পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)/১০০

১০০

(শ্রীসন্তোষ কুমার বসুকে লিখিত)

এই পত্রখানি সেন্সর কর্ত্তৃক
কেয়ার অব ডি আই জি,
পরীক্ষা করিয়া ছাড়া হইয়াছে
আই বি, সি আই ডি
 ২৬-৪-২৬
১৩, এলিসিয়াম রো
ডি আই জি,
আই বি, সি আই ডি (বাঙ্গলা)
প্রিয়বরেষু—
মান্দালয় জেল

 শ্রীযুক্ত বসু,

 আপনার পত্র পাইয়া খুব আনন্দিত হইয়াছি। রাস্তার আলো ইত্যাদি বিষয়ে আপনি যাহা লিখিয়াছেন উহা পড়িয়া স্বস্তি বােধ না করিয়া পারি নাই। আমি আনন্দিত হইয়াছি বিশেষ করিয়া আরও এই কারণে যে, আপনি বিষয়টি P. U. Committee-র নিকট পেশ করিতে যাইতেছেন এবং কোনও সন্দেহ নাই যে, উহা আপনার সতর্ক মনােযােগ আকৃষ্ট করিবে। আশা করি রাস্তার আলাে (গ্যাসই হউক আর বিদ্যুৎই হউক) পৌরসভার অধীনে আনার বিষয়টি কর্পোরেশন সহজে ছাড়িবে না যদি না ইহার বিরুদ্ধে জোরালাে কোনও যুক্তি উপস্থাপিত হয়।[] যদি প্রয়ােজন হয়, গেজেটের পাতায় জনমত আহ্বান করিবেন; সুযোগ পাওয়া গেলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করিতে হইবে। আর দুর্ভাগ্যক্রমে যদি এ কাজের দায়িত্ব কোনও বেসরকারী কোম্পানীর হাতে ছাড়িয়া দিতে হয় তাহা হইলে শুধু ইংলণ্ডেই নয়, অন্যান্য পাশ্চাত্ত্য দেশেও টেণ্ডারের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া স্থির হইবে আশা করি। ইহা সময়সাপেক্ষ আর সেইজন্যই যত শীঘ্র সম্ভব একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া বাঞ্ছনীয়। পৌরসভার অধীনে আনার প্রস্তাব আলোচনার কালে উপজাত জিনিসগুলিকে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে কাজে লাগাইবার সম্ভাবনার বিষয়টি দৃষ্টি এড়াইয়া যাওয়া উচিত নয়।

 নূতন সব রাস্তায়—বিশেষতঃ যে সব অঞ্চল কর্পোরেশনের অধীনে আসিয়াছে সেগুলিতে বৈদ্যুতীকরণের নীতি আমি আন্তরিকভাবে অনুমোদন করি। জানি না C. E. S. Corporation-এর নিকট হইতে বিদ্যুৎ ক্রয় করিয়া Central Office, Market ইত্যাদিতে আলোর ব্যবস্থা করিলে আমাদের বিশেষ কোনও সুবিধা হইবে কিনা। যতক্ষণ না খরচ কমানো যায় বা বৃহত্তর কোনও সুবিধা লাভ হয় ততক্ষণ বিভাগীয় কাজে উহা ব্যবহার করা সঙ্গত নয়; উহার দ্বারা লাইটিং সুপারিণ্টেণ্ডেণ্টের বেতন বৃদ্ধির দাবীকেই জোরদার করা হইবে।

 রাস্তার কুকুর মারিবার জন্য lethal chamber scheme বাস্তবে রূপায়িত হইয়াছে বলিয়া মনে হয় না। বিষয়টি এখন কি অবস্থায় রহিয়াছে?

 আশা করি আপনি ঠাণ্ডাঘর পরিকল্পনাটি সহজে ত্যাগ করিবেন না। যদি দরকার মনে করেন—মাছ, মাংস ও ফল ব্যবসায়ীদের সহিত পরামর্শ করিতে পারেন—যন্ত্রটি বসিলে তাঁহারা লাভবান হইবেন কিনা। যদি তাঁহারা লাভবান হন তাহা হইলে বর্দ্ধিত ব্যয় মিটাইতে উহা ব্যবহারের জন্য ভাড়া খাটাইতে পারি।

