বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি/১০
সন্ন্যাসীর চিঠি।
(১০)
মহামায়ার কৃপায় আমি দেশে ফিরে এসেছি। বেঁচে গেছি হাড় জুড়িয়েছে। কি আড়ষ্ট হোয়েই না বিলেতে থাক্তে হোতো। সকাল বেলা বুট সুট এঁটে শয়ন-ঘর থেকে যে বেরুনো―আবার সেই শোবার সময় রাত্রিতে রাজ-সাজ খোলা। সমস্ত দিন মোজাবন্ধ কোমরবন্ধ গলাবন্ধ প্রভৃতি নানারূপ বন্ধে প্রাণ ওষ্ঠাগত। খাবার সময় যে একটু হাঁ করে খাবো তার যো নেই। আবার যদি খেতে খেতে আওয়াজ হয়—একটু সপ্―সপ্―চপ্―চপ্―মড়―মড় বা কট্ কট্—তা হোলে নিন্দার আর সীমা থাকে না। এখানে ঘরে এসে হাঁ করে খেয়ে বাঁচ্চি। আর দধি সন্দেশের হাপ্রানি-ধ্বনি প্রাণটাকে আবার মধুময় কোরে তুলেছে।
দেশে এসে বিশুদ্ধ বাঙ্গালি খাওয়া খেতে বড়ই স্পৃহা হয়েছিল। আমার ঘর দোর নাই তবে গৃহস্থ বন্ধু বান্ধবদের কৃপায় সব খেদ ঘুচে গেছে। আহা সজ্নে সড়সড়ি কি মিষ্টি—যেন বিরহীর পুনর্ম্মিলন সুখের আভাস পাওয়া যায়
সজনে শাগ্ বলে আমি সকল শাগের হেলা।
আমার ডাক পড়ে কেবল টানাটানির বেলা।
সজ্নে―বাস্তবিকই তুমি বিপন্নের বন্ধু। আবার লাউডগা ভাতে―কচুর শক মোচার ঘণ্ট ও কচি আমড়ার টক খেয়ে মনে করেছি যে পারতপক্ষে বঙ্গমাতার কোল ছেড়ে আর কোথাও যাব না। বন্ধুদের কৃপা আমড়ার টকের চেয়েও ঢের বেশী দূর গড়িয়েছে। কাঁচা গোল্লা রসগোল্লা ক্ষীর পায়েস ইত্যাদি চর্ব্ব্য চুষ্য লেহ্য পেয়ের দ্বারা রসনা পরিতৃপ্ত করেছি। হা হতভাগ্য ইংরেজ তোমার কপালে রসগোল্লা নেই তাই ভেবে ভেবে আমার ঘুম হয় না। তুমি হিন্দু দর্শন পড়িবে স্বীকার করেছ। কিন্তু তোমার আড়ষ্ট জিভ যদি কোন দিন জামাই-তত্ত্ব রসগোল্লার রসে সাঁতার দেয়—তুমি বুঝ্তে পারবে যে আর্য্যজাতি কত মহৎ এবং কত রসিক।
দুই একজন ব্রাহ্ম বন্ধু আমার বঙ্গবাসীর চিঠিতে কুরুচি আছে বলিয়া বিরক্ত হইয়াছেন। কোন এক ভদ্রলোকের বাগানে একটি বকুল গাছ আছে। একটি ব্রাহ্ম প্রতিবাদ করেন যে ঐ অশ্লীল বৃক্ষটি রাখা উচিত নহে। ভদ্রলোকটি বলেন যে বকুল গাছের থাকা না থাকার বন্দোবস্ত করা যেতে পারে কিন্তু ঐ বকুলে যে একটি অশ্লীল পাখী অর্থাৎ কোকিল এসে বসে তার উপায় কি। আমিও তদ্রূপ নিরুপায়। প্রণয় বিরহ বা রূপমধু-পান ইত্যাদি প্রয়োগ প্রবাসীর চিঠিতে অনিবার্য্য। যাহা হউক এখন তর্ক বিতর্ক ছেড়ে একটা আসল কথা বলি।
