বরেন্দ্র রন্ধন/নবম অধ্যায়

নবম অধ্যায়।

জিরা পর্ব্ব

(২) ঘণ্ট (নিরামিষ) বা বেস্বরী

 আনাজ মিহি করিয়া কুটিয়া লইয়া ঘৃতে বা তৈলে জিরা, তেজপাত ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া উত্তমরূপে আংসাইয়া লইয়া তাহাতে নুণ, হলুদ ও বাটা ঝাল মিশাইয়া কষান নিরামিষ বা আমিষ অনুষঙ্গ সহ জ্বলে সিদ্ধ করতঃ সমস্ত বেশ করিয়া ঘাঁটিয়া মিশাইয়া তাহাতে পর্য্যাপ্ত পরিমাণে পিঠালী দিয়া আঁটিয়া লইয়া শুক্না শুক্না অথচ নসনসে গোছ করিয়া নামাইলে ঘণ্ট প্রস্তুত হইল।

 নিরামিষ ঘণ্টকে এতদ্দেশে অনেক সময়ে বেস্বরী বলা যায়।

 সাধারণতঃ এক প্রকার আনাজেই বেস্বরী রাঁধা হয়, তবে কোন কোন ক্ষেত্রে একাধিক আনাজও ব্যবহৃত হইয়া থাকে। কিন্তু কেবল মাত্র মাছের একায়েক ঘণ্ট রাঁধা কৈ দেখা যায় না। নিরামিষ ঘণ্টে মটরের বড়ী, ফুল-বড়ী, খেঁসারী বা মটর ডাইলের চাপড়ী ভাজি, মটর ডাইলের বড়া ভাজি, মটর ডাইলের পানি দলা (জল- বড়া), ও বালুতে ভাজা মুগ ও মাষ ডাল, মাষকলাইর কুমড়া-বড়ী এবং ছোলা প্রভৃতি অনুষঙ্গরূপে ব্যবহৃত হয়। আমিষ ঘণ্টে রুই প্রভৃতি মাছের মুড়া-কাঁটা-গাদা, শোল মাছের মুড়া-কাঁটা, আইরাদি মাছ, ইলিশ মাছ, চিঙড়ী মাছ প্রভৃতি অনুষঙ্গরূপে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। সুতরাং আমিষ ও নিরামিষ ঘণ্টের পার্থক্য কেবল এই অনুষঙ্গ ভেদে। নিরামিষ ঘণ্টে একটু মিষ্টরস (চিনি) মিশাইতে হয়, আমিষ ঘণ্টে তাহা হয় না। আমিষ ঘণ্টে জিরা-মরিচ বাটা, লঙ্কা বাটা, ধনিয়া বাটা, তেজপাত বাটা প্রভৃতি সর্ব্বপ্রকার বাটা ঝালই মিশাইতে হয়। নিরামিষ ঘণ্টে কেবল মাত্র জিরা-মরিচ বাটা দিলেই যথেষ্ট হয়; ধনিয়া বাটা এবং ক্ষেত্রবিশেষে লঙ্কা বাটা এবং লঙ্কা ফোড়ন পর্য্যন্ত, বাদ দেওয়া যাইতে পারে। নিরামিষ ঘণ্ট ঘৃতে আংসাইলেই ভাল হয়, নচেৎ নামাইয়া পরে একটু গাওয়া ঘি মিশাইবে। আমিষ ঘণ্টে ঘৃতের কোন প্রয়োজন নাই। মোচা, ফুলকোবি, বাঁধাকোবি প্রভৃতির নিরামিষ ঘণ্টে পশ্চাৎ কিছু গরম মশল্লা বাটা মিশাইলে তবে তাহার স্বাদ উৎকৃষ্ট হয়, নচেৎ সচরাচর ঘণ্টে গরম মশল্লা বাটা মিশান হয় না। আমিষ ও নিরামিষ উভয়বিধ ঘণ্টে বিশেষতঃ নিরামিষ ঘণ্টে, কোন কোন ক্ষেত্রে পশ্চাৎ তিল, পোস্ত অথবা নারিকেল কুড়া বাটা মিশাইবার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু ঘণ্টে কদাপি পশ্চাৎ সরিষা বাটা বা আদা বাটা মিশান হয় না। ঘণ্টে সরিষা ফোড়ন নিসিদ্ধ এবং গরম মশল্লা ও পেঁজাদি ফোড়নও অতি বিরল।

