পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)/৪২
স্নেহাস্পদেষু—
তোমার পত্র পাইলাম। অতুলবাবুর সঙ্গে দেখা করেছি—তিনি ভাল Seat এখনও খুঁজে পান নাই। নূতন mess, University করিতে পারে এরূপ আশা আছে। তার জন্য অপেক্ষা করা ভিন্ন উপায় দেখি না। অতুলবাবু যে সব সন্ধান পেয়েছেন সেগুলি মোটেই সুবিধাজনক নহে—দেখা যাক্ কি হয়। শম্ভু চাটার্জ্জি ষ্ট্রীটে যে মেস আছে—তাতে দ্বিতলে একটা Seat আছে— কিন্তু ভাল আলো-হাওয়া প্রবেশ করে না। সেজন্য সেটা নেওয়া যায় না।
আমি স্কটিশ চার্চ্চে 3rd year-এ প্রবেশ লাভ করেছি।
আমি তোমার পত্রের তাৎপর্য্য বুঝিলাম না। আমি গরীবের ঘরে জন্মাই নাই। একথা ঠিক— কিন্তু তার জন্য কি আমি দায়ী? তার জন্য কি প্রায়শ্চিত্ত আমাকে করিতে হইবে? আমরা যেরূপ সাংসারিক অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছি—সে অবস্থার full advantage নেওয়া ভিন্ন আমাদের অন্য কোন উপায় দেখি না। তবে যাহারা রীতিমত সন্ন্যাসী তাদের আলাদা কথা। আমি তাহা নই।
তারপর আমি ত নিজের কোন পরিবর্ত্তন দেখিতেছি না। বাহিরে কিছু পরিবর্ত্তন হয়ে থাকিতে পারে সেটা necessity-র দরুন কিন্তু ভিতরে ত কিছু হয় নাই। তবে যৌবনের উদ্দামভাব যে স্থির হয়ে আসছে। বয়সের সঙ্গে ২, অভিজ্ঞতার সঙ্গে ২, চিত্তটা ধৈর্য্য অবলম্বন করে। আমার বোধ হয় তাহাই হয়েছে। যৌবনে, যে সব ভাব—সব বাধা-বিঘ্ন চূর্ণ করে নিজেকে প্রকাশ করিতে চাহে— সে সব ভাবগুলি বয়সের সঙ্গে ২ জমাট বেঁধে যায়।
তবে একটা কথা—মানুষ যদি মনে করে যে আর একজনের ভিতরে ভাবের পরিবর্ত্তন হয়েছে—তাহা হইলে হাজারই explain করুক বা বোঝাক—সে কখনও Convinced হবে না যে তার ভাবের পরিবর্ত্তন হয় নাই। মানুষ যদি এরূপ স্থলে বেশী চেষ্টা করে নিজেকে explain করিতে তাহা হইলে লোকের বিপরীত Conviction-ই বদ্ধমূল হয়। যাক্—
যদি কেহ মনে করে যে আমার ভাবের পরিবর্ত্তন হয়েছে বা I am not what I was—তবে সেটা আমার পক্ষে বড় দুঃখের এবং দুর্ভাগ্যের কথা। তুমি ইহা মনে কহিবে ইহা আমি ভাবি নাই।
আমরা যেরূপ দিনকালে এবং যেরূপ জগতে বাস করিতেছি। তাহাতে Sentimentগুলি অবাধে না ঢালিয়া দিয়া পুরিয়া রাখিতে হইতেছে। The whole of nature is forcing us into this.
আসল কথা হচ্ছে—ব্যাধিটা তোমারই আর কাহারও নয়— সেটা হচ্ছে আমি যাহা বহু কাল হইতে বলিয়া আসিতেছি এবং যাহা সংশোধন করবারও অধিক চেষ্টা করিয়াছি—মানসিক বিকার। এটির যতদিন আরোগ্য না হচ্ছে—ততদিন জগৎটা—শুধু আমি কেন—বিকারগ্রস্ত বলিয়া বোধ হইবে।
তুমি কি Presy. College থেকে কোন উত্তর পেয়েছ?
সুভাষ