 জানি না আমাদের Market office[] সারা মাসে যে সব খাদ্য দরকার হয় উহার গড় মূল্যহার তৈরী করিয়াছেন কিনা। আমার মনে হয়, মাসিক খরচের গড়হার তৈরী করিয়া পূর্ববর্ত্তী বা পরবর্ত্তী বৎসরের সেই সেই মাসের সহিত তুলনামূলক আলােচনা করিয়া দেখিতে হইবে। উহার দ্বারা এক নজরেই বুঝা সম্ভব হইবে, মূল্য বাড়িতেছে কি কমিতেছে। এই গড়তালিকা P. U. ও Markets Comm.-র নিকটও পেশ করা যাইতে পারে এবং গেজেটেও প্রকাশ করা চলিবে। বছরের শেষে বাৎসরিক গড়মূল্যও তৈরী করা সম্ভব হইবে। এই মূল্যহার কর্পোরেশনের সমস্ত বাজারে চালু করা উচত এবং Market Controller উহা হইতে সারা কলিকাতার জন্য সর্ব্বনিম্ন মূল্যতালিকা স্থির করিতে পারিলে ভাল হয়। Market Controller-এর কর্ত্তব্য এই গড়হার মনোেযােগ সহকারে পরীক্ষা করিয়া দেখা; এবং বিভিন্ন বাজারে দরের কেন তারতম্য হয় ও উহা রােধের উপায় কি—তাহা খুঁজিয়া বাহির করা। জানি না Market Controller খাদ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি বা দ্রব্যমূল্য হ্রাসের জন্য এ পর্য্যন্ত কোনও ব্যবস্থা অবলম্বন করিয়াছেন কিনা। এ ব্যাপারে প্রথম করণীয় হইবে প্রকৃত মূল্য জানা ও ব্যবসায়ীরা যাহাতে অধিক মুনাফা না করিতে পারেন সেজন্য যতদূর সম্ভব চেষ্টা করা। সর্ব্বাপেক্ষা সহজ রাস্তা হইল, যে যে অঞ্চলে যে সব জিনিসের চাহিদা খুব বেশী সেই সব অঞ্চলের বাজারে বাজারে খাদ্যদ্রব্যের জোগান বৃদ্ধি করা; তাহা হইলে দ্রব্যমূল্য হ্রাস পাইবে। এই জোগান ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে করা যাইতে পারে অথবা কর্পোরেশনের পক্ষেও উহার দায়িত্ব লওয়া সম্ভব—যদি না আইনগত কোনও বাধা থাকে।

 ইচ্ছা থাকিলেও কলিকাতার জন্য কি একটি আদর্শ Central Market তৈরী করা সম্ভব নয়, যেখানে সব রকমের জিনিস[] পাওয়া যাইবে। মাংস ও ফলের জন্য হগ মার্কেট Central Market হইতে পারে। মাছের জন্য—যাহা এখানকার লোকের প্রধান খাদ্য—কলেজ স্ট্রীট মার্কেটকে বাছিয়া লওয়া যাইতে পারে। বৈঠকখানা বাজার দুধের পক্ষে সর্ব্বাপেক্ষা ভাল Central Market হইতে পারে। এভাবেই কলিকাতার বাজারগুলি[] গড়িয়া উঠা উচিত। যাহা হউক, কলিকাতার বাজারগুলি গড়িয়া তোলার ব্যাপারে কোনও সুনির্দ্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করা হয় না বলিয়াই আমার আশঙ্কা হইতেছে। যেরূপ বোধ হয় তাহাতে আমরা এখনও পর্য্যন্ত অন্ধকারেই হাত্‌ড়াইয়া মরিতেছি।

