পোকা-মাকড়/ষষ্ঠ শাখার প্রাণী/শিরা-পক্ষ পতঙ্গ/উইয়ের বাসা
উইয়ের বাসা
উইয়েরা মাটির তলায় যে বাসা তৈয়ারি করে, তোমরা যদি সুবিধা পাও তবে তাহা পরীক্ষা করিয়ো। পিঁপ্ড়েদের বাসার মত ইহা কেবল মাটি দিয়া প্রস্তুত নয়। নরম বা পচা কাঠ দাঁতে কুরিয়া এবং তাহার সহিত মুখের লালা ও মাটি মিশাইয়া ইহারা এক রকম কাদার মত জিনিস প্রস্তুত করে। ইহাই উইদের বাসা প্রস্তুতের মসলা। পিঁপ্ড়ের বাসা মাটি খুঁড়িয়া পরীক্ষা করিতে গেলে, তাহা ভাঙিয়া-চুরিয়া নষ্ট হয়। উইয়ের বাসার মাল-মসলা শক্ত বলিয়া, তাহা ঐ রকমে সহজে ভাঙে না। স্পঞ্জের গায়ে কত ছোট ছিদ্র থাকে, তাহা তোমরা দেখিয়াছ। উইয়ের বাসা কতকটা স্পঞ্জের মত ছিদ্রযুক্ত, কিন্তু ছিদ্রগুলি কিছু বড়। এইগুলিই উইদের ঘর ও বাসায় যাইবার পথ।
উইয়ের বাসাগুলি এক একটা নগরের মত,—তাহাতে যে কত বড় বড় রাস্তা আঁকিয়া বাঁকিয়া চলিয়াছে, তাহার হিসাবই হয় না। ঘরের সংখ্যাও অনেক। কোনো ঘরে ডিম বোঝাই থাকে, কোনো ঘরে বাচ্চাদের লালন-পালন করা হয়। আবার কতকগুলি ঘরের দেওয়ালে ও সুড়ঙ্গের গায়ে চাষ-আবাদের কাজ চলে। এক রকম ছোট ব্যাঙের ছাতা উইয়েরা খাইতে বড় ভালবাসে। আমরা যেমন জমিতে সার দিয়া ধান, গম, ছোলা, মটর প্রভৃতি আবাদ করি, উহারা সেই রকমে ঘরের ও সুড়ঙ্গের দেওয়ালে ব্যাঙের ছাতার বীজ বুনিয়া চাষ করে। উইয়ের বাসা খুঁড়িয়া বাহির করিলে, সেখানে ঐ-রকম ব্যাঙের ছাতা অনেক দেখা যায়। যে ছোট প্রাণী মানুষের মত চাষ-আবাদ করিতেও জানে, তাহারা কত বুদ্ধিমান্ একবার ভাবিয়া দেখ।