বাঁশী/দশম পরিচ্ছেদ
দশম পরিচ্ছেদ।
সুধার ঘরে আসিয়া আগে আলো জ্বালিলাম। পরে। ভোলাকে এক স্থানে বসিতে বলিয়া, স্বয়ং সুধার বিছানার উপর সেই নলের নিকট গিয়া বসিলাম; এবং আলোক নিভাইয়া দিলাম।
আমার প্রায় ছয় হাত দূরে ভোলা বসিয়াছিল। আমি তাহাকে কোনরূপ শব্দ করিতে নিষেধ করিয়াছিলাম। সেও নির্দিষ্ট স্থানে চুপ করিয়া বসিয়া রহিল। আমার হাতে এক গাছি মোটা লাঠী ও একটী দেশলাই ছিল। ভোলা আমার হাতে লাঠী দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “আপনার হাতে লাঠী কেন?”
আমি হাসিয়া উত্তর করিলাম, “যদি তুই আমার কথা না শুনি, এই লাঠী তোর পিঠে পড়বে।”
ভোলার ভয় হইল, বলিল, “আমি আপনাকে বেশ চিনি। এ পর্যন্ত আপনি কখনও কোন চাকরের গায়ে হাত তুলেন না।”
আমি বলিলাম, “যদি তাই জানি, তবে চুপ করে বসে মজা দেখ। তোদের বাবু কত বড় ভয়ানক লোক এখনই জানতে পারবি।”
ভোলা আর কোন কথা কহিল না। যখন আমরা সুধার ঘরে আসিলাম, তখন ঘড়ীতে বারটা বাজিল। তখনও, অনেক বিলম্ব ছিল বটে, কিন্তু আমি কোনমতে নিশ্চিন্ত হইয়া ঘুমাইতে পারিলাম না। খানিক পরে ভোলা আস্তে আস্তে আমার নিকট আসিয়া চুপি চুপি জিজ্ঞাসা করিল, “এখন আলোটা জ্বলিয়া দিব?”
আ। না না, এমন কাজ করি না। ভো। অন্ধকারে বড় কষ্ট হইতেছে। বিশেষতঃ এক ঘুমের সময়, তাহার উপর ঘর অন্ধকার। ইহাতে সহজেই আমার ঘুম পাইতেছে।
আ। আলো জ্বাললে এখনই তোর বাবু সন্দেহ করবে।
ভো। তিনি ত উপরের ঘরে। তাহার উপর তিনি আজ বড় অসুস্থ। আপনি যে এই ঘরে আলো জ্বালিয়াছেন, একথা তিনি কিরূপে জানিতে পারিবেন?
আ। তোর মনিব বেশ সুস্থ আছেন, তিনি যে ভয়ানক কার্য্যে নিযুক্ত হয়েছেন, তা শেষ করবার জন্যই তিনি আপনাকে অসুস্থ বলে রাষ্ট করেছেন। তিনি এখন উপরের গৃহে জেগে বসে আছেন, কেবল সুযোগ অন্বেষণ করছেন। আমি এখানে আলো জ্বাললে তিনি জানতে পারবেন।
ভো। কি করিয়া জানিতে পারিবেন?