 Education Officer-কে কিরূপ মনে হইতেছে? বিভাগীয় কাজকর্ম্ম ছাড়া তাঁহাকে আরও চারিটি জিনিস করিতে হইবে:—(১) বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্ত্তনের দরুন তাঁহার বিভাগের খরচের পরিমাণ এবং এই বাধ্যতামূলক পরিকল্পনা ইত্যাদিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কত সে সম্বন্ধে বিস্তারিত বিবরণ তৈরী করিতে হইবে। (২) কিণ্ডারগার্টেন প্রথা ও শিক্ষার সমস্যা, বিশেষতঃ শিশুদের মনস্তত্ত্বের সহিত তাঁহাকে বিশেষভাবে পরিচিত হইতে হইবে। (৩) বিভিন্ন শ্রেণীর শিশুদের জন্য আদর্শ পাঠ্যপুস্তক তৈরী করিয়া উপযুক্ত লোকের দ্বারা উহা লিখাইয়া লইতে হইবে। (৪) শিক্ষকদের জন্য একটি Training School প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে। যেহেতু কাজ অনেক বাড়িয়া যাইবে সেই হেতু Education Officer-এর বেতন যতদিন না অন্যান্য বিভাগের প্রধানদের সমান হয় ততদিন বর্দ্ধিত হারে দিতে হইবে। শিক্ষা বিভাগকে একটি পূর্ণ বিভাগে পরিণত করিতে অবশ্য কয়েক বৎসর সময় লাগিবে কিন্তু উহাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। কলিকাতার অল্পবয়স্ক গরীব ছেলেমেয়েদের শিক্ষা দানের দায়িত্ব যে বিভাগের উপর, গুরুত্বের বিচারে উহা অন্য কোনও বিভাগ হইতে কোনও মতেই কম নয়।

 কর্পোরেশনের ব্যাঙ্ক সম্বন্ধে আমার মনে হয়, আমাদের এখনও আরও কিছুদিন উহা এড়াইয়া যাইতে হইবে এবং এ ব্যাপারে আমি আপনাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত।

 ঝাড়ুদারদের স্টোর বিভাগ কিরূপ কাজকর্ম্ম চালাইয়া যাইতেছে? ঐ বিভাগের কোনও সংবাদই আমি পাইতেছি না।

 দুইটি বিষয়ে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিত কর্পোরেশনের যোগাযোগ রক্ষা করিয়া চলা উচিত বলিয়া মনে হয়। প্রথমটি হইতেছে কলিকাতার সমস্ত স্কুল কলেজের ছাত্রদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্বন্ধে। দ্বিতীয়টি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অনুশীলনের ব্যাপারে একটি শাখাবিভাগ খোলা বিষয়ে। ইউরোপ ও আমেরিকায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কত দূর অগ্রগতি সম্ভব হইয়াছে সে সম্বন্ধে সাধারণ লোকের কোনও ধারণাই নাই। বিশেষতঃ, আমেরিকা পৌরশাসনকে আলাদা একটি বিজ্ঞানরূপে স্বীকার করিয়া লইয়াছে এবং ইহার নীতি ও পদ্ধতি সম্বন্ধে রাশি রাশি বই সেখানে লেখা হইয়াছে। রাষ্ট্র বিজ্ঞানের পাঠ্যসূচীতে পৌরশাসনকে অন্তর্ভুক্ত করার মস্ত বড় একটা সুবিধা আছে। ইহা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটা বিশেষ দিক সম্বন্ধে ব্যবহারিক জ্ঞান দিতে পারিবে এবং পৌরসভার কাজ কিভাবে চলে ও উহার আর্থিক অবস্থা কিরূপ—সে সম্বন্ধে গভীর জ্ঞান অর্জ্জনে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাহায্য করিতে পারিব। এ সম্বন্ধে আপনি কাউন্সিলার রমাপ্রসাদবাবুর সহিত আলোচনা করিতে পারেন।

 স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে আমার মত এই যে, যদি বছরে একবার সম্ভব নাও হয় তাহা হইলে অন্ততঃ ২ অথবা ৩ বৎসর অন্তর একবার পরীক্ষা হওয়া বাঞ্ছনীয়। ইহার দ্বারা আমাদের স্পষ্ট ধারণা জন্মিবে যে, ভবিষ্যৎ ছাত্রসমাজের শারীরিক উন্নতি হইতেছে কি অবনতি ঘটিতেছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কর্পোরেশন ও স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ প্রচেষ্টায় একাজ সম্ভব হইতে পারে।

১৬-৪-২৬

 ২ মাসেরও বেশী হইয়া গিয়াছে এ পত্র সুরু করিয়াছিলাম কিন্তু ইহা অসমাপ্ত অবস্থায় পড়িয়া আছে। ইতিমধ্যে গঙ্গা ও ইরাবতীতে অনেক জল বহিয়া গিয়াছে। এবার পত্রখানা শেষ করিয়া ডাকে দিব।

 মেজদাদার পত্র হইতে জানিয়া দুঃখিত হইলাম যে, কলিকাতার কোনও কোনও অঞ্চলে ম্যালেরিয়া মহামারীর আকারে দেখা দিয়াছে।

