চম্পা

আমারে ফুটিতে হ’ল বসন্তের অন্তিম নিশ্বাসে,

বিষণ্ণ যখন বিশ্ব নির্ম্মম গ্রীষ্মের পদানত;
রুদ্র তপস্যার বনে আধ ত্রাসে আধেক উল্লাসে,
একাকী আসিতে হ’ল—সাহসিক অপ্সরার মত

বনানী শোষণ-ক্লিষ্ট মর্ম্মরি’ উঠিল একবার,
বারেক বিমর্ষ কুঞ্জে শোনা গেল ক্লান্ত কুহুস্বর;

জন্ম-যবনিকা-প্রান্তে মেলি’ নব নেত্র সুকুমার
দেখিলাম জলস্থল,—শূন্য, শুষ্ক, বিহ্বল, জর্জ্জর।

তবু এনু বাহিরিযা,—বিশ্বাসের বৃন্তে বেপমান,—
চম্পা আমি,—খরতাপে আমি কভু ঝরিব না মরি,;
উগ্র মদ্য সম রৌদ্র,—যার তেজে বিশ্ব মুহ্যমান,—
বিধাতার আশীর্ব্বাদে আমি তা’ সহজে পান করি।

ধীরে একু বাহিরিয়া, ঊষার আতপ্ত কর ধরি’;
মূর্চ্ছে দেহ, মোহে মন,—মুহুমুহু করি অনুভব!
সূর্য্যের বিভূতি তবু লাবণ্যে দিতেছে তনু ভরি’;
দিনদেবে নমস্কার! আমি চম্পা! সূর্য্যেরি সৌরভ।