 ঘণ্টের আনাজ মিহি করিয়া কুটিয়া লইবে এবং তাহা কিঞ্চিৎ অধিক ঘৃত বা তৈলে উত্তমরূপে (কিন্তু ছেঁচকীর ন্যায় অতিরিক্তরূপে নহে) আংসাইয়া লইবে, তবে ঘণ্ট শেষ পর্যন্ত বেশ লপেট গোছের হইবে। অনেক স্থলে আবার এই নিমিত্ত আনাজ বিশেষের সহিত কিছু লাফা বেগুণ বা বিলাতী কুমড়া মিহি করিয়া কুটিয়া মিশাইয়া দেওয়া হয়। ঘণ্ট লপেট করিবার নিমিত্ত সিদ্ধ পর সমস্ত উত্তমরূপে ঘাঁটিয়া মিশাইয়া লইবে এবং তৎপর অপেক্ষাকৃত বেশী পরিমাণে পিঠালী মিশাইবে। তবে সমস্তটা বেশ মিলিয়া মিশিয়া আঁটিয়া গিয়া শুষ্ক অথচ গদগদে নসনসে গোছ হইবে। নচেৎ জলে ঝপঝপে এড়া এড়া টীলা গোছ ঘণ্ট অখাদ্য হইবে ইহা স্মরণ রাখিবে।

১৬২। লাউর বেস্বরী

 লাউ চারি অঙ্গুলী পরিমিত লম্বা সরু সরু করিয়া কুটিয়া লও। ফুলবড়ী অথবা কুমড়া বর্জিত মটরের বড়ী তেলে কষাইয়া রাখ। (লাউ ও কুমড়া এক করিতে নাই এইজন্য কুমড়া বড়ী পর্যন্ত লাউয়ে দেয় না।) ঘৃতে বা তেলে জিরা, তেজপাত ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া লাউ ছাড়। উত্তমরূপে আংসাও। অথচ খুব বেশী আংসাইও না তাহা হইলে লাউ-ছেঁচকীর লাউর ন্যায় লালচে হইয়া যাইবে। নুণ, হলুদ দিয়া জল দাও। কিছুক্ষণ ফুটিলে ভাজা ফুলবড়ী ছাড়। অল্প পরিমাণে জিরা-মরিচ বাটা দাও। প্রকাশ থাকে যে, লাউর ঘণ্টে অধিক পরিমাণে বাটা ঝাল দিতে হয় না। অনন্তর একটু চিনি এবং জল শুকাইয়া আসিলে অনেকটা পিঠালী দিয়া আঁটিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া নস্‌নসে গোছ করিয়া নামাও। একটু গাওয়া ঘি মিশাও।

 বড়ীর পরিবর্তে মুগের ডাইল, বুট, বা মটর ডাইলের চাপড়ী ভাজা এবং নারকেল কুড়াদি অনুষঙ্গরূপে ব্যবহার করিতে পার।

১৬৩। বঁধা-কোবির ঘণ্ট

 বাঁধাকোবি কুচাইয়া কুটিয়া লও। আলু ছোট ছোট ডুমা ডুমা করিয়া কুটিয়া লও। কলাই শুঁটা ছাড়াইয়া রাখ। ঘৃতে বা তেলে জিরা, তেজপাত ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া কোবি ছাড়। উত্তমরূপে আংসাও। বুড়া কোবি হইলে পূর্বে একটু ভাপ দিয়া লইয়া আংসাইবে। এই সময় তেজপাতাগুলি বাছিয়া উঠাইয়া রাখিবে নচেৎ তাহা ভাঙ্গিয়া কুটা কুটা হইয়া তরকারীতে মিশিয়া যাইবে এবং ভোজনকালে অসুবিধা হইবে। নুণ হলুদ ও জিরা-মরিচ বাটা জলে গুলিয়া ঢালিয়া দাও। এক্ষণে তেজপাতাগুলি পুনঃ ছাড়িতে পার। ফুটিলে কষান আলু ও কলাই শুঁটীগুলি ছাড়। সিদ্ধ হইলে একটু চিনি দাও। পরে অনেকটা পিঠালী দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া নসনসে করিয়া নামাও। একটু গরম মশল্লা বাটা ও গাওয়া ঘৃত মিশাও।

 ফুল-কোবির, শালগমের, ওলকোবির ঘণ্ট এই প্রকারে রাধিতে পার।

১৬৪। শিমের বেস্বরী

 শিম মিহি করিয়া কুটিয়া লও। তেলে মাষকলাইর বড়ী ভাজিয়া রাখ। পরে তৈলে জিরা, তেজপাত ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া শিম ছাড়। আংসাও। নুণ হলুদ দিয়া জল দাও। ফুটিলে ভাজা বড়ী ভাঙ্গিয়া ছাড়। সিদ্ধ হইলে একটু চিনি মিশাও। বাটা ঝাল দাও। পরে পিঠালী দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া আঁটিয়া নসনসে করিয়া নামাও। একটু গাওয়া ঘি মিশাও।

