পোকা-মাকড়/ষষ্ঠ শাখার প্রাণী/সহস্রপদী/তেঁতুলে-বিছা
সহস্রপদী
(Myriapods)
তেঁতুলে-বিছা
তেঁতুলে-বিছা তোমরা নিশ্চয়ই দেখিয়াছ। বড় জাতের বিছা সাত আাট ইঞ্চি পর্য্যন্ত লম্বা হয়। খোলা ছাড়াইলে পাক তেঁতুলকে যে রকম দেখায়, ইহাদের গায়ের রঙ্ ও আকৃতি সেই রকম বলিয়াই ইহাদিগকে তেঁতুলে-বিছা বলে।
বিছার মুখে দুইটি শুঁয়ো থাকে। তার পরে খাবার ধরিবার জন্য চোয়াল ও একজোড়া দাঁতও থাকে। ইহাদের দেহ যতগুলি আংটি জুড়িয়া প্রস্তুত হয়, তাহার প্রত্যেক আংটি হইতে এক এক জোড়া পা বাহির হয়। প্রথম পা জোড়াটি আকার বদ্লাইয়া দাঁত হইয়া দাঁড়াইয়াছে। দাঁত দুটির রঙ্ প্রায়ই কালো হয় এবং ভয়ানক ছুঁচ্লো থাকে।
বিছাতে কামড়াইলে ভয়ানক জ্বালা করে। ইহাদের দাঁতের আগায় খুব সরু ছিদ্র এবং দাঁতের গোড়ায় বিষের থলি থাকে। কামড়াইলেই ঐ থলি হইতে বিয আসিয়া দাঁতের ছিদ্র দিয়া কামড়ের জায়গায় লাগে। ইহাই জ্বালা-যন্ত্রণা সুরু করে।
বিছাদের মাথার দুই পাশে দুইটা করিয়া কালো চোখ থাকে, হঠাৎ দেখিলে এগুলিকে সাধারণ চোখ বলিয়াই মনে হয়। কিন্তু তাহা নয়। তোমরা যদি আাতসী কাচ দিয়া পরীক্ষা কর, তবে প্রত্যেক চোখের কালো দাগের উপরে চারিটা করিয়া ছোট চোখ সাজানো দেখিতে পাইবে। সুতরাং বলিতে হয়, বিছার আটটি করিয়া চোখ আছে। এই সকল চোখ দিয়া দেখিয়া ও শুঁয়ো দিয়া ছুঁইয়া অন্ধকার রাত্রিতেও বিছারা খাবার সংগ্রহ করিতে পারে। শুঁয়ো দুটির প্রত্যেকটিতে কুড়িটা করিয়া জোড় আছে, তাই ইহারা যেদিকে-ইচ্ছা শুঁয়ো নড়াইতে পারে।
দাঁতের আকৃতি এবং দাঁতের তলাকার বিষের থলির কথা শুনিলেই বুঝা যায়, বিছারা হিংস্র প্রাণী। ইহারা গাছপালা বা নিরামিষ খাবার প্রায়ই খায় না, রাত্রি হইলেই বন-জঙ্গল বা ঘরের কোণ হইতে বাহির হইয়া কেবল ছোট পোকা-মাকড় ধরিয়া খায়।