পোকা-মাকড়/ষষ্ঠ শাখার প্রাণী/শল্ক-পক্ষ পতঙ্গ/রাত্রির প্রজাপতি

রাত্রির প্রজাপতি

 আমরা কোন্ পতঙ্গদের রাত্রির প্রজাপতি বলিতেছি, তাহা বোধ হয় তোমরা বুঝিতে পার নাই। ইহারা প্রজাপতি নয়, কিন্তু প্রজাপতিদেরই মত ইহাদের চারিখানি ডানা থাকে এবং ডানার গায়ে রঙের গুঁড়া লাগানো থাকে—কাজেই ইহারাও শল্ক-পক্ষ পতঙ্গ। এই রকম ছোট পোকা রাত্রিতে প্রদীপের কাছে অনেক উড়িয়া বেড়ায়। ইহাদের অনেকেরই ডানার রঙ্ সাদা বা সাদার উপরে লাল বা কালোর ছিটে-ফোঁটা দেওয়া। আবার কোনো কোনোটিকে বাদামী বা মেটে রঙেরও হইতে দেখা যায়। ডানায় হাত দিলে তাহার উপরকার রঙের গুঁড়া খসিয়া হাতে লাগে। কোন্ পতঙ্গদের রাত্রির প্রজাপতি বলিতেছি, তোমরা বোধ হয় এখন তাহা বুঝিতে পারিয়াছ। ইংরাজিতে এই পোকাকে Moth বলে।

 দিনের বেলায় এই পোকার দল নানা জায়গায় লুকাইয়া থাকে, রাত্রিই ইহাদের উড়িয়া বেড়াইবার সময়। বাদুড় পেঁচা যেমন নিশাচর প্রাণী, ইহারাও সেই রকম নিশাচর পতঙ্গ। দিনের বেলায় ঝোপে জঙ্গলে অবিরাম ঘুরিয়াও তোমরা এই দলের একটি পোকাও দেখিতে পাইবে না।

 প্রজাপতিরা যখন পাতা বা ফুলের উপরে বসিয়া বিশ্রাম করে, তখন ডানাগুলিকে পিঠের উপরে উঁচু করিয়া রাখে। ইহা তোমাদিগকে আগেই বলিয়াছি। কিন্তু রাত্রির প্রজাপতিরা বিশ্রামের সময়ে ডানা চারিটিকে বেশ গুটাইয়া রাখিতে পারে।

 প্রজাপতিদের মুখের উপরকার শুঁয়ো দুটির আকৃতি কি রকম তাহা তোমরা দেখিয়াছ কি? বোধ হয় দেখ নাই। একবার পরীক্ষা করিয়ো,—দেখিবে, শুঁয়ো আগাগোড়া এক রকম নয়। ইহার গোড়া অপেক্ষা আগাটা যেন হঠাৎ মোটা হইয়া পড়িয়াছে। কিন্তু রাত্রির প্রজাপতিদের শুঁয়ো সে-রকম নয়, ইহার আগাগোড়া প্রায় সমান মোটা, বরং আগাটাই যেন একটু সরু।