 ডুমুরের, কাঁকরোলের, বেগুণের এই প্রকারে ঘণ্ট রাঁধিবে। ডুমুর কুটিয়া একটু ভাপ দিয়া লইবে। আবার শিম-বেগুণ, মূলা-বেগুণ প্রভৃতির একত্রেও ঘণ্ট রাঁধা হইয়া থাকে। থোড়ের বেস্বরীও এই প্রকারে রাঁধিবে, কেবল থোড় কুটিয়া তাহাতে একটু নুণ মাখিয়া চিপিয়া লইবে।

১৬৫। শিম-বেগুণে ঘণ্ট

 শিম মিহি করিয়া এবং বেগুণ অপেক্ষাকৃত একটু পুরু পুরু করিয়া কুটিয়া লও। মাষকলাই বড়ী তেলে ভাজিয়া তোল। উপরুক্ত বিধানে উভয়ে একত্রে ঘণ্ট রাঁধ।

 মূলা-বেগুণে, শিম-বেগুণ-মূলায় এই প্রকারে ঘণ্ট রাঁধিবে।

১৬৬। স্কোয়াসের ঘণ্ট

 স্কোয়াস মিহি করিয়া কুটিয়া লও। তেলে মাষকলাইর বড়ী ভাজিয়া তোল। শিমের বেস্বরীর ন্যায় রাঁধ। স্কোয়াসের সহিত ফুলকোবি, কলাইশুটী প্রভৃতি বিশেষতঃ বেগুণ মিশাইয়া একত্রেও ঘণ্ট রাঁধিতে পার।

 মটরশুটীর পরিবর্তে মাষকলাইর বড়ী, বুট এবং নারিকেল কুরা প্রভৃতিও অনুষঙ্গরূপে ব্যবহৃত হইতে পারে।

 শুধু মটরশুটীর বা তৎসহ বড়ি মিশাইয়া এই প্রকারে বেস্বরী রাঁধিবে।

 নেয়াপাতি নারিকেল-শাঁসেরও এইরূপে বড়ীযোগে বেস্বরী বঁধিবে।

১৬৭। গোল-আলুর ঘণ্ট

 আলু সিদ্ধ করিয়া ছানিয়া লও। মাষকলাইর বড়ী তেলে ভাজিয়া লও। তৈলে জিরা, তেজপাত, লঙ্কা এবং ইচ্ছা করিলে দুটো মৌরী ও হিঙ ফোড়ন দিয়া আলু ছাড়। আংসাও। নুণ, হলুদ দিয়া অল্প জল দাও। ফুটিলে ভাজা বড়ী ভাঙ্গিয়া ছাড়। বাটা ঝাল ছাড়। একটু চিনি দাও। আলুতে পিঠালী দেওয়ার বিশেষ আবশ্যক নাই। জল শুকাইয়া নসনসে গোছ হইলে নামাও। একটু ঘি মিশাও। আলু তেলে ছাড়িয়া পরে তেজপাতা উঠাইয়া রাখিবে এবং পরে জল দেওয়া পর পুনঃ মিশাইবে।

 আনাজি কলা, ওল, মান, লাল আলু, গড় আলু, শালুক, বইকচু প্রভৃতির এই প্রকারে ঘণ্ট রাঁধিবে।

১৬৮। পালং শাকের ঘণ্ট

 পালঙশাক খুব মিহি কুচি কুচি করিয়া কুটিয়া লও। এতৎসহ কিছু বেগুণ ও শলুপ শাক কুচাইয়া লও। বেগুণ মিশাইলে তবে শাকের ঘণ্ট শেষ পর্যন্ত বেশ নসনসে হইবে এবং শলুপে পালঙ্গ শাকের দুর্গন্ধ দূর করিবে। আবার ইচ্ছা করিলে বথুয়া শাকও কুচি কুচি করিয়া কুটিয়া ইহার সঙ্গে মিশাইতে পার। মাষকলাইর বড়ী ভাজিয়া রাখ। তেলে জিরা, তেজপাত ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া শাক ছাড়। খানিক আংসাইয়া বেগুণ ছাড়। সমস্ত উত্তমরূপে আংসাও। নুণ হলুদ দিয়া জল দাও। ফুটিলে ভাজা বড়ী ভাঙ্গিয়া ছাড়। সিদ্ধ হইয়া জল মরিয়া আসিলে বাটা ঝাল ও প্রচুর পিঠালী দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া আঁটিয়া নসনসে করিয়া নামাও। একটু ঘি মিশাও।

