পর্ব্বতবাসিনী/তৃতীয় পরিচ্ছেদ
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
সেতারা অতি ক্ষুদ্র গ্রাম। সেই গ্রামে রঘুজীর নিবাস। তাহার পিতা অত্যন্ত দরিদ্র। রঘুজী যৌবনকালেই গ্রাম ত্যাগ করিয়া দস্যুবৃত্তি অবলম্বন করিয়াছিল। পুত্রের দুর্বৃত্ত চরিত্র দেখিয়া তাহার পিতা অকালেই কালমুখে পতিত হইলেন। রঘুজীর শৈশবাবস্থায়ই তাহার মাতার মৃত্যু হইয়াছিল। গ্রামে রঘুজীর কোন আত্মীয় স্বজন ছিল না।
দস্যু হইবার পূর্ব্বে রঘুজী বিবাহ করিয়াছিল। সে বিবাহের একটী মাত্র ফল,—তারা।
অনেক দিন পরে রঘুজী অকস্মাৎ গ্রামে ফিরিয়া আসিল। বসতিবাটী ভগ্ন, পতিতাবস্থায় প্রায় সমভূমি হইয়া গিয়াছে। রঘুজী পুনর্ব্বার গৃহ নির্ম্মিত করাইয়া, জমি ক্রয় করিয়া, লোক জন নিযুক্ত করিয়া বাস করিতে লাগিল। লোকে দেখিল, গ্রামের মধ্যে রঘুজীই ধনবান। গ্রামবাসীরা গরিব, তাহারা সর্ব্বদাই ধারকর্জ্জ করে। রঘুজী সুদে টাকা খাটাইতে আরম্ভ করিল। কিছুদিন পরে রঘুজী তারাকে তাহার মাতুলালয় হইতে লইয়া আসিল। পূর্ব্বে তারা পিতার নিকটেই থাকিত, মায়ী ও মহাদেব তাহাকে লালনপালন করিত। কিছুদিন মাতুলালয়ে ছিল। তাহার সঙ্গে মায়ী আর মহাদেব সেতারায় আসিল। ইতিপূর্ব্বে তারা আর কখন সেতারার আসে নাই।