অ এই নলের সাহায্যে। ঐ কার্য্যের জন্যই এই নলটা সম্প্রতি এখানে বসান হয়েছে। ভোলা আর কোন উত্তর করিল না। আমরা দুইজনে নিঃশব্দে সেখানে বসিয়া রহিলাম। দেখিতে দেখিতে একটা দুইটা ও তিনটা বাজিয়া গেল;কোনরূপ গোলযোগ বা কোন প্রকার শব্দ শুনিতে পাইলাম না।
সহসা সেই ভয়ানক নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করিয়া, হিস হিস শব্দ। আমার কর্ণগোচর হইল। শব্দ শুনিয়া আমার বোধ হইল যে, সেই নলের ভিতর হইতেই ঐরূপ শব্দ আসিতেছে। ক্রমে সেই শব্দ যেন নিকটবর্তী হইতে লাগিল। আমার হাতেই দেশলাই ছিল; আমি তৎক্ষণাৎ জ্বালিয়া ফেলিলাম। যাহা দেখিলাম, তাহাতে আমার অন্তরাত্মা শুকাইয়া গেল। এক ভয়ানক বিষাক্ত কৃষ্ণবর্ণ কেউটে সাপ সেই নলের মুখ হইতে ফোঁস ফোঁস শব্দ করিতে করিতে ধীরে ধীরে বাহির হইতেছে। আমি পূর্ব্বেই ঐরূপ সন্দেহ করিয়াছিলাম এবং সেই জন্য সেই মোটা লাঠী গাছটীও সংগ্রহ করিয়া রাখিয়াছিলাম। ভোলাকে ইঙ্গিত করিয়া, সেই সর্প দেখাইয়া, আমার হাতের লাঠী দিয়া তিন চারিবার সজোরে আঘাত করিলাম। সাপ নিস্তেজ হইয়া পড়িল। ভোলা আমার কার্য্য দেখিয়া চমৎকৃত হইল,—ভয় করিল না। সেও ঘরের ভিতর হইতে এক গাছি লাঠি লইয়া সাপকে তাড়না করিল। উভয়ের বারম্বার আঘাতে সাপটা প্রায় মর মর হইল। তখন সাপটাকে উত্তমরূপে বাঁধিয়া একস্থানে লুকাইয়া রাখিলাম।
আমার এই কার্য্য শেষ হইতে না হইতে বাঁশীর শব্দ শুনিতে পাইলাম। তখনই বলিলাম, “ভোলা। আমার সহিত শীগগির আয়?”
ভো। কোথায়?
আ। আমাদিগের নিজ নিজ থাকিবার স্থানে।
আমি ভোলাকে লইয়া সেই স্থান হইতে বাহিরে আসিলাম, ও ভোলাকে আপন স্থানে শয়ন করিতে কহিলাম। সেও নির্দিষ্ট স্থানে শয়ন করিল। আমি ঐ স্থান হইতে দ্রুতপদে বাহির হইয়া, আমার উর্দ্ধতন কর্মচারীর নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলাম ও তাহাকে সমস্ত বৃত্তান্ত আগাগোড়া কহিলাম। তিনি সমস্ত অবস্থা শুনিয়া, অতিশয় বিস্মিত হইলেন ও কহিলেন, “এরূপ অবস্থায় প্রাণকৃষ্ণ বাযুকে ধৃত করাই কর্তব্য। কারণ, এখন বেশ বোধ হইতেছে, সুধার ভগ্নী সপভ্রষ্ট হইয়াই ইহজীবন পরিত্যাগ করিয়াছে ও তাহার মৃত্যুর কারণই প্রাণকৃষ্ণ। যাহাতে তাহার ঘরের অর্থ বাহির হইয়া না যায়, এই নিমিত্তই তিনি তাহাকে হত্যা করিয়াছেন। এখন যদিও বেশ বুঝিতে পারা যাইতেছে যে, প্রাণকৃষ্ণই তাহাকে হত্যা করিয়াছে, কিন্তু এত দিবস পরে ঐ হত্যা প্রমাণ করা সহজ না হইলেও, তাহাকে কিন্তু ধৃত করিয়া আর একবার অনুসন্ধান করিয়া দেখা কর্তব্য।”
