদিও আমরা আমাদের চক্ষে হস্ত দিয়া উহার জ্যোতিকে ঢাকিয়া রাখিবার যথাসাধ্য চেষ্টা করি, তথাপি উহা সর্ব্বদাই আমাদের সম্মুখে অস্পষ্টভাবে বিদ্যমান রহিয়াছে।
আদর্শই কর্ম্মজীবনের প্রাণ। আমরা দার্শনিক বিচারই করি, অথবা প্রাত্যহিক জীবনের কঠোর কর্ত্তব্যসমূহই সম্পন্ন করিয়া যাই, আদর্শ আমাদের সমগ্র জীবনটাকে আচ্ছন্ন করিয়া বর্ত্তমান রহিয়াছে। আদর্শের রশ্মি নানা সরল বা বক্র রেখায় প্রতিবিম্বিত ও পরাবর্ত্তিত (Refracted) হইয়া আমাদের জীবনগৃহের প্রতি ছিদ্রপথে আসিতেছে, আর জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে প্রত্যেক কার্য্যই ইহার আলোকে করিতে হয়, প্রত্যেক বস্তুই ইহার দ্বারা পরিবর্ত্তিত ও সুরূপ বা কুরূপ প্রাপ্ত ভাবে দেখিতে হয়। আমরা এক্ষণে যাহা, আদর্শই আমাদিগকে তাহা করিয়াছে, আর আদর্শই আমাদিগকে ভবিষ্যতে যাহা হইব, তাহা করিবে। আদর্শের শক্তি আমাদিগকে আচ্ছাদন করিয়া রাখিয়াছে, আর আমাদের সুখে দুঃখে, আমাদের বড় বা ছোট কার্য্যে এবং আমাদের ধর্ম্মাধর্ম্মে উহা অনুভূত হইয়া থাকে।
যদি কর্ম্মজীবনের উপর আদর্শের এইরূপ প্রভাব হয়, কর্ম্মজীবনও আদর্শ গঠনে তদ্রুপ কম শক্তিমান্ নহে। আদর্শের সত্য কর্ম্মজীবনেই প্রমাণিত। আদর্শের পরিণতি কর্ম্মজীবনের প্রত্যক্ষ অনুভবে। আদর্শ থাকিলেই প্রমাণিত হয় যে, কোন না কোনখানে, কোন না কোনরূপে উহা কর্ম্মজীবনেও পরিণত হইয়াছে। আদর্শ বৃহত্তর হইতে পারে, কিন্তু উহা কর্ম্মজীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশের বিস্তৃত ভাব মাত্র। আদর্শ অনেক স্থলেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কর্ম্মবিন্দুর সমষ্টি ও সাধারণ ভাব মাত্র।
কর্ম্মজীবনেই আদর্শের শক্তি প্রকাশ। কর্ম্মজীবনের মধ্য দিয়াই উহা আমাদের উপর কার্য্য করিতে পারে। কর্ম্মজীবনের মধ্য দিয়া আদর্শ আমাদের জীবনে গ্রহণোপযোগী আকারে পরিববর্ত্তিত হইয়া আমাদের ইন্দ্রিয়ানুভূতির ভূমিতে অবতরণ করে। কর্ম্মজীবনকে সোপান করিয়াই আমরা আদর্শে আরোহণ করি; উহারই উপর আমাদের আশা ভরসা সব রাখি; উহাই আমাদিগকে কার্য্যে উৎসাহ দেয়।
যাহাদের বাক্যতূলিকা আদর্শকে অতি সুন্দর বর্ণে অঙ্কিত করিতে পারে অথবা যাহারা সূক্ষ্মতম তত্ত্বসমূহ উদ্ভাবন করিতে পারে এরূপ লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি অপেক্ষা এক ব্যক্তি—যে নিজ জীবনে উহাকে প্রতিফলিত করিতে পারিয়াছে—অধিক শক্তিশালী।