 সহরে শিক্ষা সম্বন্ধীয় একটি সমীক্ষাকার্য্য চালাইবার প্রস্তাব কর্পোরেশন অনুমোদন করিয়াছে—এজন্য আমি আনন্দিত। গত বৎসরই ইহা করা উচিত ছিল তবে একেবারে না করা অপেক্ষা দেরীতে করাও অনেক ভাল।

 বিদ্যাধরীর বিষয়টি লইয়া আপনি যেভাবে লড়িয়াছেন উহা আমি গভীর আগ্রহের সহিত লক্ষ্য করিয়াছি। আশা করি আপনি বিস্মৃত হইবেন না যে, এ সমস্যা সমাধান করিবার পূর্ব্বে আপনাকে বিদেশ হইতে একজন যোগ্য নদী-বিশেষজ্ঞকে আনাইতে হইবে। এখন হইতেই কেন ইংলণ্ড, আমেরিকা ও অন্যান্য পাশ্চাত্ত্য দেশে বিজ্ঞাপন দিতেছেন না? একজন যোগ্য ইঞ্জিনীয়ার পাইতে হইলে কয়েক বৎসর না লাগিলেও অন্ততঃ কয়েক মাস সময় লাগবে।

 ইতিমধ্যে আমি মডেলের সাহায্যে বিদ্যাধরী সম্বন্ধে পরীক্ষার সম্ভাবনীয়তা বিষয়ে ডাঃ বেলীর সহিত পত্রালাপ করিব যাহাতে লবণ হ্রদ এলাকায় উহার ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্দ্ধারণ বা অনুমান করা সম্ভব হইতে পারে। ইউরোপে (দৃষ্টান্তস্বরূপ Mersey নদীর কথাই বলা যাইতে পারে বোধহয়) এরূপ পরীক্ষাকার্য্য চালান হইয়াছে এবং উহাতে ভাল ফল পাওয়া গিয়াছে। কর্পোরেশনকে মনে রাখিতে হইবে যে, প্রধান পয়ঃপ্রণালী সম্বন্ধে নূতন পরিকল্পনাটি চূড়ান্তভাবে গৃহীত হইবার পূর্ব্বে বিদ্যাধরীর ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্দ্ধারিত হওয়া প্রয়োজন। আমাদের অনুমান ভুল হইতে পারে কিন্তু ইহার উপরই প্রধান পয়ঃপ্রণালীর পরিকল্পনাটি গড়িয়া উঠিবে।

 Mr. Wilkinson কি পুনরায় ফিরিয়া আসিবেন, না কি তিনি একেবারেই দেশে চলিয়া যাইতেছেন? তিনি চলিয়া গেলে আমি দুঃখিত হইব।

 Motor Vehicles Dept.-এর নূতন সুপারিণ্টেণ্ডেণ্ট কিরূপ কাজকর্ম্ম চালাইতেছেন? ওয়াছার সময় হইতে অবস্থার কোনও উন্নতি হইয়াছে কি?

 ভাল কথা, কয়েক মাস পূর্ব্বে ৪নং ডিস্ট্রিক্ট গোখানায় জাব, ছোলা প্রভৃতি চুরির বিষয়ে একটি রিপোের্ট পাঠাইয়াছিলাম। E. G. P. Committee-র অনুরোধেই উহা পাঠানো হইয়াছিল। কমিটি আমার রিপোর্টটি বিবেচনা করিয়া দেখিয়াছেন কিনা অথবা উহা চাপিয়া রাখা হইয়াছে—এ সম্বন্ধে আপনি কিছু জানেন কি?

 Mr. Coats ফিরিয়া আসিয়াছেন কি?

 Roads Dept.-কে আগাগোড়া ঢালিয়া সাজাইতে হইবে বলিয়া আশঙ্কা হইতেছে। যদিও নীতিগতভাবে আমি কেন্দ্রীয়করণের পক্ষপাতী নই, তবু ইহা স্বীকার করিতে বাধ্য হইতেছি যে, আগামী কয়েক বৎসরের জন্য অন্ততঃ Roads Dept.-কে আলাদা একজন শিক্ষাপ্রাপ্ত Roads Engineer-এর অধীনে কেন্দ্রীভূত করিতেই হইবে। বর্ত্তমান ব্যবস্থার প্রশংসনীয় যােগ্যতার মান তৈরী করা সম্ভব নয়। ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনীয়ারগণ ও Mr. Coats এ প্রস্তাবের বিরােধিতা করিবেন জানি, কিন্তু কাজ না দেখাইয়া যে অর্থ আদায় করা হইতেছে নূতন পরিকল্পনায় উহা বন্ধ হওয়াই উচিত।

