পূরবী/পথিক/প্রকাশ
প্রকাশ
খুঁজ্তে যখন এলাম সেদিন কোথায় তোমার গোপন অশ্রুজল,
সে পথ আমায় দাওনি তুমি ব’লে।
বাহির দ্বারে অধীর খেলা, ভিড়ের মাঝে হাসির কোলাহল,
দেখে এলেম চ’লে।
এই ছবি মোর ছিল মনে
নির্জ্জন মন্দিরের কোণে,
দিনের অবসানে
সন্ধ্যা-প্রদীপ আছে চেয়ে ধ্যানের চোখে সন্ধ্যা-তারার পানে।
নিভৃত ঘর কাহার লাগি’
নিশীথ রাতে রইলো জাগি’,
খুল্লো না তা’র দ্বার।
হে চঞ্চলা, তুমি বুঝি
আপ্নিও পথ পাওনি খুঁজি’,
তোমার কাছে সে ঘর অন্ধকার॥
জানি তোমার নিকুঞ্জে আজ পলাশ শাখায় রঙের নেশা লাগে,
আপন গন্ধে বকুল মাতোয়ারা।
কাঙাল সুরে দখিন বাতাস বনে বনে গুপ্ত কি ধন মাগে,
বেড়ায় নিদ্রাহারা।
হায় গো তুমি জানো না যে
তোমার মনের তীর্থ-মাঝে
পূজা হয়নি আজো।
দেবতা তোমার বুভুক্ষিত, মিথ্যা-ভূষায় কি সাজ তুমি সাজো।
হ’লো সুখের শয়ন পাতা,
কণ্ঠ-হারের মাণিক গাঁথা,
প্রমোদ রাতের গান,
হয়নি কেবল চোখের জলে
লুটিয়ে মাথা ধূলার তলে
আপন ভোলা সকল-শেষের-দান॥
ভোলাও যখন, তখন সে কোন্ মায়ার ঢাকা পড়ে তোমার পরে;
ভুল্বে যখন, তখন প্রকাশ পাবে,—
ঊষার মতো অমল হাসি জাগ্বে তোমার আঁখির নীলাম্বরে
গভীর অনুভাবে।
ভোগ সে নহে, নয় বাসনা,
নয় আপনার উপাসনা,
নয়কো অভিমান;
সরল প্রেমের সহজ প্রকাশ, বাইরে যে তা’র নাইরে পরিমাণ
আপন প্রাণের চরম কথা
বুঝ্বে যখন, চঞ্চলতা
তখন হবে চুপ।
তখন দুঃখ-সাগর তীরে
লক্ষ্মী উঠে আস্বে ধীরে
রূপের কোলে পরম অপরূপ॥