ধর্ম্মের সহিত সংযুক্ত না হইলে এবং অল্প বিস্তর কৃতকার্য্যতার সহিত উহাকে কর্ম্মজীবনে পরিণত করিতে যত্নবান্ একদল অনুবর্ত্তী না পাইলে, মানবজাতির নিকট দর্শনশাস্ত্র-সমূহ নিরর্থক প্রতীয়মান হয়, জোর উহা কেবল মানসিক ব্যায়াম মাত্র বলিয়া গণ্য হইতে পারে। যে সকল মতে একটা কিছু প্রত্যক্ষ বস্তু পাইবার আশা দেয় না, যখন কতকগুলি লোকে সেইগুলিকে গ্রহণ করিয়া কতকটা কার্য্যে পরিণত করে, উহাদেরও স্থায়িত্বের জন্য জনসঙ্ঘের আবশ্যক করে, আর উহার অভাবে প্রত্যক্ষবাদাত্মক অনেক মত লোপ পাইয়াছে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই চিন্তাশীলতা বা মননশীলতার সহিত কর্ম্মের সামঞ্জস্য রাখিতে পারি না। কতকগুলি মহাত্মা পারেন। আমাদের মধ্যে অনেকেই বোধ হয়, গভীরভাবে মনন করিতে যাইলে কার্য্যশক্তি হারাইয়া ফেলি এবং অধিক কার্য্য করিতে গেলে আবার গভীর চিন্তাশক্তি হারাইয়া বসি। এই কারণেই অনেক মহামনস্বিগণকে, তাঁহারা যে সকল উচ্চ উচ্চ আদর্শ জীবনে উপলব্ধি করেন, সেই গুলি জগতে কার্য্যে পরিণত করিবার ভার কালের হস্তে ন্যস্ত করিয়া যাইতে হয়। যতদিন না অপেক্ষাকৃত ক্রিয়াশীল মস্তিষ্ক আসিয়া উহাদিগকে কার্য্যে পরিণত ও প্রচার করিতেছেন, ততদিন তাহাদের মননরাশিকে অপেক্ষা করিয়া থাকিতে হইবে। কিন্তু এই কথা লিখিতে লিখিতেই আমরা যেন দিব্যচক্ষে সেই পার্থসারথিকে দেখিতেছি, তিনি যেন উভয় বিরোধী সৈন্যদলের মধ্যে রথে দাঁড়াইয়া বামহস্তে দৃপ্ত অশ্বগণকে সংযত করিতেছেন—বর্ম্মপরিহিত যোদ্ধৃবেশ—প্রখর দৃষ্টি দ্বারা সমবেত বৃহৎ সৈন্যরাশিকে দর্শন করিতেছেন এবং যেন স্বাভাবিক জ্ঞানের দ্বারা উভয় দলের সৈন্যসজ্জার প্রত্যেক খুঁটিনাটি পর্য্যন্ত ওজন করিয়া দেখিতেছেন—আবার অপর দিকে, আমরা যেন, ভীতিপ্রাপ্ত অর্জ্জুনকে চমকিত করিয়া তাঁহার মুখ হইতে কর্ম্মের অত্যদ্ভুত রহস্য বাহির হইতেছে, শুনিতেছি—
“কর্ম্মণ্যকর্ম্ম যঃ পশ্যেদকর্ম্মণি চ কর্ম্ম যঃ৷
স বুদ্ধিমান্্ মনুষ্যেষু স যুক্তঃ কৃৎস্নকর্ম্মকৃৎ॥”
যিনি কর্ম্মের মধ্যে অকর্ম্ম অর্থাৎ বিশ্রাম বা শান্তি এবং অকর্ম্মে অর্থাৎ শান্তির ভিতর কর্ম্ম দেখেন, মনুষ্যগণের মধ্যে তিনিই বুদ্ধিমান, তিনিই যোগী, তিনিই সকল কর্ম্ম করিয়াছেন।
ইহাই পূর্ণ আদর্শ। কিন্তু খুব কম লোকে এই আদর্শে পঁহুছিয়া থাকে। সুতরাং আমাদিগকে যেমনটী আছে, তেমনটীই লইতে হইবে এবং বিভিন্ন ব্যক্তিতে প্রকাশিত মানবের বিভিন্ন প্রকারের চরিত্রবিকাশগুলিকে লইয়া একত্র গ্রথিত করিয়াই সস্তুষ্ট হইতে হইবে।
ধর্ম্মাবলম্বীদের ভিতর আমরা তীব্র চিন্তাশীল (জ্ঞানযোগী), অপরের সাহায্যের জন্য প্রবল কর্ম্মানুষ্ঠানকারী (কর্ম্মযোগী), সাহসের সহিত আত্মসাক্ষাৎকারে অগ্রসর (রাজযোগী) এবং শান্ত ও বিনয়ী ব্যক্তি (ভক্তিযোগী) দেখিতে পাই।