বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড)/৭
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
---|---|---|
ভারতের মাটিতে গোলা নিক্ষেপের জন্য পাকিস্তানের প্রতি ভারতের সতর্কবাণী | দৈনিক ‘আনন্দবাজার’ | ২৫ এপ্রিল, ১৯৭১ |
ভারতের মাটিতে গোলা ফেলা বন্ধ কর নতুবা
পরিণামের জন্য দায়ী হবে: পাকিস্তানের প্রতি সতর্কবাণী
ভারতীয় সীমান্ত বনগাঁর কাছে শনিবার সকালে পাকিস্তানী গোলা এসে পড়েছে। তাছাড়া এক কোম্পানি পাকফৌজ নিষিদ্ধ সীমার পাঁচ কিলোমিটার ভীতরে এসে পেটরাপোলে রেল লাইনের কাছে অবস্থান নিয়ে, শনিবার বিকালে চারটে থেকে এক ঘণ্টা ধরে ভারতীয় গ্রামগুলির উপর গুলি চালায়। পরে তারা বেনাপোলে হটে যায়। নয়াদিল্লী থেকে এর বিরুদ্ধ তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। দাবি করা হয়েছে যে, পাকিস্তানকে কথা দিতে হবে যে, এ ধরনের ব্যাপার আর ঘটবে না, আর না হলে সম্ভাব্য পরিণাম যা ঘটবে তার জন্য পাকিস্তান দায়ী হবে।
সকালে পাকফৌজ ভারতীয় সীমান্তের (বনগাঁ) ওপারে মুক্তিফৌজের শিবির লক্ষ্য করে মরটার চালায়। তারই কয়েকটি গোলা ভারতীয় এলাকায় এসে পড়েছিল। দ্বিতীয় ঘটনাটি আরও গুরুতর।
বহির্বিষয়ক মন্ত্রক পাক হাইকমিশনকে ওই ঘটনাগুলির প্রতিবাদে যে নোট পাঠিয়েছেন তা রীতিমত কড়া ধাঁচের। এছাড়া অন্য একটি নোটে পাকিস্তানকে জানানো হয়েছে যে, ভারতের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর লোকেরা কখনই পাকিস্তানে প্রবেশ করেননি। এ বিষয়ে পাকিস্তানের ১৪ এপ্রিল তারিখের অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। অর্থাৎ আজ ভারত পাকিস্তানকে দুইটি নোট পাঠিয়েছে।
ভারত আরও বলেছে যে, অপহৃত তিনজন সীমান্তরক্ষীকে ফেরত দিতে হবে এবং অপহরণকারীদের (যারা পাকফৌজের লোক) উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
ভারত আরও জানিয়েছে যে, ১২ এপ্রিল রাত এগারোটায় পাকফৌজ সোনামুরার কাছে ত্রিপুরার উপমন্ত্রী শ্রী মনসুর আলীর বাড়ীর উপর গুলি চালিয়েছিল এবং ১৪/১৫ এপ্রিল রাত্রে ওই অঞ্চলে কর্তব্যরত নায়ক মণিকুমারকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছিল। ১৭ এপ্রিল ওই অঞ্চলে আরও কয়েকজন ভারতীয় নাগরিকের আবাসের উপর পাকিস্তানীরা গুলি চালিয়েছিল। ভারত এইসব ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং বলেছে যে, সে পাকিস্তানের কাছে এ জন্য ক্ষতিপুরণ দাবি করতে পারে। এ ধরনের ব্যাপার বন্ধ না হলে যা পরিণাম ঘটবে পাকিস্তান সে জন্য এককভাবে ও সম্পূর্ণভাবে দায়ী হবে।