পোকা-মাকড়/ষষ্ঠ শাখার প্রাণী/ষষ্ঠ শাখার প্রাণীদের বিভাগ
ষষ্ঠ শাখার প্রাণীদের বিভাগ
এই শাখার প্রাণীদিগকে আমরা যে-রকম ভাগ করিব তাহা আগেই তোমাদিগকে বলিয়া রাখিতেছি।
প্রথম ভাগ।—এই ভাগে চিংড়ি মাছ, কাঁকড়া প্রভৃতি কঠিনবর্ম্মী প্রাণীরা পড়িবে। ইহাদের মধ্যে অনেকেই জলের প্রাণী কিন্তু পোকা-মাকড়দেরই জ্ঞাতি এবং সকলেরই শরীর গাঁটে গাঁটে ভাগ করা; কিন্তু গায়ের আবরণ খুব শক্ত। যোদ্ধারা লড়াই করিবার সময়ে যেমন বর্ম্ম পরে, ইহারা সেই রকম শক্ত আবরণে গা ঢাকিয়া রাখে, তাই হঠাৎ শত্রুরা ইহাদের অনিষ্ট করিতে পারে না। এই জন্যই ইহাদিগকে কঠিনবর্ম্মী বলিতেছি।
দ্বিতীয় ভাগ।—বোল্তা মাছি প্রজাপতি গোবরে-পোকা ফড়িং ইত্যাদি অনেক ছোট প্রাণী এই ভাগে পড়িবে। এই ভাগে যত প্রাণী আছে, ষষ্ঠ শাখার কোনো ভাগেই তত প্রাণী নাই। ইহাদের মধ্যে কতকগুলি আবার উড়িতে পারে। ইহাদের অনেকেরই শরীরে মাথা বুক ও লেজ এই তিনটি অংশ স্পষ্ট করিয়া দেখা যায়। বুকের তলায় অনেকগুলি পা থাকে; কিন্তু ইহারও সংখ্যা স্থির থাকে। গুণিলে প্রায় সকলেরি ছয়খানা করিয়া পা দেখিতে পাইবে। এই ভাগের প্রাণীদিগকে পতঙ্গ বলা যাইতে পারে।
তৃতীয় ভাগ।—এই ভাগের পোকা-মাকড়কে আমরা লূতা বলিব। “লূতা” মাকড়সার ভাল নাম। নানা রকম মাকড়সাই এই ভাগে আছে। প্রজাপতি বা ফড়িংদের মত ইহাদের শরীরে তিনটা ভাগ দেখা যায় না। যে-সব আংটির মত গাঁট দিয়া পোক-মাকড়ের দেহ প্রস্তুত, সেগুলি ইহাদের শরীরে একবারে গায়ে গায়ে জোড়া থাকে। পেটের তলার আংটিগুলিকে প্রায় চেনাই যায় না। দ্বিতীয় ভাগের প্রাণীদের মত ইহাদের পা ছয়খানা নয়; ইহাদের পায়ের সংখ্যা চারি জোড়া অর্থাৎ আটখানা।
চতুর্থ ভাগ।—এই ভাগের প্রাণীরা ভারি বিশ্রী। কেন্নো এবং বিছে এই দলের প্রধান পোকা। ইহাদেরও দেহ কঠিন আংটি দিয়া গড়া; কিন্তু পায়ের সংখ্যা অনেক বেশি। এই জন্য চতুর্থ ভাগের পোকা-মাকড়কে শতপদী বলা যাইতে পারে।