পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৯: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|২৫০|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
&&O গল্পগুচ্ছ
এবং তদীয় স্ত্রীর বাক্যঝাল খাইয়া নীরবে পরিপাক করিতে লাগিল।
এবং তদীয় স্ত্রীর বাক্যঝাল খাইয়া নীরবে পরিপাক করিতে লাগিল।

ইতিমধ্যে বড়ো ভাই ছটিতে কিছ দিনের জন্য ঘরে আসিয়া সীর নিকট হইতে অনেক উদ্দীপনাপণ ওজোগণসম্পন্ন বস্তৃতা শ্রবণ করিতে লাগিলেন। অবশেষে নিদ্রার ব্যাঘাত যখন প্রতি রাত্রেই গরতর হইয়া উঠিতে লাগিল তখন একদিন অনাথবন্ধকে ডাকিয়া শান্তভাবে স্নেহের সহিত কহিলেন, “তোমার একটা চাকরির চেষ্টা দেখা উচিত, কেবল আমি একলা সংসার চালাইব কী করিয়া।”
{{gap}}ইতিমধ্যে বড়ো ভাই ছুটিতে কিছু দিনের জন্য ঘরে আসিয়া স্ত্রীর নিকট হইতে অনেক উদ্দীপনাপূর্ণ ওজোগুণসম্পন্ন বক্তৃতা শ্রবণ করিতে লাগিলেন। অবশেষে নিদ্রার ব্যাঘাত যখন প্রতি রাত্রেই গুরুতর হইয়া উঠিতে লাগিল তখন একদিন অনাথবন্ধুকে ডাকিয়া শান্তভাবে স্নেহের সহিত কহিলেন, “তােমার একটা চাকরির চেষ্টা দেখা উচিত, কেবল আমি একলা সংসার চালাইব কী করিয়া।”
অনাথবন্ধ পদাহত সপের ন্যায় গজন করিয়া বলিয়া উঠিলেন, দই বেলা দুই মাটি অত্যন্ত অখাদ্য মোটা ভাতের পর এত খোঁটা সহ্য হয় না। তৎক্ষণাৎ স্মীকে লইয়া শ্বশুরবাড়ি যাইতে সংকল্প করিলেন।

কিন্তু সন্ত্রী কিছুতেই সম্মত হইল না। তাহার মতে ভাইয়ের অন্ন এবং ভাজের গালিতে কনিষ্ঠের পারিবারিক অধিকার আছে, কিন্তু শ্বশুরের আশ্রয়ে বড়ো লজা। বিন্ধ্যবাসিনী বশরেবাড়িতে দীনহীনের মতো নত হইয়া থাকিতে পারে, কিন্তু বাপের বাড়িতে সে আপন মর্যাদা রক্ষা করিয়া মাথা তুলিয়া চলিতে চায়।
{{gap}}অনাথবন্ধু, পদাহত সর্পের ন্যায় গর্জন করিয়া বলিয়া উঠিলেন, দুই বেলা দুই মুষ্টি অত্যন্ত অখাদ্য মােটা ভাতের 'পর এত খোঁটা সহ্য হয় না। তৎক্ষণাৎ স্ত্রীকে লইয়া শ্বশুরবাড়ি যাইতে সংকল্প করিলেন।
এমন সময় গ্রামের এনট্রেনস স্কুলে তৃতীয় শিক্ষকের পদ খালি হইল। অনাথবন্ধর দাদা এবং বিধবাসিনী উভয়েই তাঁহাকে এই কাজটি গ্রহণ করিবার জন্য পীড়াপীড়ি করিয়া ধরিলেন। তাহাতেও হিতে বিপরীত হইল। নিজের ভাই এবং একমাত্র ধর্মপত্নী যে তাঁহাকে এমন একটা অত্যন্ত তুচ্ছ কাজের যোগ্য বলিয়া মনে করিতে পারেন, ইহাতে তাঁহার মনে দজয় অভিমানের সঞ্চার হইল এবং সংসারের সমস্ত কাজকর্মের প্রতি পবাপেক্ষা চতুগণ বৈরাগ্য জমিয়া গেল।

তখন আবার দাদা তাঁহার হাতে ধরিয়া, মিনতি করিয়া, তাঁহাকে অনেক করিয়া ঠান্ডা করিলেন। সকলেই মনে করিলেন, ইহাকে আর কোনো কথা বলিয়া কাজ নাই, এ এখন কোনো প্রকারে ঘরে টি-কিয়া গেলেই ঘরের সৌভাগ্য।
{{gap}}কিন্তু স্ত্রী কিছুতেই সম্মত হইল না। তাহার মতে ভাইয়ের অন্ন এবং ভাজের গালিতে কনিষ্ঠের পারিবারিক অধিকার আছে, কিন্তু শ্বশুরের আশ্রয়ে বড়ো লজ্জা। বিন্ধ্যবাসিনী শ্বশুরবাড়িতে দীনহীনের মতাে নত হইয়া থাকিতে পারে, কিন্তু বাপের বাড়িতে সে আপন মর্যাদা রক্ষা করিয়া মাথা তুলিয়া চলিতে চায়।
ছটি অন্তে দাদা কম ক্ষেত্রে চলিয়া গেলেন ; শ্যামাশঙ্করী রন্ধ আক্লোশে মুখখানা গোলাকার করিয়া তুলিয়া একটা বহৎ কুদর্শনচকু নিমাণ করিয়া রহিলেন । অনাথবন্ধ বিন্ধ্যবাসিনীকে আসিয়া কহিলেন, “আজকাল বিলাতে না গেলে কোনো ভদ্র চাকরি পাওয়া যায় না। আমি বিলাতে যাইতে মনস্থ করিতেছি, তুমি তোমার বাবার কাছ হইতে কোনো ছতায় কিছু অর্থ সংগ্রহ করো।”