য়ুরোপীয়দিগের প্রায়ই এই বিশ্বাস ক্রমে দৃঢ় হইতেছে যে শ্বেতাঙ্গ জাতি মানবকুল-শ্রেষ্ঠ। অন্যান্য জাতি―গৌর শ্যাম ও কৃষ্ণ—তাহাদিগের দাসত্ব করিতে জন্মিয়াছে। এই প্রভুত্বের আকাঙ্ক্ষা ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাইতেছে। ইহা যেন একটা আসুরিক ভাব। ইহা পৃথিবীতে অনেক অমঙ্গল আনিয়াছে ও আনিবে। এই ভাব প্রবল হইলে ভারতের যে কি হানি হইবে তাহা প্রকাশ করা কঠিন। এই বিপদ কাটাইবার জন্য একটি উপায় অনেক দিন ধোরে আমার মনে হইতেছে। যদি ভারত পুরাকালের ন্যায় আবার পৃথিবীর গুরুপদে প্রতিষ্ঠিত হয়—যদি ইয়ুরোপ হোতে ছাত্র সকল ভারতবর্ষে দর্শন ন্যায় স্মৃতি সাহিত্য পাঠ করিতে আসে তাহা হইলে ভারতের প্রতি পাশ্চাত্য জগতের শ্রদ্ধা হইবে ও ঐ আসুরিক ভাবের হ্রাস হইবে। ভারত যে এখনও জগতের গুরুস্থানীয় তাহার আর সন্দেহ নাই। তবে ভারতের আত্মবিস্মৃতি ঘটিয়াছে তাই আজ অর্দ্ধশিক্ষিত ইংরেজ ভারতবাসীদিগকে কাউপার (Cowper) ও পোপ (Pope) মুখস্থ করাইয়া সাহিত্য শিখাইতেছে ও মারটিনোর [Martineau] ব্যাখা করিয়া দর্শন শাস্ত্র উপদেশ দিতেছে। ইহা অপেক্ষা লজ্জাকর বিষয় আর কি আছে। এই আত্মবিস্মৃতি কিসে যায়। আমি ভাবিলাম আমাদের শাস্ত্রবিদ্যা শিখিতে ইংরেজের যদি আগ্রহ হয় তাহা হইলে ভারতের আত্মবিস্মৃতি দূর হইবে ও ইংরেজেরও মঙ্গল হইবে। তজ্জন্য বিলাত-যাত্রা করিয়াছিলাম। গিয়া দেখি মোক্ষমূলর প্রভৃতি সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতদিগের প্রয়াসে ভারতের কিছু সম্মান বাড়িয়াছে বটে―কিন্তু সে সম্মান না হওয়া ভাল ছিল। ইংরেজের ধারণা জন্মিয়াছে যে হিন্দুজাতি এক সময়ে বড় ছিল কিন্তু এখন মরিয়া গিয়াছে। কেবল তাহার ঠাটমাত্র বজায় আছে। যেমন পুরাতত্ত্ববিৎ পণ্ডিতেরা মিউজিয়মে কোন একটা প্রকাণ্ড জানোয়ারের কঙ্কাল দেখিতে যান ও বিচার করেন যে এই জীব কতদিন বাঁচিয়াছিল—কেনই বা এখন লোপ পাইয়াছে—তদ্রূপ য়ুরোপীয় পণ্ডিতেরা আমাদের বিষয়ের আলোচনা করেন। আমরা এককালে বড় ছিলাম। কিন্তু এখন সভ্যজগতের কাছে আমরা একটা কৌতুহলোদ্দীপক বস্তু হোয়ে দাঁড়িয়েছি। আমি এই সংস্কার দূর করিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছি। আমি দেখাইয়াছি যে হিন্দুজাতি এখনও জীবন্ত। সহস্র সহস্র বৎসর হইয়া গিয়াছে তথাপি কালের প্রভাবে হিন্দু বিনাশ প্রাপ্ত হয় নাই। কত সভ্য জাতি ধ্বংসপুরে প্রয়াণ করিয়াছে কিন্তু হিন্দুজাতি মরণকে অতিক্রম করিয়া