বিবিধ প্রসঙ্গ/ঘর ও বাসাবাড়ি

ঘর ও বাসাবাড়ি।

 দশের চোখের উপরে যে দিন রাত্রি বাস করিতে চাহে, পরের চোখের উপরেই যাহার বাড়ি ঘর, তাহার আর নিজের ঘর বাড়ি নাই। সেই জন্যই সে রং চং দিয়া পরের চোখ কিনিতে চায়, সেখান হইতে ভ্রষ্ট হইলেই সে ব্যক্তি একেবারে নিরাশ্রয় হইয়া পড়ে। ইহারা বাসাড়ে লোক, খাম‍্খেয়ালী ঘরওয়ালা উচ্ছেদ করিয়া দিলে ইহাদের আর দাঁড়াইবার জায়গা থাকে না। কিন্তু ভাবুক লোকদিগের নিজের একটা ঘর বাড়ি আছে, পরের চোখ হইতে বিদায় হইয়া তাহার সেই নিজের ঘরের মধ্যে আসিলেই সে যেন বাঁচে। ভাবুক লোকেরা যথার্থ গৃহস্থ লোক। আর যাহারা নিজের মনের মধ্যে আশ্রয় পায় না, তাহারা কাজেই পরের চক্ষু অবলম্বন করিয়া থাকে ও রংচং মাখিয়া পরের চক্ষুর খোষামোদ করিতে থাকে। ভাবুকদিগের নিজের মনের মধ্যে কি অটল আশ্রয় আছে! এই জন্যই দেখা যায়, ভাবুক লোকেরা বাহিরের লোক জনের সহিত বড় একটা মিশিতে পারেন না, কণ্ঠাগ্র ভদ্রতার আইন কানুনের সহিত কোন সম্পর্ক রাখেন না। যেখানে চল্লিশ জন অলস ভাবে হাসিতেছে, সেখানে তিনি একচল্লিশ হইয়া তাহাদের সহিত একত্রে দন্ত বিকাশ করিতে পারেন না। দশ ব্যক্তির মধ্যে একাদশ হইবার ঐকান্তিক বাসনা তাঁহার নাই।