পাতা:ঋষি রবীন্দ্রনাথ - অমলেন্দু দাশগুপ্ত (১৯৫৪).pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

( ১১ )

 রবীন্দ্রনাথের দৃষ্ট ‘দীপ্তিময়ী শিখা’ই আত্মা বা আত্মজ্যোতি, মহাভারতের সাহায্যে তাহাই এখন আমরা প্রমাণের প্রচেষ্টা করিতেছি।

 মহাভারতে মহর্ষি যাজ্ঞবল্ক্য রাজর্ষি জনককে যে উপদেশ দিয়াছেন, তাহার একস্থানে মহর্ষি বলিয়াছেন—“যোগে উত্তমরূপে নৈপুণ্য জন্মিলে (অর্থাৎ সমাধিসিদ্ধ হইলে) গাঢ়তর অন্ধকারে অবস্থিত জ্বলনতুল্য অব্যয় ব্রহ্মের প্রত্যক্ষ হয়॥”

 মহর্ষি যাজ্ঞবল্ক্য এখানে স্পষ্টভাবেই বলিয়াছেন যে, ব্রহ্ম- ‘জ্বলনতুল্য’-রূপে যোগদৃষ্টিতে বা ধ্যানচক্ষুতে দৃষ্ট হইয়া থাকেন। রবীন্দ্রনাথও তাহাই বলিয়াছেন—অনির্বাণ দীপ্তিময়ী শিখারূপীকে তিনি দেখিয়াছেন।

 মহর্ষি ভৃগু ভরদ্বজাকে যে ব্রহ্মোপদেশ দিয়াছেন, তাহার কিছু বিবরণ মহাভারতে রক্ষিত রহিয়াছে। তাহার একস্থানে মহর্ষি ভৃগু বলিয়াছেন—“শরীরের মধ্যে অগ্নির ন্যায় প্রকাশমান যে মানসিক জ্যোতি বিদ্যমান, তাহাকেই জীবাত্মা বলা যায়॥”

 রবীন্দ্রনাথও দেহমধ্যে অগ্নির ন্যায় প্রকাশমান অনির্বাণ জ্যোতিশিখাই দেখিয়াছেন। মহর্ষি ভৃগুর অভিমতে ইহাকেই আত্মদর্শন বলিয়া আমরা নিশ্চয় গ্রহণ করিতে পারি।

 ভগবান বেদব্যাস স্বপুত্র শুকদেবকে যে দীর্ঘ উপদেশ দিয়াছিলেন, তাহার বিস্তৃত বিবরণ তিনি মহাভারতে লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। তাহার একস্থানে তিনি শুকদেবকে এই কয়টি কথা বলিয়াছেন—“মন ইন্দ্রিয়াদির সহিত সমবেত হইয়া বুদ্ধিতে অবস্থানপূর্বক প্রসন্ন হইলেই যোগী সেই তেজঃম্বরূপ সর্বব্যাপী