অদ্যাপি জীবিত রহিয়াছে। উৎপত কত শোষণ কত বিপ্লব ভারতকে বিতাড়িত ও বিক্ষুব্ধ করিয়াছে। অন্য কোন দেশ ভারতের ন্যায় প্রপীড়িত ও দলিত হইয়াছে কি না সন্দেহ। তবুও হিন্দু সপ্রাণ ও সতেজ। ইহার কারণ কি। বেদান্ত প্রতিপাদিত অদ্বৈতজ্ঞান হিন্দুর একমাত্র অবলম্বন ও চির সহায়। হিন্দুর যােগ-দর্শন স্মৃতি-সাহিত্য-বিধি-ব্যবস্থা আচার-ব্যবহার-সংস্কার অদ্বৈতামৃতরসে পরিপুষ্ট। অদ্বৈতমুখীন নিষ্কাম ধর্ম্মপালনে হিন্দু রক্ষিত ও বর্দ্ধিত হইয়াছে। আমার এইরূপ ব্যাখা শুনিয়া কামব্রজ (Cambridge) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা প্রীত ও বিস্মিত হইয়াছিলেন। হিন্দু দর্শন তথায় নিয়মিত রূপে পঠিত ও আলােচিত হয়—এই উদ্দেশ্যে তাঁহারা একটী কমিটি গঠিত করিয়াছেন। একজন উপযুক্ত হিন্দু পণ্ডিত প্রেরিত হইলে এই কমিটি তথাকার বিশ্ববিদ্যালয় হইতে ইহাঁকে তিন বৎসরের জন্য হিন্দুদর্শনের অধ্যাপকরূপে নিযুক্ত করাইবেন। নয় হাজার টাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদান করিতে হইবে। এই নয় হাজার টাকা অধ্যাপকের বেতন স্বরূপ —বার্ষিক তিন হাজার টাকা করিয়া তিন বৎসর দেওয়া হইবে। আছেন কি কোন মহাজন যে এই নয় হাজার টাকা ভারতের গৌরব বৃদ্ধি করিতে প্রস্তুত। বিলাতে হিন্দুর দ্বারা হিন্দু দর্শন অধ্যাপিত হইলে আমাদের আত্মবিস্মৃতি ঘুচিতে পারে ও ভারত যে সকল জাতির গুরু তাহার প্রমাণ প্রয়ােগ আরম্ভ হইবে। কিন্তু যতদিন না য়ুরােপীয়েরা ভারতে হিন্দুর জ্ঞান ও ব্যবহার-শাস্ত্র শিখিতে আসে ততদিন আমার মন উঠিবে না। ভারতে এক বিশ্বজনীন সরস্বতীর পীঠস্থান কিরূপে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহার স্বপ্ন সদাই দেখি। স্বপ্ন যাহাতে সত্য হয় তাহার অল্প স্বল্প আয়ােজনও করিতেছি। তবে তাহা বীজবপন মাত্র। ফলের কথা অনেক দূর।
ইংরেজ যদি বেদান্তের অদ্বৈতবিজ্ঞান শিক্ষা করে তাহা হইলে নিশ্চয়ই তাহারা তাহাদের নিজের ধর্ম্ম ও শাস্ত্র ভাল করিয়া বুঝিতে পারিবে আর তাহাদের সর্ব্বনেশে আসুরিক ভাব দূর হইবে। এইরূপে তাহাদেরও মঙ্গল ও আমাদেরও মঙ্গল সাধিত হইবে। বিলাত দেখে আমার দৃঢ় ধারণা হয়েছে যে সভ্যতা সামাজিকতা লৌকতা আচার ব্যবহার— এই সকল বিষয়ে হিন্দুজাতি ইংরেজ অপেক্ষা অনেক বড়। যে নব্য সংস্কারকেরা পাশ্চাত্য সভ্যতা দেখিয়া হিন্দুকে হীন মনে করেন তাঁহারা অত্যন্ত কৃপাপাত্র। আমাদের দেশে এক্ষণে যে অনাচার বা কুসংস্কার নাই তাহা নহে। আর ইংরেজের কাছে যে কিছু শিখিবার নাই তাহাও নহে। কিন্তু এ কথা প্রমাণ করা যায় যে হিন্দুর আন্তরিক উদারতা ও উন্নত ভাবের নিকট ইংরেজের বাহ্য রং ঢং কিছুই নয়।
