—তখন বিশ্বাস না হইয়া পারে না যে, বিবেকানন্দ-রূপ অশ্বত্থবৃক্ষের বীজ তাঁহার গুরু শ্রীরামকৃষ্ণের চেতনা-গহনেই নিহিত ছিল। ভাবনা চিন্তা, আবেগ ও কল্পনা, ভূয়োদর্শন ও মনীষা, এই সকলের সাহায্যে একজনের জীবনে যে বাণীকে আমরা বীরবীর্য্য ও কর্ম্মশক্তিতে মূর্ত্ত হইতে দেখি, সেই বাণীর এক অলৌকিক অপৌরুষেয় অভিব্যক্তি আর একজনের মধ্যে পূর্ব্বেই হইয়াছিল। বিবেকানন্দের পৌরুষ, প্রতিভা ও মহাপ্রাণতার যে প্রত্যক্ষ পরিচয়ে আমরা মুগ্ধ হই, তাহার মূল উৎস যিনি, তিনি পাণ্ডিত্য, প্রতিভা বা মনীষার কোন পরিচয় দেন নাই; অথবা, আমরা যাহাকে কর্ম্মানুষ্ঠান বলি তাহাও করেন নাই। তাই আধুনিক শিক্ষিত সমাজ গুরু ও শিষ্যের মধ্যে একটি ভেদরেখা টানিবেই। কিন্তু সেই ভেদ রক্ষা করা সম্ভব কি না, আমি এ প্রবন্ধে তাহারই কিঞ্চিৎ আলোচনা করিলাম। উভয়ের প্রকৃতিগত পার্থক্য কেহই অস্বীকার করিবেন না, কিন্তু এই পার্থক্য সত্ত্বেও ‘শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ’ একটি অখণ্ড অভিন্ন তত্ত্ব হইয়া আছে। মানুষের দৃষ্টি—সে যত বড় মানুষই হউক—পূর্ণ নহে; জ্ঞান বা ভক্তি দুইয়ের কোনটাই শেষ পর্য্যন্ত মানুষের স্বাভাবিক হৃদয়-দৌর্ব্বল্য হইতে মুক্ত নহে। তাই ভগিনী নিবেদিতার মত মহীয়সী মহিলাও তাঁহার নিজের গুরুর জন্য একটু পৃথক্ গৌরব দাবি করিয়াছেন—
I see in him the heir to the spiritual discoveries and religious struggles of innumerable teachers and saints in the past of India and the world, and at the same time the pioneer and prophet of a new and future order of development.
কে বলিবে এ গৌরব তাঁহার গুরু বিবেকানন্দের প্রাপ্য নয়? কিন্তু