বনবাণী/নটরাজ-ঋতুরঙ্গশালা/মুক্তিতত্ত্ব
মুক্তিতত্ত্ব শুনতে ফিরিস
তত্ত্বশিরোমণির পিছে?
হায় রে মিছে, হায় রে মিছে।
মুক্ত যিনি দেখ্-না তাঁরে,
আয় চলে তাঁর আপন দ্বারে,
তাঁর বাণী কি শুকনো পাতায়
হলদে রঙে লেখেন তিনি।
মরা ডালের ঝরা ফুলের
সাধন কি তাঁর মুক্তিকুলের।
মুক্তি কি পণ্ডিতের হাটে
উক্তিরাশির বিকিকিনি।
এই নেমেছে চাঁদের হাসি,
এইখানে আয় মিলবি আসি,
বীণার তারে তারণমন্ত্র
শিখে নে তোর কবির কাছে।
আমি নটরাজের চেলা,
চিত্তাকাশে দেখছি খেলা,
বাঁধন-খোলার শিখছি সাধন
মহাকালের বিপুল নাচে।
দেখছি, ও যার অসীম বিত্ত
সুন্দর তার ত্যাগের নৃত্য,
আপনাকে তার হারিয়ে প্রকাশ
আপ্নাতে যার আপ্নি আছে।
যে নটরাজ নাচের খেলায়
ভিতরকে তার বাইরে ফেলায়,
কবির বাণী অবাক মানি
তারি নাচের প্রসাদ যাচে।
শুনবি রে আয় কবির কাছে-
তরুর মুক্তি ফুলের নাচে,
নদীর মুক্তি আত্মহারা
নৃত্যধারার তালে তালে।
রবির মুক্তি দেখ্-না চেয়ে
আলোক-জাগার নাচন গেয়ে,
তারার নৃত্যে শূন্য গগন
মুক্তি যে পায় কালে কালে।
প্রাণের মুক্তি মৃত্যুরথে
নূতন প্রাণের যাত্রাপথে,
জ্ঞানের মুক্তি সত্য-সুতার।
নিত্য-বোনা চিন্তাজালে।
আয় তবে আয় কবির সাথে
মুক্তিদোলের শুক্লরাতে,
জ্বললো আলো, বাজল মৃদঙ্
নটরাজের নাট্যশালে।