বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র/মহাত্মার বিরুদ্ধাচরণ
মহাত্মার বিরুদ্ধাচরণ
কংগ্রেসের কলিকাতা অধিবেশনে সুভাষচন্দ্র মহাত্মা গান্ধীর আপোষ রফামূলক প্রস্তাবের তীব্র প্রতিবাদ করেন। তিনি বলিয়াছিলেন “স্বাধীনতা আমরা চাই, এ স্বাধীনতা আমাদের অদূর ভবিষ্যতের আদর্শ নহে, বর্ত্তমানেই আমাদের দাবী স্বাধীনত।”[১] তিনি আরও বলিয়াছিলেন “বাঙ্গালাদেশের জাতীয় আন্দোলনের প্রথম সূত্রপাত হইতেই আমরা স্বাধীনতা অর্থে পূর্ণ স্বাধীনতাই বুঝিয়াছি—ঔপনিবেশিক স্বায়ত্বশাসন কখনই বুঝি নাই। আমাদের বহু দেশবাসীর আত্মবিসর্জ্জনে আমরা স্বাধীনতার অর্থ পূর্ণ স্বাধীনতাই বুঝিয়াছি। ঔপনিবেশিক স্বায়ত্ব-শাসনের কথায় আমাদের দেশবাসীর মনে—বিশেষতঃ তরুণ সম্প্রদায়ের মনে কিছুমাত্র সাড়ার সৃষ্টি হইবে না।” এই অধিবেশনে তাঁহার প্রস্তাব অগ্রাহ্য হওয়ায় তিনি পরে পণ্ডিত জহরলাল ও শ্রীযুক্ত শ্রীনিবাস আয়েঙ্গার প্রমুখ স্বাধীনতাবাদী নেতৃগণকে লইয়া “নিখিলবঙ্গ স্বাধীনত সঙ্ঘ” গঠন করেন। পূর্ণ স্বাধীনতার আদর্শ প্রচার করাই এই সঙ্ঘের উদ্দেশ্য ছিল।
১৯২৭ সাল হইতে ১৯২৯ সাল পর্য্যন্ত সুভাষচন্দ্র বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সমিতির সভাপতি ও নিখিলভারত রাষ্ট্রীয় সমিতির জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি নেহেরু কমিটির সভ্যও হইয়াছিলেন। ১৯২৯ সালে তিনি নিখিলভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের প্রেসিডেণ্ট নির্ব্বচিত হইয়াছিলেন; এবং ১৯৩১ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত তিনি এই পদে কার্য্য করিয়াছিলেন।
১৯২৯ সালের জুন মাসে সুভাষচন্দ্র বঙ্গীয় কাউন্সিল নির্ব্বাচনে কংগ্রেস কর্ম্মিগণকে পরিচালনা করেন। এপ্রেল মাসে কাউন্সিল ভঙ্গ হয় এবং অধিকাংশ কগ্রেস কর্ম্মী বিনা বাধায় কাউন্সিলের সদস্য নির্ব্বাচিত হন।
- ↑ We stand for indipendence not in the distant future, but as our immediate objective.
The Calcutta Municipal Gazette Vol XCII No 16 P422.