 বালুতে ভাজা মুগ বা মাষকলাইর ডাইলও অনুষঙ্গরূপে ইহার সহিত ব্যবহার করিতে পার।

 শুধু বথুয়া শাকেরও বেগুণ ও শলুপ যোগে এই প্রকারে ঘণ্ট রাঁধিবে।

১৬৯। মটর শাকের ঘণ্ট

 মটর শাক কুচি কুচি করিয়া কুট। তৎসহ বেগুণ ও শলুপ শাক কুচি কুচি করিয়া মিশাও। ইচ্ছা করিলে, এতৎসহ শিমও কুচি কুচি করিয়া মিশাইয়া লইতে পার। পালং শাকের ঘণ্টের ন্যায়, মাষকলাইর বড়ী কিম্বা ভাজা মুগ বা মাষ ডাইল অনুষঙ্গ যোগে, প্রচুর পিঠালী দিয়া ঘণ্ট রাঁধ।

 আশ্‌কে পিঠার সহিত এই ঘণ্ট খাইতে ভাল।

 খেঁসারীর শাক, মুলা শাক, কল্‌মী শাক, ডাঁটা শাক এবং কচুর মাইঝ পাতার এইরূপে ঘণ্ট রাঁধিবে। খেঁসারীর শাক ধীরে ধীরে আংসাইবে, নচেৎ অম্ল-স্বাদবিশিষ্ট হইবে। ডাঁটা শাকের এবং কচুর মাইঝ পাতার ঘণ্টে পিঠালীর পরিবর্ত্তে মটর ডাইল বাটা জল দিয়া তরল করিয়া লইয়া ফেনাইয়া ধীরে ধীরে ঢালিয়া দিয়া নাড়িয়া নাড়িয়া মিশাইবে। ইহাতে ঘণ্ট মজিয়া বেশ আটা আটা মত হইবে।

১৭০। সজিনা ফুলের বেস্বরী

 সজিনা ফুল বাছিয়া লইয়া ভাপ দিয়া জল গালিয়া ফেল। বেগুণ মিহি করিয়া কুটিয়া লও। মাষকলাইর বড়ী ভাজিয়া তোল। তেলে জিরা, তেজপাত, লঙ্কা ফোড়ন দিয়া ফুল ও বেগুণ ছাড়। আংসাও। নুণ, হলুদ দিয়া জল দাও। ফুটিলে ভাজা বড়ী ভাঙ্গিয়া ছাড়। সিদ্ধ হইলে বাটা ঝাল ও পিঠালী দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া নসনসে করিয়া নামাও। একটু ঘি মিশাও।

 বালুতে ভাজা মুগ ও মাষ ডাইলও অনুষঙ্গরূপে ব্যবহার করিতে পার।

 বকফুল ও কাঞ্চন ফুলের কলির ঘণ্ট এই প্রকারে রাঁধিবে।

১৭১। মোচার ঘণ্ট

 মোচার খোলা ছাড়াইয়া অভ্যন্তরের ফুল-কলার ফুলটুকু কাটিয়া ফেলিয়া কলা কুচি কুচি করিয়া কুটিয়া লও। একটু ভাপ দিয়া জল গালিয়া ফেল। পরে নুণ, হলুদ সহ ছানিয়া লও। তৈলে জিরা, তেজপাত ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া ছানা মোচা ছাড়। আংসাও। (প্রকাশ থাকে যে, মোচা অতিরিক্ত আংসাইলে চিমড়াপানা হইয়া যায়)। জল দাও। ফুটিলে বালুতে ভাজা মুগ বা মাষকলাইর ডাইল মিশাও। সিদ্ধ হইলে একটু চিনি দাও। বাটা ঝাল মিশাও। পরে পিঠালী দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া আঁটিয়া নসনসে করিয়া নামাও। একটু ঘৃত ও গরম মশল্লা বাটা মিশাও। মোচার ব্যঞ্জনে একটু গরম মশল্লা দিলে তবে তাহার আস্বাদন উত্তম হয়।

 ইহাতে মাষকলাইর বড়ীও অনুষঙ্গরূপে ব্যবহার করিতে পার। মোচার ঘণ্টে পশ্চাৎ নারিকেল কুড়া দিলে চমৎকার হয়।

 গাবরে কচি পাতা ভাপ দিয়া লইয়া তদ্বারা ভাজা মুগ, মাষকলাইর ভাল বা মাষকলাইর বড়ী যোগে এইরূপে সুন্দর বেস্বরী রাধা যাইতে পারে।

১৭২। পটোল অথবা ঝিঙ্গার বেস্বরী

 কচি পটোল অথবা কচি ঝিঙ্গার বীচি ফেলিয়া মিহি করিয়া কুটিয়া লও। মাষকলাইর বড়ী, মুগ বা মাষ ডাইল যোগে শিমের ঘণ্টের ন্যায় ঘণ্ট রাঁধ।

