বনবাণী/নটরাজ-ঋতুরঙ্গশালা/মনের মানুষ
মনের মানুষ
[১]কত-না দিনের দেখা
কত-না রূপের মাঝে-
সে কার বিহনে একা
মন লাগে নাই কাজে।
কার নয়নের চাওয়া
পালে দিয়েছিল হাওয়া,
কার অধরের হাসি
আমার বীণায় বাজে।
কত ফাগুনের দিনে
চলেছিনু পথ চিনে,
কত শ্রাবণের রাতে
লাগে স্বপনের ছোঁওয়া।
চাওয়া-পাওয়া নিয়ে খেলা,
কেটেছিল কত বেলা-
কখনো বা পাই পাশে
কখনো বা যায় খোওয়া।
শরতে এসেছে ভোরে
ফুলসাজি হাতে করে,
শীতে গোধঊলির বেলা
জ্বালায়েছে দীপিশখা।
কখনো করুণ সুরে
গান গেয়ে গেছে দূরে-
যেন কাননের পথে
রাগিণীর মরীচিকা।
সেই সব হাসি কাঁদা,
বাঁধন খোলা ও বাঁধা,
অনেক দিনের মধু,
অনেক দিনের মায়া-
আজ এক হয়ে তারা
মোরে করে মাতোয়ারা,
এক বীণারূপ ধরি
এক গানে ফেলে ছায়া।
নানা ঠাঁই ছিল নানা,
আজ তারে হল জানা,
বাহিরে সে দেখা দিত
মনের মানুষ মম-
আজ নাই আধাআধি,
ভিতর বাহির বাঁধি
এক দোলাতেই দোলে
মোর অন্তরতম।
- ↑ এই ছন্দ চৌপদীজাতীয় নহে। ইহার যতিবিভাগ নিম্নলিখিত রূপে:
কত-না দিনের। দেখা। কত-না রূপের। মাঝে।
সে কার বিহনে। একা। মন লাগে নাই। কাজে।