আমার প্রধান কর্মচারী আমাকে এইরূপ বলিয়া নিজেই আমার সহিত সেইস্থানে যাইতে প্রস্তুত হইলেন ও উপযুক্তরূপ আরও কয়েকজন কর্মচারী ও প্রহরী সঙ্গে লইয়া আমার সহিত প্রাণকৃষ্ণ বাবুর বাড়ীতে উপস্থিত হইলেন। যখন আমরা সেইস্থানে উপস্থিত হইলাম, তখন ৬টা বাজিয়াছে, ভোলাকে জিজ্ঞাসা করিয়া জানিতে পারিলাম যে, প্রাণকৃষ্ণ বাবু এখনও গাতোত্থান করেন নাই; ও বাড়ীর অনেকেই এখনও পর্যন্ত নিদ্রার।
আমরা সকলে একেবারে প্রাণকৃষ্ণ বাবুর বাটীর ভিতর প্রবেশ করিলাম। আমি বাড়ীর অবস্থা সমস্তই জানিতাম, সুতরাং প্রাণকৃষ্ণ বাবুর গৃহে গমন করিতে আমাদিগের কোন রূপ কষ্ট হইল না, আমরা সকলে একেবারে তাহার গৃহদ্বারে উপনীত হইলাম। |
তাঁহার কক্ষ তখনও পর্যন্ত রুদ্ধ ছিল। আমার প্রধান কর্ম্মচারী তাহার দ্বারে দণ্ডায়মান হইয়া তাহাকে বার বার ডাকিতে লাগিলেন, কিন্তু প্রাণকৃষ্ণ বাবুর কোনরূপ উত্তর পাওয়া গেল। ক্রমে বাড়ীর ও প্রতিবেশীবর্গের অনেকেই আসিয়া সেই স্থানে উপস্থিত হইলেন; তাহারাও প্রাণকৃষ্ণ বাবুকে বার বার ডাকিলেন কিন্তু কোনরূপই তাঁহার উত্তর পাওয়া গেল না। তখন অনন্যোপায় হইয়া সেই কর্মচারী ঐ কক্ষদ্বার ভাঙ্গিয়া উহার ভিতর প্রবেশ করিলেন। বলাবাহুল্য, আমিও সেই সঙ্গে ঐ কক্ষ মধ্যে প্রবেশ করিলাম। উহার ভিতর প্রবেশ করিয়া যাহা দেখিলাম, তাহাতে সকলেই একেবারে বিষ্মিত হইয়া পড়িলেন।
যে সময় আমি আমার উর্দ্ধতন কর্ম্মচারীর সহিত সেইস্থানে আগমন করিয়াছিলাম, সেই সময় অমরেন্দ্র বাবুকেও সংবাদ প্রদান করিয়া আসিয়াছিলাম। কিয়ৎক্ষণ পরে তিনিও আসিয়া সেইস্থানে উপস্থিত হইলেন; ও আমাকে সেইস্থানে দেখিতে পাইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন,——
“মহাশয়! খবর কি?”
আমি হাসিতে হাসিতে উত্তর করিলাম, “খবর, ভাল। আপনি যেরূপ সন্দেহ করিয়াছিলেন, ব্যাপার বাস্তবিকই সেইরূপ। গত রাত্রে প্রাণকৃষ্ণ বাবুর সমস্ত চাতুরী প্রকাশ পাইয়াছে।”
অমরেন্দ্রনাথ আশ্চর্যান্বিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “সুধা যে শব্দ শুনিতে পাইয়াছিল, তাহা কি?”
আ। ভয়ানক বিষাক্ত সাপের শব্দ। প্রাণকৃষ্ণ বাবু সর্প বশীকরণে বিশেষ পারদর্শী। তাঁহার সহিত অনেক সাপুড়েরও আলাপ আছে। তিনি ভ্রাতুষ্কন্যা, দুইটীকে কৌশলে হত্যা করিবার জন্য বাড়ীতে বিষাক্ত সর্প রাখিতেন। অ। আপনি কি সাপ স্বচক্ষে দেখিয়াছেন?
আ। নিশ্চয়ই। যে সর্প সম্ভবত আপনার ভাবী বধুমাতাকে দংশন করিত, তাহাকে মারিয়া ফেলিয়াছি।
অ। সুধা যে বাঁশীর শব্দ শুনিতে পাইত, তাহাই বা কিসের?
প্রাণকৃষ্ণ বাবু সর্প গুলিকে এরূপ শিখাইয়াছিলেন যে, সেই বাণীর স্বর শুনিলেই তাহারা যথাস্থানে ফিরিয়া যাইত।
অ। কেন তিনি এমন নিষ্ঠুরের কাজ করিতেন?
