পূরবী/পথিক/ইটালিয়া
< পূরবী
(পৃ. ২২৩-২২৪)
ইটালিয়া
কহিলাম, “ওগো রাণী,
কত কবি এলো চরণে তোমার উপহার দিলে আনি।
এসেছি শুনিয়া তাই,
ঊষার দুয়ারে পাখীর মতন গান গেয়ে চ’লে যাই।”
শুনিয়া দাঁড়ালে তব বাতায়ন-পরে
ঘোম্টা আড়ালে কহিলে করুণ-স্বরে
“এখন শীতের দিন
কুয়াশায় ঢাকা আকাশ আমার কানন কুসুম-হীন॥”
কহিলাম “ওগো রাণী,
সাগর-পারের নিকুঞ্জ হ’তে এনেছি বাঁশরীখানি।
উতারো ঘোম্টা তব,
বারেক তোমার কালো নয়নের আলোখানি দেখে লবো।
কহিলে “আমার হয়নি রঙীন সাজ,
হে অধীর কবি, ফিরে যাও তুমি আজ;
মধুর ফাগুন মাসে
কুসুম আসনে বসিব যখন ডেকে লবো মোর পাশে”॥
কহিলাম “ওগো রাণী,
সফল হ’য়েছে যাত্রা আমার শুনেছি আশার বাণী।
বসন্ত সমীরণে
তব আহ্বান-মন্ত্র ফুটিবে কুসুমে আমার বনে।
মধুপ-মুখর গন্ধ-মাতাল দিনে
ঐ জানালার পথখানি লবো চিনে,
আসিবে সে সুসময়।
আজিকে বিদায় নেবার বেলায় গাহিব তোমার জয়॥”
মিলান,
২৪ জানুয়ারী ১৯২৫।