১৭৩। মিঠা (বিলাতী) কুমড়ার বেস্বরী

 পাকা বিলাতী কুমড়া ডুমা ডুমা করিয়া কুটিয়া লও। বুট ভিজাইয়া রাখ। তৈলে জিরা, তেজপাত, দুটো কালজিরা ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া বিলাতী কুমড়া ছাড়। উত্তমরূপে আংসাও। নুণ, হলুদ দিয়া জল দাও। ফুটিলে বুট ছাড়। (অথবা ভাজা মাষ কলাইর ডাইল বা কষান বড়ী ভাঙ্গিয়া ছাড়িতে পার।) সিদ্ধ হইলে বাটা ঝাল ও একটু মিষ্ট দাও। পরে পিঠালী দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া আঁটিয়া ননসে করিয়া সাও। একটু ঘি মিশাও।

১৭৪। ছাঁচি কুমড়ার বেস্বরী

 কচি ছাঁচি কুমড়া মিহি করিয়া কুটিয়া লও। মটব ডাইল ভিজাইয়া বাখিয়া বাটিয়া চাপড়ী প্রস্তুত কবিয়া তেলে ভাজিয়া লও। তেলে জিরা, তেজপাত, লঙ্কা ফোড়ন দিয়া কুমড়া ছাড়। উত্তমরূপে আংসাও। নুণ হলুদ দিয়া জল দাও। ফুটিলে ভাজা চাপড়ী ভাঙ্গিয়া মিশাও। সিদ্ধ হইলে বাটা ঝাল এবং তিল বাটা ও পিঠালী (তিল-পিঠালী) দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া আঁটিয়া নসনসে করিয়া নামাও। একটু গাওয়া ঘি মিশাও। এই বেস্বরীকে কুমড়ার চাপড়-ঘণ্টও কহে।

 মটরের ডাইলের চাপড়ী ভাজার পরিবর্ত্তে মাষকলাইর বড়ী ভাজা, মুগ, মাষ অথবা ভিজান বুট অনুষঙ্গরূপে ব্যবহৃত হইতে পারে। কিন্তু তৎক্ষেত্রে অর্থাৎ চাপড়ী ভাজা না মিশাইলে আর তিল বাটা দিতে হইবে না। শুধু পিঠালী দিয়া আঁটিয়া লইয়া নামাইবে। তবে চাপড়ী ভাজা ও তৎসহ তিল বাটা যোগে ছাঁচি কুমড়ার বেস্বরীর যেরূপ আস্বাদন হইবে অন্যবিধ অনুষঙ্গাদি যোগে সেরূপ হইবে না। তিলবাটার পরিবর্ত্তে পোস্তদানা বাটা ব্যবহার করিতে পার। শশার বেস্বরী এই প্রকারে রাঁধিবে।

১৭৫। কচু-ডাঁটীর বেস্বরী

 কচুর মাইঝ পাতার ডাঁটা এবং খুব কচি পাতার ডাঁটার ঘণ্ট রাঁধিতে হয়। ডাঁটাগুলি চারি অঙ্গুলী পরিমিত করিয়া কুটিয়া লইয়া ভাপ দিয়া জল গালিয়া ফেল। বুট ভিজাইয়া রাখ। তৈলে (জিরা), তেজপাত, কালজিরা ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া ডাঁটী ছাড়। আংসাও। নুণ হলুদ সহ জল দাও। ফুটিলে বুট ছাড়। সিদ্ধ হইলে বাটা ঝাল ও একটু মিষ্ট দাও। পরে প্রচুর পিঠালী দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া আঁটিয়া নসনসে করিয়া নামাও। একটু ঘি মিশাও।

 মাষকলাই ডাইল ও পরিশেষে নারিকেল কুড়া অনুষঙ্গাদি রূপে ব্যবহৃত হইতে পারে।

 সরুচাক্‌লীর সহিত কচুর ঘণ্ট খাইতে ভাল।

১৭৬। না’লের ঘণ্ট বা বেস্বরী

 শালুক ফুলের নালের ঘণ্ট নারিকেল কুড়া বা বুট যোগে কচুশাকের ঘণ্টর ন্যায় রাঁধা হইয়া থাকে। তবে ইহাতে কালজিরা ফোড়ন বাদ দিতে পার।

 দুর্গোৎসবে বিজয়া-দশমীর দিনে পান্তা ভাত সহ না’লের বেস্বরী দ্বারা ‘মা’র ভোগ দেওয়া হইয়া থাকে।

ঘণ্ট—(আমিষ)