আ। অর্থলোভ;—ভ্রাতুষ্কন্যাগণের বিবাহ হইলে তাহাকে অনেক টাকা দিতে হয়। আমরা যখন সেই ঘরের মধ্যে প্রবেশ। করিলাম, সেই সময় ঐ স্থানের কয়েকজন লোক ও অমরেন্দ্র বাবু আমাদিগের সহিত ঐ ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়াছিলেন। ঘরের ভিতর প্রবেশ করিয়াই দেখিলাম, প্রাণকৃষ্ণ বাবু সেই ঘরের মধ্যে মৃত্তিকার উপর অচৈতন্য অবস্থায় পড়িয়া আছেন। তাঁহার কি অবস্থা হইয়াছে জানবার নিমিত্ত যেমন তাহার নিকট গমন করিলাম, অমনি ভয়ানক সপগর্জন শব্দ সকলের কানে প্রবেশ করিল। সকলে অতিশয় বিস্মিত হইয়া, কেহ বা ভয়ে ঘরের বাহিরে আসিয়া উপস্থিত হইলেন; কেহ বা কিসের শব্দ জানিবার নিমিত্ত সেইস্থানে একটু দাড়াইলেন।
সেই সময় দেখিতে পাওয়া গেল, ঐ ঘরের এক প্রান্তে একটা ভয়ানক বিষধর তাহার ফণা প্রায় দেড় হস্ত উথিত করিয়া, দক্ষিণ ও বামে সঞ্চালিত পূর্ব্বক ভয়ানক গর্জন করিতেছে।
এই অবস্থা দেখিয়া আমরা অতিশয় বিস্মিত হইলাম; ও দ্রুতবেগে সকলেই সেই ঘর হইতে বহির্গত হইলাম। আমাদিগের এই অবস্থা দেখিয়া, প্রধান কর্মচারী সাহেবও ঐ ঘরের বাহিরে আসিবেন ও আমাদিগের সকলকেই সেই স্থান হইতে দূরে গমন করিতে কহিলেন। তাঁহার কথা শুনিয়া সকলেই সুদূরে গমন করিল, কেবল আমি তাহার পশ্চাতে রহিলাম। সাহেব তাহার পকেট হইতে একটা পাঁচনলা পিস্তল বাহির করিয়া, ঐ সর্পের মস্তক লক্ষ্য করিয়া দূর হইতে এক গুলি করিলেন। কিন্তু ঐ গুলি ব্যর্থ হইয়া গেল। পুনরায় দ্বিতীয়বার গুলি করিলেন, তাহাও ব্যর্থ হইল। তৃতীয় গুলিতে উহার মস্তক চূর্ণ হইয়া গেল, কিন্তু তাহার বিক্রমের কিছুমাত্র হ্রাস হইল না, সেই মস্তকহীন সর্প সেই ঘর আলোড়িত করিতে লাগিল। তখন আমরা উভয়ে দুই গাছি মোটা লাঠী হস্তে ঐ ঘরের ভিতর প্রবেশ করিলাম ও লগুড়াঘাতে ঐ সর্পের জীবন নাশ করিলাম।
প্রাণকৃষ্ণ বাবুকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে পাঠাইয়া দিলাম। তিনি হাসপাতালে গমন করিলে ঐ ঘরের ভিতর উত্তমরূপে অনুসন্ধান করিলাম, কিন্তু আর সর্প দেখিতে পাইলাম না; তাহাদিগের আহারীয় দুগ্ধ ও রম্ভা প্রভৃতি স্থানান্তরিত করিয়া ফেললাম। দুইটা বাঁশের ঝুড়ি শূন্য অবস্থায় দেখিতে পাইয়া বুঝিলাম, সর্প দুইটা উহাতেই রক্ষিত হইত।
