প্রবেশদ্বার:ভ্রমণকাহিনী
এই প্রবেশদ্বার অথবা অনুচ্ছেদটি পরিবর্ধন বা বড় কোনো পুনর্গঠনের মধ্যে রয়েছে। এটির উন্নয়নের জন্য আপনার যে কোনো প্রকার সহায়তাকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। যদি এই প্রবেশদ্বার অথবা অনুচ্ছেদটি কয়েকদিনের জন্য সম্পাদনা করা না হয়, তাহলে অনুগ্রহপূর্বক এই টেমপ্লেটটি সরিয়ে ফেলুন। এই পাতাটির সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন Bodhisattwa (আলাপ | অবদান) ২ বছর আগে। (শোধন) |
ভূমিকা
নির্বাচিত ভ্রমণকাহিনী
পালামৌ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অগ্রজ সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি ভ্রমণকাহিনী। সঞ্জীবচন্দ্র-সম্পাদিত বঙ্গদর্শন পত্রিকায় ১২৮৭ বঙ্গাব্দের পৌষ-সংখ্যা হতে ১২৮৯ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাস পর্যন্ত সর্বপ্রথম ধারাবাহিক ভাবে এটি প্রকাশিত হয়। লেখকের জীবদ্দশায় এই কাহিনী স্বতন্ত্র পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়নি। তাঁর মৃত্যুর পর বঙ্কিমচন্দ্র ‘সঞ্জীবনী সুধা’ নাম দিয়ে সঞ্জীবচন্দ্রের রচনার যে সঙ্কলন প্রকাশ করেন, তাতে “পালামৌ” প্রথম পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘আধুনিক সাহিত্যে’ সঞ্জীবচন্দ্রের “পালামৌ” সম্পর্কে বলেছেন, “পালামৌ ভ্রমণবৃত্তান্তের মধ্যে সৌন্দর্য্যের প্রতি সঞ্জীবচন্দ্রের যে একটি অকৃত্রিম সজাগ অনুরাগ প্রকাশ পাইয়াছে এমন সচরাচর বাংলা লেখকদের মধ্যে দেখা যায় না। সাধারণত আমাদের জাতির মধ্যে একটি বিজ্ঞবার্দ্ধক্যের লক্ষণ আছে—আমাদের চক্ষে সমস্ত জগৎ যেন জরাজীর্ণ হইয়া গিয়াছে। সৌন্দর্য্যের মায়া-আবরণ যেন বিস্রস্ত হইয়াছে—এবং বিশ্বসংসারের অনাদি প্রাচীনতা পৃথিবীর মধ্যে কেবল আমাদের নিকটই ধরা পড়িয়াছে। সেই জন্য অশন বসন ছন্দ ভাষা আচার ব্যবহার বাসস্থান সর্ব্বত্রই সৌন্দর্য্যের প্রতি আমাদের এমন সুগভীর অবহেলা। কিন্তু সঞ্জীবের অন্তরে সেই জরার রাজত্ব ছিল না। তিনি যেন একটি নূতনসৃষ্ট জগতের মধ্যে একজোড়া নূতন চক্ষু লইয়া ভ্রমণ করিতেছেন। “পালামৌ”তে সঞ্জীবচন্দ্র যে, বিশেষ কোনো কৌতূহলজনক নূতন কিছু দেখিয়াছেন, অথবা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে কিছু বর্ণনা করিয়াছেন তাহা নহে, কিন্তু সর্ব্বত্রই ভালবাসিবার ও ভালো লাগিবার একটা ক্ষমতা দেখাইয়াছেন। “পালামৌ” দেশটা সুসংলগ্ন সুস্পষ্ট জাজ্বল্যমান চিত্রের মতো প্রকাশ পায় নাই, কিন্তু যে সহৃদয়তা ও রসবোধ থাকিলে জগতের সর্ব্বত্রই অক্ষয় সৌন্দর্য্যের সুধাভাণ্ডার উদ্ঘাটিত হইয়া যায় সেই দুর্লভ জিনিসটি তিনি রাখিয়া গিয়াছেন, এবং তাঁহার হৃদয়ের সেই অনুরাগপূর্ণ মমত্ববৃত্তির কল্যাণকিরণ যাহাকেই স্পর্শ করিয়াছে—কৃষ্ণবর্ণ কোলরমণীই হৌক্, বনসমাকীর্ণ পর্ব্বতভূমিই হৌক্, জড় হৌক্, চেতন হৌক্, ছোট হৌক্, বড় হৌক্ সকলকেই একটি সুকোমল সৌন্দর্য্য এবং গৌরব অর্পণ করিয়াছে।”
লেখক
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বিশ্বপথিক। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে তিনি বারোবার বিশ্বভ্রমণ করে এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ভ্রমণ করেন। এই সময়ে রবীন্দ্রনাথের কলম থেকে যে ভ্রমণ সাহিত্য বেরিয়েছিল, তা অন্যান্য রবীন্দ্র সাহিত্যের মতই ছিল অতুলনীয়। রবীন্দ্রনাথের স্বভাবসুলভ উচ্চাঙ্গের সাহিত্যরূপের পাশাপাশি এই সাহিত্য রচনায় রবীন্দ্রনাথের তথ্যগত বিবরণ ও বিশ্লেষণের দিক থেকে ছিলেন পুঙ্খানুপুঙ্খ।