১৭৭। রুই মাছের মুড়া-কাঁটা দিয়া লাউর ঘণ্ট

 কতকগুলি আনাজ আছে যথা—লাউ, বাঁধা-কোবি, স্কোয়াস, পালং শাক প্রভৃতি এবং চিড়া, খৈ প্রভৃতি, যাহার সহিত রুই মাছের মুড়া-কাঁটা-গাদা দিয়া ঘণ্ট রাঁধিলে ভাল খাপ খায়, আবার আর কতকগুলি আনাজ আছে যথা—কচি ছাঁচী কুমড়া, শশা, কচুডাঁটী, বইকচু, আনাজি কলা প্রভৃতি, যাহার সহিত ইলিশ মাছের ঘণ্ট রাঁধিলে ভাল খাপ খায়। কতকগুলি আনাজ আছে যথা-আলু, ফুলকোবি, বিলাতী কুমড়া প্রভৃতি, যাহার ঘণ্ট রুই অথবা ইলিশ যে কোন মাছের সহিত রাঁধা যাইতে পারে। আবার লাউ, বিলাতী কুমড়া, শশা, ফুল কোবি, বাঁধা কোবি, স্কোয়াস প্রভৃতির সহিত কাঁকড়া বা চিংড়ী মাছের ঘণ্ট রাঁধিলে চমৎকার হয়। আবার পালঙ শাকের ঘণ্টে কই বা শোল মাছের মুড়া-কাঁটা ভাল মজে।

 রুই মাছের মুড়া, কাঁটা, গাদা প্রভৃতি লইয়া নুণ হলুদ মাখিয়া কষাইয়া বাথ। লাউ সরু সরু করিয়া কুটিয়া লও। (কিছু বিলাতী কুমড়া সরু সরু করিয়া কুটিয়া লাউর সহিত মিশাইয়া ঘণ্ট রাঁধিলে লাউর ঘণ্ট মজে ভাল। কিন্তু তৎক্ষেত্রে দুটো কালজিরা ফোড়ন দিতে হইবে।) তৈলে জিরা, তেজপাত, ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া লাউ ছাড়। উত্তমরূপে আংসাও। নুণ, হলুদ ও সর্ব্বপ্রকার বাটনা (অর্থাৎ ধনিয়া বাটাও মিশাইতে হইবে) মিশাও। কেহ কেহ পূর্ব্বে লঙ্কা বাটা ও ধনিয়া বাটা মিশাইয়া একটু আংসাইয়া লইয়া জল দিয়া ব্যঞ্জন সিদ্ধ করতঃ পরে জিরা-গোলমরিচ বাটা ও তেজপাত বাটা মিশাইয়া থাকেন। এবং তাহাই সমীচীন। জল ফুটিলে কষান মাছ ছাড়িবে। সুসিদ্ধ হইলে মাছ ভাঙ্গিয়া সমস্ত ঘাঁটিয়া মিশাইয়া দিবে, পশ্চাৎ পিঠালী দিয়া উত্তম রূপে নাড়িয়া চাড়িয়া সমস্ত আঁটিয়া লইয়া বেশ নসনসে গোছ করিয়া নামাইবে।

 কাৎলা, কালবাউসাদি, আইড়াদি, কাঁকড়া ও চিংড়ী মাছের সহিত লাউর ঘণ্ট এই প্রকারে রাঁধিবে। কিন্তু ইলিশ মাছের সহিত লাউর ঘণ্ট রাঁধিবে না, রাঁধিলে তাহা আদৌ মজিবে না। মাছের ঘণ্ট মাত্রেই গরম গরম খাইতে ভাল, নচেৎ আঁষটে গন্ধ বিশিষ্ট হইবে। বিবাহ আদি ব্যাপারে লাউর সহিত রুই মাছের মুড়া-কাঁটা-গাদার ঘণ্ট, ‘ভোজনে’ অন্নের সহিত পরিবেশন করা বরেন্দ্রের একটি প্রাচীন প্রথা।

 শৈল মাছের মুড়া-কাঁটা দিয়াও লাউ প্রভৃতির সুন্দর ঘণ্ট হয়। বাঁধাকোবির আমিষ ঘণ্ট এই প্রকারে রাঁধিবে। ফুল কোরি, স্কোয়াস, ওল কোবি প্রভৃতির ঘণ্টও রুই মাছের মুড়া-কাঁটা-গাদা যোগে এই একারে রাঁধিবে। এ ছাড়া শিম, বেগুণ, মূলা, শিম-বেগুণ, মূলা-বেগুণ, পটোল, ঝিঙ্গা, পালঙ শাক, মটর শাক প্রভৃতি আনাজের ঘণ্ট এই প্রকারে রাঁধিতে পার।

১৭৮। চিড়া-মুড়া ঘণ্ট

 রুই মাছের মুড়া-কাঁটা নুণ হলুদ মাখিয়া কষাইয়া রাখ। চিড়া ভিজাইয়া রাখ। নরম হইলে জল গালিয়া ফেল। তৈলে জিরা, তেজপাতা ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া চিড়া ছাড়। আংসাও। নুণ, হলুদ, লঙ্কা বাটা ও ধনিয়া বাটা দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া জল দাও। ফুটিলে কষান মাছ ছাড়। সিদ্ধ হইলে মাছ ভাঙ্গিয়া দিয়া সমস্ত নাড়িয়া মিশাইয়া দেও। এক্ষণে জিরা-মরিচ বাটা ও তেজপাত বাটা মিশাও। অবশেষে কিছু পিঠালী দিয়া (চিড়ার ঘণ্টে অধিক পিঠালী আবশ্যক হইবে না) আঁটিয়া লইয়া শুকনা শুকনা করিয়া নামাও।