আমি বারমিংহাম্ নগরে একজন প্রসিদ্ধ দার্শনিকের বাটীতে অতিথি হেয়েছিলাম। তাঁহার পত্নী বড় বিদুষী। তিনি তন্ন তন্ন করিয়া আমাদের দেশের কথা আমায় জিজ্ঞাসা কোরেছিলেন। বিশেষতঃ আমাদের দেশে বিদ্যার আদর কি প্রকার তা জানিতে বড়ই ঔৎসুক্য দেখিয়েছিলেন। আমি বলিলাম যে খুব নীচজাতি ছাড়া এমন হিন্দু নাই যাহারা অল্প স্বল্প লিখিতে পড়িতে জানে না। কেন না হিন্দুর বিদ্যাশিক্ষা ঋষি-ঋণ শােধ করিবার জন্য―নিজের গৌরবের জন্য নয়। আমাদের হাতে খড়ি দেওয়া যে একটি ধর্ম্মকার্য্য তাহা শুনিয়া তাঁহারা আশ্চর্য্য হইয়া গিয়াছেন। তাঁরা বলিলেন যে আমরা কত আইন-কানুন কোরেও এপ্রকার লেখাপড়ার প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধা দাঁড় করাইতে পারি নাই।আমাদের পণ্ডিতদের উপাধি শুনিয়া তাঁরা বড়ই প্রীত হইয়া ছিলেন। বিদ্যাসাগর (Ocean of Learnnihg)―ন্যায়বাচষ্পতি (Lord of Wisdom in Logic)―তর্করত্ন (Jewel in Disputation) ইত্যাদি উপাধির কথা বোলেছিলাম। শেষ উপাধিটি শুনিয়া দার্শনিকের পত্নী বলিলেন—জন (দার্শনিকের ঐ নাম)—তুমি ভারি তার্কিক—তুমি তর্করত্ন উপাধিটি গ্রহণ কর। বাস্তবিক সেদিন কবে আসিবে—যেদিন য়ুরােপীয় পণ্ডিতেরা আমাদের কাছ থেকে উপাধি পেয়ে গৌরবান্বিত বােধ করিবেন।
ইংরেজের পারিবারিক বা সামাজিক বন্ধন একপ্রকার নাই বলিলেই হয়। আমি উক্ষপারে দিন কতকের জন্য এক বাসায় ছিলাম। একটি বৃদ্ধা ও তাহার কন্যা সেই বাসাটি রেখেছে। তারা সমস্তদিন দাস্যবৃত্তি কোরে আপনাদের ভরণ পােষণ করে। কিন্তু ঐ বৃদ্ধার পুত্র একটি জাহাজের কাপ্তেন―বেস দু-পয়সা পায় কিন্তু সে নিজে ভদ্রলােকের মত থাকে ও সব টাকা খরচ করে। মা ও ভগ্নী যেমন দাসী তেমনই আছে। বেশ-বিলাসের খরচ কমাইয়া মা ও ভগ্নীকে যে কোন রকম আর্থিক সাহায্য করা উচিত সে ভাবনা কাপ্তেন বাবুর মনেই হয় না। ইংরেজসমাজের চক্ষে এরূপ ব্যবহার কিছু অন্যায় বােলে বােধ হয় না। এরকম ব্যাপার আকছার দেখা যায়। ছেলে গাড়ী হাঁকিয়ে যাচ্ছে আর বাপ মা দাস্যবৃত্তি কোরে জীবিকা নির্ব্বাহ কোচ্চে। বাপ মার সঙ্গে যখন এইরূপ সম্বন্ধ তখন অপর অপর কুটুম্বদের কথা অধিক