 অনুগ্রহপূর্ব্বক বসন্ত মহামারীর কথাও ভুলিবেন না। প্রতি বৎসরই একটা বিশেষ সময়ে উহার প্রাদুর্ভাবের কারণ অনুসন্ধান করিয়া দেখিতে হইবে।

 Retrenchment Officer-এর পূর্ণ বিবরণ এর মধ্যে পাইয়াছেন কি?

 আমাদের Accounts Dept. আশ্চর্য্য যােগ্যতার সঙ্গে কাজ করিয়া থাকে। একথা বলিতে আমি গর্ব্ব বােধ করিতেছি যে, কখনও কখনও তাঁহারা অত্যুৎসাহের পরিচয় দেন। আমি যখন কর্পোরেশনে ছিলাম তখন মাঝে মাঝেই আমাকে Chief Accountant-কে সামলাইতে হইয়াছে।

 পুনরায় দাঙ্গা হইয়াছে জানিয়া দুঃখিত হইলাম—আমাদের দুর্ভাগ্যের পাত্র পূর্ণ হইয়াছে। ভাবিয়া আশ্চর্য্য হই যে, জাতির অন্তরাত্মা কি চাহিতেছে। দাঙ্গার প্রকৃত কারণ ও যাহারা উহা ঘটাইয়াছে সে সম্বন্ধে জেল হইতে বাহির হইবার পূর্ব্বে কিছু জানিতে পারিব বলিয়া আশা হয় না। ভাবিয়াছিলাম,সাম্প্রদায়িক অশান্তি হইতে বাঙ্গলা দেশ মুক্তি পাইয়াছে কিন্তু উহা হইবার নয়।

 আশা করি আপনারা সকলে ভাল আছেন। আজ এখানেই শেষ করিতে হইতেছে। শুভেচ্ছা জানিবেন। ইতি—

আপনার সহােদরপ্রতিম
সুভাষচন্দ্র বসু
শ্রীযুক্ত এস, কে, বসু

১০এ, গােপাল ঘোষ লেন

খিদিরপুর, কলিকাতা।

(ইংরাজী হইতে অনূদিত)

  1. দরকার হইলে লাইটিং সুপারিণ্টেণ্ডেণ্টের হিসাব দেখিতে পারেন। তাঁহার উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করা হয় নাই; আলাদা বিশেষজ্ঞের দ্বারা উহা পরীক্ষা করিয়া দেখা হইয়াছে। স, চ, ব।
  2. ভারতীয় অর্থনীতি সম্বন্ধে তথ্যানুসন্ধানের বিষয়টি লইয়া শ্রীযুক্ত এস, সি, রায় (ডেঃ এক্স অফিসার)-এর সঙ্গে আলােচনা করাই সমীচীন হইবে। এই তথ্যগুলি পরে কাজে লাগিবে। কর্পোরেশনের কর্ম্মীদের বেতন বৃদ্ধির দাবীর যাথার্থ্যও উহার দ্বারা বিচার করা যাইবে। বিলাসদ্রব্যের কথা বাদ দিয়া, আমার মনে হয়, নিত্যব্যবহার্য্য দ্রব্যের মূল্যতালিকা তৈরী করাই যথেষ্ট হইবে।— স, চ, ব।
  3. জিনিস বলিতে আমি এখানে খাদ্যের কথাই শুধু বুঝাইতে চাহিতেছি, অন্য কোনও জিনিস নয়।
  4. কোনও বাজার চালু থাকার অনুমতি দানের পূর্ব্বে উহা কিরূপ হওয়া উচিত সে সম্বন্ধে একটা স্পষ্ট চিত্র আমাদের মনশ্চক্ষে থাকা উচিত। উহা না থাকিলে বাজার লক্ষ্যহীন, এলোমেলোভাবে গড়িয়া উঠিতে বাধ্য এবং উহার কাজ যখন শেষ হইবে তখন দেখা যাইবে কোনও সুব্যবস্থাই সেখানে নাই। কলেজ স্ট্রীট মার্কেটের ক্ষেত্রে উহা ঘটিবে বলিয়া আশঙ্কা হইতেছে।