পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||মেঘ ও রৌদ্র|২৩৩}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}নায়েব সাহেবের জন্য কিঞ্চিৎ ফলমূল শীতলতভোগ উপহার লইয়া জয়েন্ট্ ম্যাজিস্ট্রেটের বাসায় গিয়া হাজির হইলেন। সাহেবকে জানাইলেন, সাহেবের নামে মকদ্দমা করা তাঁহার আদৌ স্বভাববিরুদ্ধ; কেবল শশিভূষণ নামে গ্রামের একটি অজাতশ্মশ্র অপােগণ্ড অর্বাচীন উকিল তাঁহাকে একপ্রকার না জানাইয়া এইরূপ স্পর্ধার কাজ করিয়াছে। সাহেব শশিভূষণের প্রতি অত্যন্ত বিরক্ত এবং নায়েবের প্রতি বড়াে সন্তুষ্ট হইলেন, রাগের মাথায় নায়েববাবুকে ‘ডণ্ডবিঢান’ করিয়া তিনি ‘ডুঃখিট্’ আছেন। সাহেব বাংলা ভাষার পরীক্ষায় সম্প্রতি পুরস্কার লাভ করিয়া সাধারণের সহিত সাধুভাষায় বাক্যালাপ করিয়া থাকেন।
মেঘ ও রৌদ্র Rඑෆ

নায়েব সাহেবের জন্য কিঞ্চিং ফলমল শীতলভোগ উপহার লইয়া জয়েস্ট ম্যাজিস্টেটের বাসায় গিয়া হাজির হইলেন। সাহেবকে জানাইলেন, সাহেবের নামে মকদ্দমা করা তাঁহার আদৌ স্বভাববিরদ্ধে ; কেবল শশিভূষণ নামে গ্রামের একটি অজাতশমশ্র অপোগণ্ড অবচিীন উকিল তাঁহাকে একপ্রকার না জানাইয়া এইরুপ পধার কাজ করিয়াছে। সাহেব শশিভূষণের প্রতি অত্যন্ত বিরক্ত এবং নায়েবের প্রতি বড়ো সন্তুষ্ট হইলেন, রাগের মাথায় নায়েববাবকে 'ডণ্ডবিটান করিয়া তিনি ডুঃখিট আছেন। সাহেব বাংলা ভাষার পরীক্ষায় সম্প্রতি পরমকার লাভ করিয়া সাধারণের সহিত সাধভাষায় বাক্যালাপ করিয়া থাকেন।
নায়েব কহিলেন, মা-বাপ কখনো বা রাগ করিয়া শাসিতও দিয়া থাকেন, কখনো বা আদর করিয়া কোলেও টানিয়া লন, ইহাতে সন্তানের বা মা-বাপের দুঃখের কোনো কারণ নাই ।
{{gap}}নায়েব কহিলেন, মা-বাপ কখনাে বা রাগ করিয়া শাস্তিও দিয়া থাকেন, কখনাে বা আদর করিয়া কোলেও টানিয়া লন, ইহাতে সন্তানের বা মা-বাপের দুঃখের কোনাে কারণ নাই॥

অতঃপর জয়েণ্ট-সাহেবের ভূতাবগকে যথাযোগ্য পারিতোষিক দিয়া হরকুমার মফস্বলে ম্যাজিস্ট্রেট-সাহেবের সহিত দেখা করিতে গেলেন। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁহার মখে শশিভূষণের পধার কথা শুনিয়া কহিলেন, “আমিও আশ্চর্য হইতেছিলাম যে, নায়েববাবকে বরাবর ভালো লোক বলিয়াই জানিতাম, তিনি যে সবাগ্রে আমাকে জানাইয়া গোপনে মিটমাট না করিয়া হঠাৎ মকদ্দমা আনিবেন, এ কী অসম্ভব ব্যাপার। এখন সমস্ত বুঝিতে পারিতেছি।”
{{gap}}অতঃপর জয়েন্ট-সাহেবের ভৃত্যবর্গকে যথাযােগ্য পারিতােষিক দিয়া হরকুমার মফস্বলে ম্যাজিস্ট্রেট-সাহেবের সহিত দেখা করিতে গেলেন। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁহার মুখে শশিভূষণের স্পর্ধার কথা শুনিয়া কহিলেন, “আমিও আশ্চর্য হইতেছিলাম যে, নায়েববাবুকে বরাবর ভালাে লােক বলিয়াই জানিতাম, তিনি যে সর্বাগ্রে আমাকে জানাইয়া গােপনে মিটমাট না করিয়া হঠাৎ মকদ্দমা আনিবেন, এ কী অসম্ভব ব্যাপার। এখন সমস্ত বুঝিতে পারিতেছি।”
অবশেষে নায়েবকে জিজ্ঞাসা করিলেন, শশী কনগ্রেসে যোগ দিয়াছে কি না। নায়েব অলানমখে বলিলেন, হাঁ।

