পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)/৪৯
হেমন্ত,
তোমার পত্র (২৭শে নভেম্বরের) কয়েকদিন হ’ল পাইলাম। এতদিন পত্র দাও নাই কেন?
* * *
আমার কেম্ব্রিজে আসার সংবাদ আমার পত্রেই এতদিনে পেয়েছ। এইখানেই পড়াশুনার সুবিধা দেখিলাম— সেইজন্য আসা স্থির করিলাম। স্থান পাওয়াটা সৌভাগ্যবশত ঘটিয়াছে—কতকটা আমার University result-এর জন্য—এবং সর্ব্বোপরি জনৈক বন্ধুর সাহায্যের জন্য।
* * *
প্রফুল্ল এখন কি করিবে? ভারতবর্ষে প্রবন্ধ প্রকাশিত হইলে আমাকে পাঠাইও।
প্রফুল্লদা এখন প্রেসিডেন্সী কলেজে কাজ করছেন না অন্যত্র বদলী হয়েছেন? সুরেশদার সঙ্গে যা কথা হয়েছিল সমস্ত লিখিও। উনি যে স্কুল করবেন বলেছেন তা চাকুরি হইতে রেহাই পাইলে ত। যুগলদা মাসখানেক পূর্ব্বে লিখেছিলেন যে শীঘ্র ছাড়ান পাবেন। কিন্তু সে শীঘ্রতার কোন লক্ষণ দেখছি না।
সুরেশদা ত আমাকে একরকম পরিত্যাগই করেছেন। আমি যদি চাকরিতে না প্রবেশ করি তাহা হইলে তাঁদের সঙ্গে পুনর্ম্মিলন হইতে পারে। আমি চাকরি করি বা না করি তাতে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্বন্ধ কি করে ঘুচিতে পারে তাহা আমি বুঝি না। এইরূপ দোকানদারী ভাব কি প্রকৃত ভাব? যাহা হউক—আমার ইচ্ছা কাহারও সঙ্গে বিবাদ করিব না—নিজের কর্ত্তব্য করে যাব—তাহাতে পাঁচজনে সঙ্গলাভ করিব খুবই ভাল—না করি কোন ক্ষতি নাই।
সুনীতিবাবুকে লণ্ডনে দেখিলাম।
বেণী বাবুর খবর কি? দেশের বিস্তৃত খবর লিখিও—এবং তোমার চিন্তারাশি কিছু ২ জানাই।
তোমার পাত্রের মধ্যে অন্তশ্চারিণী বেদনার করুণধ্বনি উপলব্ধি করিলাম। কেন এ বেদনা?
আমি ভালই আছি। প্রমথ, হেমেন্দু কি চারুর সঙ্গে দেখা হইলে পত্র দিতে বলিও। প্রিয়রঞ্জনের সঙ্গে দেখা হইলে বলিও তার পত্র পেয়েছি। আগামী মেলে উত্তর দিব। ইতি—
সুভাষ