পঞ্চক মালা/শিশুর মা
“তিনি” আমায় বলেন, আমি সুধাময়ী রাণী;
প্রাণে আমার সুধা ছিল, সত্য বলে’ মানি।
ঢেউ খেলিয়ে যতটুকু লাগে ঠোঁটে, চোখে,—
সেই টুকুত “তিনি” পান্ করেন ঢোকে ঢোকে।
প্রাণের বাসা-ঘরে সুধা ছিল জমাট্-করা
সেই সুধাতে মোদের জাদুর অঙ্গ খানি গড়া।
আমি যবে বাহু-পাশে বেঁধে ফেলি “তাঁয়,”
অতি ঘন স্বপ্ন নাকি জড়ায় তাঁহার গায়।
“তাঁরে” যখন বাঁধি, আমার বুকে মোহ কাঁপে
বুঝেছি,—“সে পরাণ ভরা স্বপনেরি চাপে।
প্রাণ-কোটরে শিশুর নীড়ে স্বপ্ন ছিল ভরা,
সেই স্বপনে মোদের বাছার অঙ্গখানি গড়া।
নয়কো মিছে, বলেন “তিনি” আমায় বেসে ভাল,
আমি নাকি চাঁদের মত আঁধার ঘরের আলো।
এই কপোলের কূলে কূলে পুলক্ যখন জাগে,
সত্য দেখি, আলোর ছিটে তাঁর কপোলে লাগে।
বিজন প্রাণের মাঝে আমার ছিল আলোর ঝরা,—
সেই আলোকে মোদের চাঁদের অঙ্গ খানি গড়া।
মানি বটে,—ফেলে দিতে শিশুর মুখের মাটি,
চোদ্দ ভুবন নন্দরাণী দেখেছিল খাঁটি;
শিশু যখন হাসে,—তাহার দুধে দাঁতের কোলে
লক্ষ্য করি, শোভাভরে লক্ষ ভুবন দোলে।
সারা বিশ্বের কচি শোভা ছিল জড় করা,—
সেই শোভাতে মোদের শিশুর অঙ্গখানি গড়া।