সাহেব তাঁহার সাহেবি বধিতে পষ্টই বুঝিতে পারিলেন, এ সমস্তই কনগ্রেসের চাল। একটা পাকচক্ল বাধাইয়া অমতবাজারে প্রবন্ধ লিখিয়া গবমেন্টের সহিত খিটিমিটি করিবার জন্য কনগ্রেসের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চেলাগণ লক্কোয়িতভাবে চতুদিকে অবসর অনুসন্ধান করিতেছে। এই-সকল ক্ষুদ্র কণ্টকগণকে একদমে দলন করিয়া ফেলিবার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের হস্তে অধিকতর সরাসরি ক্ষমতা দেওয়া হয় নাই বলিয়া সাহেব ভারতবষীয় গবমেণ্টকে অত্যন্ত দলবল গবমেণ্ট বলিয়া মনে মনে ধিক্কার দিলেন। কিন্তু কনগ্রেসওয়ালা শশিভূষণের নাম ম্যাজিস্ট্রেটের মনে রহিল।
{{gap}}অবশেষে নায়েবকে জিজ্ঞাসা করিলেন, শশী কন্‌গ্রেসে যােগ দিয়াছে কি না। নায়েব অম্লানমুখে বলিলেন, হাঁ।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ

সংসারে বড়ো বড়ো ব্যাপারগুলি যখন প্রবলভাবে গজাইয়া উঠিতে থাকে তখন ছোটো ছোটো ব্যাপারগুলিও ক্ষুধিত ক্ষুদ্র শিকড়জাল লইয়া জগতের উপর আপন দাবি বিস্তার করিতে ছাড়ে না।
{{gap}}সাহেব তাঁহার সাহেবি বুদ্ধিতে স্পষ্টই বুঝিতে পারিলেন, এ সমস্তই কন্‌গ্রেসের চাল। একটা পাকচক্র বাধাইয়া অমৃতবাজারে প্রবন্ধ লিখিয়া গবর্মেন্টের সহিত খিটিমিটি করিবার জন্য কন্‌গ্রেসের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চেলাগণ লুক্কায়িতভাবে চতুর্দিকে অবসর অনুসন্ধান করিতেছে। এই-সকল ক্ষুদ্র কণ্টকগণকে একদমে দলন করিয়া ফেলিবার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের হস্তে অধিকতর সরাসরি ক্ষমতা দেওয়া হয় নাই বলিয়া সাহেব ভারতবর্ষীয় গবর্মেন্টকে অত্যন্ত দুর্বল গবর্মেন্ট বলিয়া মনে মনে ধিক্কার দিলেন। কিন্তু কন্‌গ্রেসওয়ালা শশিভূষণের নাম ম্যাজিস্ট্রেটের মনে রহিল।
শশিভূষণ যখন এই ম্যাজিস্টেটের হাঙ্গামা লইয়া বিশেষ ব্যস্ত, যখন বিস্কৃত পথিপত্র হইতে আইন উদ্ধার করিতেছেন, মনে মনে বস্তৃতায় শাণ দিতেছেন, কল্পনায় সাক্ষীকে জেরা করিতে বসিয়া গিয়াছেন ও প্রকাশ্য আদালতের লোকারণ্যদশ্য এবং যন্ধপবের ভাবী পবাধ্যায়গালি মনে আনিয়া ক্ষণে ক্ষণে কম্পিতঘমান্ত হইয়া উঠিতেছেন, তখন তাঁহার ক্ষুদ্র ছাত্রীটি তাহার ছিন্নপ্রায় চারপাঠ ও মসীবিচিত্র লিখিবার খাতা, বাগান হইতে কখনো ফল, কখনো ফল, মাতৃভাণ্ডার হইতে কোনোদিন

{{rh||পঞ্চম পরিচ্ছেদ|}}
সংসারে বড়াে বড়াে ব্যাপারগুলি যখন প্রবলভাবে গজাইয়া উঠিতে থাকে তখন ছােটো ছোটো ব্যাপারগুলিও ক্ষুধিত ক্ষুদ্র শিকড়জাল লইয়া জগতের উপর আপন দাবি বিস্তার করিতে ছাড়ে না।

{{gap}}শশিভূষণ যখন এই ম্যাজিস্ট্রেটের হাঙ্গামা লইয়া বিশেষ ব্যস্ত, যখন বিস্তৃত পুঁথিপত্র হইতে আইন উদ্ধার করিতেছেন, মনে মনে বক্তৃতায় শাণ দিতেছেন, কল্পনায় সাক্ষীকে জেরা করিতে বসিয়া গিয়াছেন ও প্রকাশ্য আদালতের লােকারণ্যদৃশ্য এবং যুদ্ধপর্বের ভাবী পর্বাধ্যায়গুলি মনে আনিয়া ক্ষণে ক্ষণে কল্পিতঘর্মাক্ত হইয়া উঠিতেছেন, তখন তাঁহার রুদ্র ছাত্রীটি তাঁহার ছিন্নপ্রায় চারুপাঠ ও মসীবিচিত্র লিখিবার খাতা, বাগান হইতে কখনাে ফুল, কখনাে ফল, মাতৃভাণ্ডার হইতে কোনােদিন