হাসপাতালে ডাক্তারগণ উহাকে বাঁচাইবার নিমিত্ত অনেক চেষ্টা করিলেন, কিন্তু কোনরূপেই কৃতকার্য হইতে পারিলেন না। কেবল একবারমাত্র প্রাণকৃষ্ণের জ্ঞান হইয়াছিল, তাহাও অতি অল্প সময়ের নিমিত্ত। সেই সময় তিনি ডাক্তারের সমক্ষে কেবল এইমাত্র বলিয়াছিলেন যে, “অর্থের নিমিত্ত আমি যে কার্য্য করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলাম, তাহার উপযুক্ত ফল পাইয়াছি। সর্পের দ্বারা দংশিত করাইয়া সুধার ভগ্নীকে হত্যা করিয়াছিলাম; সুধাকেও সেইরূপে নষ্ট করিবার চেষ্টা করিয়াছিলাম, কিন্তু ঈশ্বর হাতে হাতে তাহার ফল প্রদান করিয়াছেন। সুধাকে দংশন করিবার নিমিত্ত একটী সর্পকে নল দিয়া তাহার ঘরে নামাইয়া দিয়াছিলাম, কিন্তু অনেকবার বংশীধ্বনি করিয়াও যখন দেখিলাম, সেই সর্প আর প্রত্যাগমন করিল না, অথচ সুধা জীবিত আছে, তখন দ্বিতীয় সর্পটি পুনরায় তাহার ঘরে প্রবেশ করাইয়া দিবার নিমিত্ত যেমন উহাকে তাহার ঝুড়ি হইতে বাহির করিতে গেলাম, অমনি সে আমাকে ভীষণরূপে দংশন করিল, আমিও অচৈতন্য হইয়া সেইস্থানে পতিত হইলাম। আমি যেরূপ কার্য্য করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলাম, তাহার উপযুক্ত ফল প্রাপ্ত হইয়াছি।”
এই কয়টী কথা বলিবার পরই প্রাণকৃষ্ণ বাবু পুনরায় অচৈতন্য হইয়া পড়িলেন ও তাহার আর কোনরূপেই চৈতন্য সঞ্চার হইল না।
প্রাণকৃষ্ণ বাবু ইহ-জীবন পরিত্যাগ করিয়া আমাদিগের হস্ত হইতে নিষ্কৃতি লাভ করিলেন। কিন্তু তাহার সেই ভীষণ চরিত্রের কথা কাহারও জানিতে বাকী রহিল না। সামান্য অর্থের লোভে জগতে যে কিরূপ ভয়ানক কার্য্য হইতে পারে, তাহার ভূরি ভূরি দৃষ্টান্ত বর্তমান থাকিলেও, এই আর একটা জাজ্জ্বল্যমান দৃষ্টান্ত সকলের মনে জাগরূক রহিল।
অমরেন্দ্র বাবুর পুত্রের সহিত সুধার বিবাহ সম্বন্ধ প্রাণকৃষ্ণ বাবু স্থির করিয়া গিয়াছিলেন, তাহার স্ত্রী তাহার স্বামীর ইচ্ছা হির রাখিয়া, অশৌচান্তে শুভদিনে শুভলগ্নে ঐ বিবাহ কার্য্য সম্পন্ন করাইয়া দিলেন। প্রাণকৃষ্ণ বাবু যে সকল বিষয় রাখিয়া গিয়াছিলেন, তাহা হিন্দু আইন অনুসারে, সুধা ও প্রাণকৃষ্ণ বাবুর পুত্রের মধ্যে বিভাগিত হইয়া গেল, কিন্তু প্রাণকৃষ্ণ বাবু যে সমস্ত নগদ টাকা ও অলঙ্কারপত্র রাখিয়া গিয়াছিলেন, তাহার বিন্দুমাত্রও সুধা প্রাপ্ত হয় নাই। লোকে কাণা-ঘুষা করিয়াছিল—ঐ সমস্ত অর্থ ও অলঙ্কার তাহার স্ত্রী আত্মসাৎ করিয়াছিল।
সমাপ্ত।