পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)/১৪৩
পণ্ডিত মতিলাল নেহরুকে লিখিত
শ্রদ্ধেয় পণ্ডিতজী,
কাল সকালে কংগ্রেসের সভাপতি পদ সংক্রান্ত একটি তার আপনার নিকট পাঠাইয়াছিলাম এবং উহার জবাবও কাল রাত্রিতে পাইয়াছি।
আপনি যদি কোনও কারণে কংগ্রেসের সভাপতি পদ গ্রহণে অসম্মত হন তাহা হইলে বাঙ্গলা দেশ যে কতখানি নিরাশ হইবে তাহা আপনাকে বুঝাইয়া বলিতে পারিব না। যে সমস্ত কারণে আপনার নাম এই প্রদেশে সর্ব্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা যাইতে পারে তাহার মধ্যে স্বরাজ্য পার্টির কাজ ও নীতির সহিত আপনার ঘনিষ্ঠ সংযােগ অন্যতম। আমি অন্য প্রদেশের কথা বলিতে চাহি না, কিন্তু চূড়ান্ত মননানয়নের পর সারা ভারতবর্ষ যে বিনা বিরোধিতায় আপনার নির্ব্বাচনকে সমর্থন করিবে সে সম্বন্ধে আমি একরূপ নিশ্চিত।
বর্ত্তমানে পরিস্থিতি যেরূপ দাঁড়াইয়াছে এবং আমাদের দেশের ইতিহাসে ১৯২৯ সাল যেরূপ গুরুত্বপূর্ণ তাহাতে আর কেহ সময়োচিত নেতৃত্ব দিতে পারিবেন বলিয়া মনে হয় না। আরও যাঁহাদের নাম প্রস্তাব করা হইয়াছে বলিয়া শুনিয়াছি, অন্য সময় হইলে তাঁহাদের কথাও বিবেচনা করা চলিত; কিন্তু যখন বিভিন্ন দলের মধ্যে ঐক্য ও একটা সর্ব্বসম্মত গঠনতন্ত্র রচনার জন্য ঐকান্তিক চেষ্টা চলিতেছে তখন তাঁহাদের কাহাকেও সমর্থন করা চলে না। ইহা আমার অতিশয়োক্তি নয় যে, যদি আপনি কোনও কারণে সভাপতির পদ গ্রহণ না করেন, উহার প্রতিক্রিয়া এই প্রদেশের পক্ষে এত মারাত্মক হইবে যে কংগ্রেস অধিবেশেনের সাফল্যও তাহার ফলে গুরুতরভাবে ব্যাহত হইতে পারে। যখন একটা সঙ্কটজনক পরিস্থিতির ভিতর দিয়া আমাদের অগ্রসর হইতে হইতেছে, তখন আমরা কি আশা করিতে পারি না যে, জাতির আহ্বানে আপনি সাড়া দিবেন?
গভীর শ্রদ্ধা জানিবেন। ইতি—
সুভাষচন্দ্র বসু
পুনঃ—জেলা বোর্ডের নির্ব্বাচকদের সংখ্যা জানিতে চাহিয়া আপনি যে তার পাঠাইয়াছিলেন উহা পাইয়াছি। আমি উহা সংগ্রহ করিবার চেষ্টা করিতেছি, জানি না কতদূর কৃতকার্য্য হইতে পারিব। বিভিন্ন জেলার নির্ব্বাচকমণ্ডলীর তালিকা হইতে ঐ সংখ্যা সংগ্রহ করিয়া একত্র সন্নিবেশ করিতে যথেষ্ট সময় লাগিবে। সুভাষ।
(ইংরাজী হইতে অনূদিত)