পাতা:রাজর্ষি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৫৯: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
 
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
ছিল; ঘোড়াসুদ্ধ নদী পার হইলেন। প্রখর রৌদ্রের সময় রামুতে গিয়া পৌঁছিলেন। সেখানে অধিক বিলম্ব করিলেন না। আবার সন্ধ্যার কিছু পূর্বেই যাদবের কুটিরে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। যাদবকে আড়ালে ডাকিয়া আনিলেন। তাঁহার ঝুলির মধ্য হইতে একখানি লাল শাল বাহির করিয়া যাদবের হাতে দিয়া কহিলেন, “আজ পূজার দিন এই শালটি তোমার ছেলেকে দাও।”
ծ (Ե রাজর্ষি

ছিল, ঘোড়ামৃদ্ধ নদী পার হইলেন। প্রখর রৌদ্রের সময় রামুতে গিয়া পৌছিলেন ; সেখানে অধিক বিলম্ব করিলেন না। আবার সন্ধ্যার কিছু পূর্বেই যাদবের কুটিরে আসিয়া উপস্থিত হইলেন যাদবকে আড়ালে ডাকিয়া আনিলেন । র্তাহার ঝুলির মধ্য হইতে একখানি লাল শাল বাহির করিয়া যাদবের হাতে দিয়া কহিলেন, “আজ পূজার দিনে এই শালটি তোমার ছেলেকে দাও।”
যাদব কাদিয়া গোবিন্দমাণিক্যের পা জড়াইয়া ধরিল। কহিল,“প্ৰভু, তুমি আনিয়াছ, তুমিই দাও।” { রাজা কহিলেন, “না, আমি দিব না, তুমি দাও। আমি দিলে কোনো ফল নাই । আমার নাম করিয়ো না । আমি কেবল তোমার ছেলের মুখে আনন্দের হাসি দেখিয়া চলিয়া যাইব ।”
যাদব কাঁদিয়া গোবিন্দমাণিক্যের পা জড়াইয়া ধরিল। কহিল, “প্রভু, তুমি আনিয়াছ, তুমিই দাও।”
রাজা কহিলেন, “না, আমি দিব না, তুমি দাও। আমি দিলে কোনো ফল নাই। আমার নাম করিয়ো না। আমি কেবল তোমার ছেলের মুখে আনন্দের হাসি দেখিয়া চলিয়া যাইব।”

রুগণ বালকের অতি শীর্ণ স্নান মুখ প্রফুল্ল দেখিয়া রাজা চলিয়া গেলেন। রাজা বিষন্ন হইয়া মনে মনে কছিলেন, “আমি কোনো কাজ করিতে পারি না । আমি কেবল কয়টা বৎসর রাজত্বই করিয়াছি, কিছুই শিক্ষা করি নাই। কী করিলে একটি ক্ষুদ্র বালকের রোগের কষ্ট একটু নিবারণ হইবে তাহ জানি না। আমি কেবল অসহায় অকৰ্মণ্য ভাবে শোক করিতে জানি বিহুন ঠাকুর যদি থাকিতেন তো ইহাদের কিছু উপকার করিয়া যাইতেন। আমি যদি বিহুন ঠাকুরের মতো হইতাম !"
রুগ্‌ণ বালকের অতি শীর্ণ ম্লান মুখ প্রফুল্ল দেখিয়া রাজা চলিয়া গেলেন। রাজা বিষণ্ন হইয়া মনে মনে কহিলেন, ‘আমি কোনো কাজ করিতে পারি না। আমি কেবল কয়টা বৎসর রাজত্বই করিয়াছি, কিছুই শিক্ষা করি নাই। কী করিলে একটি ক্ষুদ্র বালকের রোগের কষ্ট একটু নিবারণ হইবে তাহা জানি না। আমি কেবল অসহায় অকর্মণ্য ভাবে শোক করিতেই জানি। বিল্বন ঠাকুর যদি থাকিতেন তো ইহাদের কিছু উপকার করিয়া যাইতেন। আমি যদি বিল্বন ঠাকুরের মতো হইতাম!’ গোবিন্দমাণিক্য বলিলেন, ‘আমি আর ঘুরিয়া ঘুরিয়া বেড়াইব না, লোকালয়ের মধ্যে বাস করিয়া কাজ করিতে শিখিব।’
গোবিন্দমাণিক্য বলিলেন, “আমি আর ঘুরিয়া ঘুরিয়া বেড়াইব না, লোকালয়ের মধ্যে বাস করিয়া কাজ করিতে শিখিব ।”

রামুর দক্ষিণে রাজকুলের নিকটে মগদিগের যে দুর্গআছে আরাকানরাজের অনুমতি লইয়া সেইখানে তিনি বাস করিতে লাগিলেন ।
রামুর দক্ষিণে রাজাকুলের নিকটে মগদিগের যে দুর্গ আছে, আরাকানরাজের অনুমতি লইয়া সেইখানে তিনি বাস করিতে লাগিলেন।
গ্রামবাসীদের যতগুলো ছেলেপিলে ছিল সকলেই দুর্গে গোবিন্দমাণিক্যের নিকট আসিয়া জুটল। গোবিন্দমাণিক্য তাহাদিগকে লইয়া

গ্রামবাসীদের যতগুলো ছেলেপিলে ছিল, সকলেই দুর্গে গোবিন্দমাণিক্যের নিকটে আসিয়া জুটিল। গোবিন্দমাণিক্য তাহাদিগকে লইয়া