এক তো বিলাত যাইবার কথা শুনিয়া বিধার মাথায় যেন বজ্রাঘাত হইল ; তাহার পরে পিতার কাছে কী করিয়া অর্থ ভিক্ষা করিতে যাইবে, তাহা সে মনে করিতে পারিল না এবং মনে করিতে গিয়া লঙ্গায় মরিয়া গেল।
{{gap}}এমন সময় গ্রামের এন্‌ট্রেন্‌স্‌স্কুলে তৃতীয় শিক্ষকের পদ খালি হইল। অনাথবন্ধুর দাদা এবং বিন্ধ্যবাসিনী উভয়েই তাঁহাকে এই কাজটি গ্রহণ করিবার জন্য পীড়াপীড়ি করিয়া ধরিলেন। তাহাতেও হিতে বিপরীত হইল। নিজের ভাই এবং একমাত্র ধর্মপত্নী যে তাঁহাকে এমন একটা অত্যন্ত তুচ্ছ কাজের যােগ্য বলিয়া মনে করিতে পারেন, ইহাতে তাঁহার মনে দুর্জয় অভিমানের সঞ্চার হইল এবং সংসারের সমস্ত কাজকর্মের প্রতি পূর্বাপেক্ষা চতুর্গুণ বৈরাগ্য জন্মিয়া গেল।
শবশরের কাছে নিজমুখে টাকা চাহিতেও অনাথবন্ধর অহংকারে বাধা দিল, অথচ বাপের কাছ হইতে কন্যা কেন যে ছলে অথবা বলে অথ* আকষণ করিয়া না আনিবে তাহা তিনি বুঝিতে পারলেন না। ইহা লইয়া অনাথ অনেক রাগারগি করিলেন এবং মম পীড়িত বিধবাসিনীকে বিস্তর আশ্রপোত করিতে হইল।

এমন করিয়া কিছুদিন সাংসারিক অভাবে এবং মনের কষ্টে কাটিয়া গেল ; অবশেষে শরৎকালে পজা নিকটবতী হইল। কন্যা এবং জামাতাকে সাদরে আহবান করিয়া আনিবার জন্য রাজকুমারবাব বহু সমারোহে যানবাহনাদি প্রেরণ করিলেন। এক বৎসর পরে কন্যা স্বামীসহ পনরায় পিতৃভবনে প্রবেশ করিল। ধনী কুটবের যে
{{gap}}তখন আবার দাদা তাঁহার হাতে ধরিয়া, মিনতি করিয়া, তাঁহাকে অনেক করিয়া ঠাণ্ডা করিলেন। সকলেই মনে করিলেন, ইহাকে আর কোনাে কথা বলিয়া কাজ নাই, এ এখন কোনাে প্রকারে ঘরে টিঁকিয়া গেলেই ঘরের সৌভাগ্য।

{{gap}}ছুটি অন্তে দাদা কর্মক্ষেত্রে চলিয়া গেলেন; শ্যামাশঙ্করী রুদ্ধ আক্রোশে মুখখানা গােলাকার করিয়া তুলিয়া একটা বহৎ কুদর্শনচক্র নির্মাণ করিয়া রহিলেন। অনাথবন্ধু বিন্ধ্যবাসিনীকে আসিয়া কহিলেন, “আজকাল বিলাতে না গেলে কোনাে ভদ্র চাকরি পাওয়া যায় না। আমি বিলাতে যাইতে মনস্থ করিতেছি, তুমি তােমার বাবার কাছ হইতে কোনাে ছুতায় কিছু অর্থ সংগ্রহ করাে।”

{{gap}}এক তাে বিলাত যাইবার কথা শুনিয়া বিন্ধ্যর মাথায় যেন বজ্রাঘাত হইল; তাহার পরে পিতার কাছে কী করিয়া অর্থ ভিক্ষা করিতে যাইবে, তাহা সে মনে করিতে পারিল না এবং মনে করিতে গিয়া লজ্জায় মরিয়া গেল।

{{gap}}শ্বশুরের কাছে নিজমুখে টাকা চাহিতেও অনাথবন্ধুর অহংকারে বাধা দিল, অথচ বাপের কাছ হইতে কন্যা কেন যে ছলে অথবা বলে অর্থ আকর্ষণ করিয়া না আনিবে তাহা তিনি বুঝিতে পারিলেন না। ইহা লইয়া অনাথ অনেক রাগারাগি করিলেন এবং মর্মপীড়িত বিন্ধ্যবাসিনীকে বিস্তর অশ্রুপাত করিতে হইল।

{{gap}}এমন করিয়া কিছুদিন সাংসারিক অভাবে এবং মনের কষ্টে কাটিয়া গেল; অবশেষে শরৎকালে পূজা নিকটবতী হইল। কন্যা এবং জামাতাকে সাদরে আহ্বান করিয়া আনিবার জন্য রাজকুমারবাবু বহু সমারােহে যানবাহনাদি প্রেরণ করিলেন। এক বৎসর পরে কন্যা স্বামীসহ পুনরায় পিতৃভবনে প্রবেশ করিল। ধনী কুটুম্বের যে