 ভাতের এবং খৈয়ের সহিতও এই প্রকাবে মাছের ঘণ্ট রান্ধা চলে।

৭৯। রুই মাছের মুড়া-কাঁটা দিয়া মিঠা কুমড়ার ঘণ্ট

 বিলাতী কুমড়া ডুমা ডুমা বা সরু সরু করিয়া কুটিয়া লও। রুই মাছের মুড়া-কাঁটা-গাদা নুণ হলুদ মাখিয়া কষাইয়া রাখ। তৈলে জিরা, কালজিরা, তেজপাত, লঙ্কা ফোড়ন দিয়া কুমড়া ছাড়। উত্তমরূপে আংসাও। নুণ, হলুদ ও সর্ব্বপ্রকার বাটা ঝাল মিশাও। নাড়িয়া জল দাও। ফুটিলে কষান মাছ মিশাও। সুসিদ্ধ হইলে মাছ ভাঙ্গিয়া ঘাঁটিয়া মিশাইয়া দাও। পরে পিঠালী দিয়া আঁটিয়া লইয়া নসনসে করিয়া নামাও।

 বিলাতী কুমড়ার সহিত ইলিশ মাছ, কাঁকড়া, ছোট ছোট চিংড়ী মাছ অথবা বড় বড় চিংড়ী মাছের মুড়া দিয়া সুন্দর ঘণ্ট রাঁধা চলে।

১৮০। পালঙ শাকের ঘণ্ট

 রুই মাছের মুড়া-কাঁটা-গাদা দিয়া পালঙ ও বথুয়া, মটর প্রভৃতি শাকের ঘণ্ট যেমন ভাল হয়, শৈল মাছের মুড়া-কাঁটা দিয়াও তেমনই তাহা সুন্দর হইয়া থাকে। বলা বাহুল্য পালঙ ও বথুয়া শাকের সহিত শলুপ শাক মিশাইয়া লইতে হইবে।

১৮১। সারঙ্গ পুঁটী দিয়া মটর শাকের ঘণ্ট

 সারঙ্গ পুঁটীর সহিত মটর শাকের সুন্দর ঘণ্ট হয়। এই ঘণ্ট রাঁধিতে সারঙ্গ পুঁটী মাছের চোঁচা (আঁইষ) ফেলাইয়া দেওয়া প্রয়োজন করে না। উহা আঁইষ সহই কুটিয়া লইয়া ঘণ্টে দিতে পারা যায়।

 চিতল মাছের মুড়া ও কণ্ঠার যোগেও মটর শাকের উত্তম ঘণ্ট হয়।

১৮২। আনাজি কলার সহিত ইলিশ মাছের ঘণ্ট

 আনাজি কলা সিদ্ধ করিয়া খোসা ছুলিয়া ছানিয়া লও। ইলিশ মাছের মুড়া-কাঁটা প্রভৃতি কষাইয়া রাখ। সম্ভবপর হইলে ঐ তৈলেই জিরা, তেজ পাত, লঙ্কা ফোড়ন দিয়া আনাজি কলা ছাড়। আংসাও। নুণ, হলুদ দিয়া জল দাও। সিদ্ধ হইলে মাছ ভাঙ্গিয়া সমস্ত ঘাঁটিয়া মিশাইয়া দাও। বাটা ঝাল দাও। (ইলিশ মাছে ধনিয়া বাটা না দিলেও চলে)। পরে পিঠালী দিয়া আঁটিয়া লইয়া নামাও। তেজপাত ভাঙ্গিয়া কুটি কুটি না হয় তাহার ব্যবস্থা করিবে। ইহাতে তৈল একটু বেশী পরিমাণে দিবে।

 ইলিশ মাছ সহ আলু, কাঁঠাল বীচি, ওল, মান, বৈ-কচু, গড়আলু, শালুক প্রভৃতির ঘণ্ট এই প্রকারে রাঁধিবে। অপরাপর ঘণ্ট গরম গরম খাইতে ভাল, কিন্তু ইলিশ মাছ সহ এই সব আনাজের ঘণ্ট বাসী করিয়া খাইতেই অধিক ভাল লাগে।