বলিবার আবশ্যক নাই। স্ত্রীলােকের সম্মান ও রক্ষণাবেক্ষণ করিতে কি রকম হয় তাহা ইংরেজদের হিন্দুজাতির কাছে ভাল কোরে শেখা দরকার। কিন্তু উল্টাশ্রী দাঁড়িয়েছে। নব্য বাবু-সংস্কারকেরা বলেন যে আমাদের ঐ বিষয় ইংরেজের কাছে শেখা উচিত। ইংরেজের কাছে স্ত্রীলােকের আদর শিখিতে গিয়ে সংস্কারকেরা কি বিপদই যে ঘটাইয়াছেন তা অনেকেরই জানা আছে। স্ত্রীলােকের আদর বলিলে—ইংরেজের কাছে কেবল নিজের পত্নীর আদর বােঝায়—মা বোন ভাজ ভাইঝি বা অন্য কোন কুটুম্বিনীর বােঝায় না। তারা মরুক বাঁচুক আর ভিক্ষা করুক তাতে আমার কি। এইরূপ শিক্ষা ইংরেজের কাছে পাওয়া যায়।
ইংরেজের সভ্যতা আচার ব্যবহার ও শীলের কথা পরে আরও লিখিব। এখন একটা কথা বােলে চিঠিটা শেষ করি।
আমি এক দিনের জন্য সুপ্রসিদ্ধ ষ্টেড্ সাহেবের (Mr. Stead) অতিথি হয়েছিলাম। তাঁহার আপিসে একটি সভা হয় সেখানে আমি বক্তৃতা করি। মিষ্টার ষ্টেড্ আমার সঙ্গে অনেক গল্পগাছা করেন। তিনি বোল্লেন যে তাঁর একটি ডবল (Double) আছে অর্থাৎ তাঁহার শরীর হইতে হুবাহু আর একটি ষ্টেড্ সাহেব বাহির হয়। এই ডবলটি যথেচ্ছ বিচরণ করে। তিনি বােল্লেন যে একবার তাঁর কোন এক রমণী বন্ধুর জ্বর (Influenza) হয়। সেই ডবল—তাঁহাকে তিন দিন তিন রাত সেবা করে। ঐ রমণী সুস্থ হোয়ে মিষ্টার ষ্টেড্ সাহেবকে ধন্যবাদ দিতে আসে। ষ্টেড্ সাহেব একেবারে অবাক্। তিনি ঐ ব্যাপারের বিন্দুবিসর্গও জানিতেন না। এইরূপে এই ডবলটি অবাধ্য ছেলের মত যেখানে খুসী ঘুরে বেড়ায়। আমার শুনে পীলে চম্কে গেল। ষ্টেড্ সাহেব কি আন্তে একবার ঘর থেকে বাহিরে গিয়েছিলেন। তার পর যখন ঘুরে ঢুক্ছেন আমার ভারি আতঙ্ক হােলাে। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম যে আপনি আস্ছেন না আপনার ডবল আস্ছেন। তিনি হেসে বােল্লেন—আমি—আমার ডবল নহি। আমি আবার ভয়ে ভয়ে বলিলাম কি করে জান্বাে। তিনি উত্তরে বলিলেন যে আমার চুল পাকা আর আমি চুরুট খাই কিন্তু আমার ডবলের চুল পাকা নহে আর সে চুরুটও খায় না। আরও যে কতরকম ভুতুড়ে গল্প করিলেন তাহা লিখিলে বঙ্গবাসী ভোরে যায়। আমিত সকাল বেলাই চম্পট দিলাম। আর ভূতের ভয়ে তাঁর সঙ্গে বড় একটা দেখা শুনা করিনি আর কোন সম্পর্কও রাখিনি। তবে তিনি আমাদের দেশের বন্ধু। আসিবার সময় দেখা করে এসেছিলাম। তিনি কামব্রজের কমিটির কথা আগেই শুনেছিলেন। অত্যন্ত আহ্লাদ ও উৎসাহ প্রকাশ করিলেন। ইতি
সমাপ্ত।