ওড্র, কলিঙ্গ ও কোশল কামরূপ-রাজগণের হস্তগত হইয়াছিল। এই সময়ে কান্যকুব্জরাজ যশোবর্ম্মা সমগ্র উত্তরাপথ অধিকার করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন। তাঁহার সভাকবি বাকপতিরাজ বিরচিত “গউডবহো” নামক প্রাকৃতভাষায় রচিত কাব্যে যশোবর্ম্মার দিগ্বিজয়-কাহিনী বর্ণিত হইয়াছে[১]। “গউডবহো” কাব্যে দেখিতে পাওয়া যায় যে, যশোবর্ম্মা যখন বিন্ধ্যপর্ব্বত অতিক্রম করিতেছিলেন, তখন তাঁহার ভয়ে মগধনাথ যুদ্ধক্ষেত্র হইতে পলায়ন করিয়াছিলেন, কিন্তু মগধনাথের সামন্তগণ পলায়ন করিতে সম্মত হন নাই। তাঁহারা যশোবর্ম্মার সহিত যুদ্ধ করিতে প্রস্তুত হইয়াছিলেন। যুদ্ধান্তে যশোবর্ম্মা পলায়নপর মগধনাথকে নিহত করিয়া সমুদ্রতীরস্থিত বঙ্গরাজ্যে গমন করিয়াছিলেন। অসংখ্য হস্তীর অধিপতি বঙ্গেশ্বর পরাজিত হইয়া যশোবর্ম্মার অধীনতা স্বীকার করিয়াছিলেন। যশোবর্ম্মা যে মগধেশ্বর ও বঙ্গেশ্বরকে পরাজিত করিয়াছিলেন “গউডবহো” কাব্যে তাঁহাদিগের নাম পাওয়া যায় না। যশোবর্ম্মাদেব কর্ত্তৃক পরাজিত মগধনাথ ও গুপ্তবংশীয় রাজা দ্বিতীয় জীবিতগুপ্ত একই ব্যক্তি[২]। এই সময়ে বঙ্গদেশ যে কোন্ রাজার অধিকারভুক্ত ছিল, তাহা অদ্যাপি নির্ণীত হয় নাই। যশোবর্ম্মা নামধারী কান্যকুব্জের যে একজন প্রবল পরাক্রান্ত রাজা ছিলেন, সে বিষয়ে কোনই সন্দেহ নাই। ৭৩১ খৃষ্টাব্দে যশোবর্ম্মা চীন-সম্রাটের নিকট এক দূত প্রেরণ করিয়াছিলেন, চীন দেশের ইতিহাসে ইহা উল্লিখিত হইয়াছে। ফরাসী দেশীয় পণ্ডিত শাবান (Edouard Chavannes) ও লেভি
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
১২৯