 রুইমাছ যোগেও এই সব আনাজের ঘণ্ট রাধা যাইতে পারে।

১৮৩। ইলিশ মাছের সহিত ছাঁচী কুমড়ার ঘণ্ট

 রুই মাছের সহিত যেমন লাউয়ের ঘণ্ট মজে, ইলিশ মাছের সহিত তেমনি কচি ছাঁচী কুমড়া অথবা বুড়া শশার ঘণ্ট রাঁধিলে অতি উপাদেয় হয়। রুই মাছের সহিত কিন্তু কুমড়া অথবা শশার ঘণ্ট আদৌ মজে না।

 কচি ছাঁচী কুমড়া অথবা বুড়া দেখিয়া শশা লইয়া মিহি করিয়া কুট। ইলিশ মাছের মুড়া-কাঁটা নুণ হলুদ মাখিয়া কষিয়া রাখ। সম্ভবপর হইলে ঐ তেলেই জিরা, তেজপাত ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া কুমড়া অথবা শশা ছাড়। ইচ্ছা করিলে কুমড়া ও শশা একত্রে মিশাইয়াও ইলিশ মাছের সহিত ঘণ্ট রাঁধিতে পার। উত্তমরূপে আংসাও। নুণ, হলুদ দিয়া জল দাও। ফুটিলে কষান মাছ ছাড়। সিদ্ধ হইলে মাছ ভাঙ্গিয়া দিয়া সব বেশ করিয়া ঘাঁটিয়া মিশাইয়া দাও। বাটা ঝাল (ধনিয়া বাটা বাদ দিতে পার) মিশাও। শুকাইলে পিঠালী দিয়া আঁটিয়া নসনসে করিয়া নামাও।

 ইলিশ মাছের ‘ঘণ্টে’ আনাজের পরিমাণে মাছের ভাগ কম থাকিয়া শুধু মুড়া-কাঁটাতেই বেশ চলে, কিন্তু ‘ভাঙ্গায়’ সরিষার তেল ও মাছের ভাগ একটু বেশী থাকিলে তবে তাহা খাইতে সুস্বাদু হয়।

১৮৪। ইলিশ মাছের সহিত কচু-ডাঁটীর ঘণ্ট

 কচুশাকের মাইঝ পাতা ও কচি পাতার ডাঁটী লইয়া ছোট ছোট করিয়া কুট। ভাপ দিয়া জল গালিয়া ফেল। ইলিশ মাছের মুড়া-কাঁটা নুণ, হলুদ মাখিয়া কষাইয়া রাখ। তৈলে জিরা, কালজিরা, তেজপাত ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া কচু-ডাঁটী ছাড়। আংসাও। নুণ, হলুদ দিয়া অল্প জল দাও। ফুটিলে কষান মাছ ছাড়। সিদ্ধ হইলে মাছ ভাঙ্গিয়া দিয়া উত্তমরূপে সব ঘাঁটিয়া মিশাইয়া দাও। বাটা ঝাল মিশাও। পরে পিঠালী দিয়া আঁটিয়া নসনসে করিয়া নামাও।

 বরেন্দ্রে বর্ষাকালে বিবাহাদি ব্যাপারের ভোজে এই কচু-ঘণ্ট অন্নের সহিত পরিবেশন করা হইয়া থাকে।

 না’লের সহিত ইলিশ মাছ মিশাইয়া এই প্রকারে ঘণ্ট রাঁধা চলিবে।

১৮৫। কুচা চিঙড়ী মাছের সহিত লাউর ঘণ্ট

 লাউ সরু সরু করিয়া কুটিয়া লও। চিংড়ী মাছে নুণ হলুদ মাখিয়া তেলে কাও। ঐ তেলে জিরা, তেজপাত, লঙ্কা ফোড়ন দিয়া লাউ ছাড়। আংসাও। নুণ, হলুদ দিয়া জল দাও। ফুটিলে কষান চিঙড়ী মাছ ছাড়। সিদ্ধ হইলে বাটা ঝাল ও একটু চিনি দাও। (ধনিয়াবাটা বাদ দিতেও পার)। পরে পিঠালী দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া সব মিশাইয়া আঁটিয়া লইয়া নসনসে করিয়া নামাও। একটু ঘি দাও। ইহার সহিত নাড়িকেল কুড়া মিশাইলে স্বাদ উত্তম হইবে।

 বড় বড় চিঙড়ীমাছের মাথা এবং কাঁকড়া দিয়াও এই প্রকারে লাউর ঘণ্ট রাঁধিতে পার। বিলাতী কুমড়ারও চিংড়ী মাছের সহিত সুন্দর ঘণ্ট হয়। কেবল তাহাতে দুটো কালজিরা অতিরিক্ত ফোড়ন দিতে হয়। শান্তির শাকের সহিত কুচা চিঙড়ীর সুন্দর ঘণ্ট হয়।

 কুলকোবি, বাঁধাকোবি, ওলকোবি, স্কোয়াস প্রভৃতির সহিত চিঙড়ী মাছের উত্তম ঘণ্ট হইতে পারে।