পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)/৪৮
যাহাদের নিকট হইতে পত্র আশা করিতে পারি নাই, তাহারা পত্র দিয়াছে অথচ তোমার নিকট হইতে কোন পত্র পাইলাম না। যাহা হউক, আশা করি ভবিষ্যতে পত্র দিবে।
শেষ পত্রে তোমাকে লিখেছিলাম যে আমি Cambridge বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান পাইয়াছি এবং সেখানে আসিয়াছি। জনৈক বন্ধুর সাহায্যে কতকটা বি. এর result-এর দরুন এবং কতকটা I.D.F. Service-এর দরুন স্থান পাইতে সমর্থ হইয়াছি। থাকিবার স্থানের অভাব সত্ত্বেও সৌভাগ্যবশতঃ বাসস্থানও পাইয়াছি।
আমার মতলব আগামী বৎসর Civil Service পরীক্ষা দেওয়া এবং পাশ করি বা ফেল করি ১৯২১ সালের মে মাসে Moral Science Tripos-এর পরীক্ষা দেওয়া।
এখানকার degree আমাকে লইতে হইবেই, কারণ ভবিষ্যতে আমার বিশেষ কাজে লাগিবে।
এখানে ভারতবাসীদের একটা সমিতি আছে—নাম “Indian Majlis”. সাপ্তাহিক অধিবেশন হয় এবং মধ্যে মধ্যে বাহির হইতেও বক্তারা আসেন। Mrs. Sarojini Naidu একবার বক্তৃতা করিয়াছেন—“Kingdom of youth” সম্বন্ধে।—Mr. Andrews বক্তৃতা করেন Indentured Labour System সম্বন্ধে এবং Fiji Island বাসী ভারতীয়দের কি কি অভাব বর্ত্তমান আছে। আমার আসিবার পূর্ব্বে তিলক মহারাজ এখানে আসিয়াছিলেন। ইণ্ডিয়া অফিস থেকে চেষ্টা করা হয়েছিল বাধা দিতে, কিন্তু পারে নাই। এখানকার ভারতবাসীদের সুরটা বড় চড়া এবং তাঁহার নরম বক্তৃতা শুনিয়া সকলে প্রতিবাদ করিয়াছিল।
গত দুই দিন বরফ পড়িতে আরম্ভ করিয়াছিল। ইচ্ছায় হউক বা অনিচ্ছায় হউক এখানকার জলবায়ু, লোকদের উদ্যমশীল করে তোলে। এখানকার activity দেখে প্রাণে বড় আনন্দ হয়। প্রত্যেক লোকের ভিতরে সময়জ্ঞানটা বড় আছে এবং সব কাজে method আছে। আমার সব চেয়ে বেশী সুখ হয় যখন দেখি যে সাদা চামড়ায় আমার সেবা করিতেছে এবং জুতা সাফ করিতেছে। এখানকার ছাত্রদের একটা status আছে এবং Professorদের ব্যবহার অন্য রকম। মানুষের প্রতি মানুষের ব্যবহার এখানে দেখতে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে অনেক দোষ আছে—কিন্তু অনেক বিষয়ে এদের গুণাবলী থেকে মাথা নত হয়। তুমি কেমন আছ? পরীক্ষার ফল কি হইল? অতঃপর কি করিবে জানিবার জন্য চিন্তিত আছি। বিস্তৃত পত্র দিও। সুনীতিবাবু লণ্ডনে research করিতেছেন। আমি ভাল আছি। যুগলদা France এ আছেন।