পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৮: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||পুত্রযজ্ঞ|৩৫৯}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}নগেন্দ্র যখন তাস খেলিতে বসিত তখন তাসের অপেক্ষা সজীবতর পদার্থের প্রতি তাহার নয়নমন পড়িয়া থাকাতে খেলায় প্রায়ই হারিতে লাগিল। পরাজয়ের প্রকৃত কারণ বুঝিতে কুসম এবং বিনােদার কাহারও বাকি রহিল না। পূর্বেই বলিয়াছি, কর্মফলের গুরুত্ব বােঝা অল্প বয়সের কর্ম নহে। কুসম মনে করিত এ একটা বেশ মজা হইতেছে, এবং মজাটা ক্রমে ষোলাে-আনায় সম্পূর্ণ হইয়া উঠে ইহাতে তাহার একটা আগ্রহ ছিল। ভালােবাসার নবাঙ্কুরে গােপনে জলসিঞ্চন তরুণীদের পক্ষে বড়াে কৌতুকের।
পরবজ্ঞ లి &ఫి

নগেন্দ্র যখন তাস খেলিতে বসিত তখন তাসের অপেক্ষা সজীবতর পদার্থের প্রতি তাহার নয়নমন পড়িয়া থাকাতে খেলায় প্রায়ই হারিতে লাগিল। পরাজয়ের প্রকৃত কারণ বঝিতে কুসম এবং বিনোদার কাহারও বাকি রহিল না। পবেই বলিয়াছি, কর্মফলের গরুত্ব বোঝা অলপ বয়সের কম নহে। কুসুম মনে করিত এ একটা বেশ মজা হইতেছে, এবং মজাটা ক্লমে যোলো-আনায় সম্পপণ্য হইয়া উঠে ইহাতে তাহার একটা আগ্রহ ছিল। (ভালোবাসার নবাকুরে গোপনে জলসিঞ্চন তরণেীদের পক্ষে বড়ো কৌতুকের 2
বিনোদারও মন্দ লাগিল না (হদয়জয়ের সতীক্ষ ক্ষমতাটা একজন পরষ মানষেরু উপর শাণিত করিবার ইচ্ছা অন্যায় হইতে পারে, কিন্তু নিতান্ত অস্বাভাবিক নহে )
{{gap}}বিনােদারও মন্দ লাগিল না।হৃদয়জয়ের সূতীক্ষ্ণ ক্ষমতাটা একজন পুরুষ মানুষের উপর শাণিত করিবার ইচ্ছা অন্যায় হইতে পারে, কিন্তু নিতান্ত অস্বাভাবিক নহে।

এইরুপে তাসের হারজিৎ ও ছক্কাপাঞ্জার পনেঃ পুনঃ আবর্তনের মধ্যে কোন-এক সময়ে দুইটি খেলোয়াড়ের মনে মনে মিল হইয়া গেল, অন্তষামী ব্যতীত আর-একজন খেলোয়াড় তাহা দেখিল এবং আমোদ বোধ করিল।
{{gap}}এইরূপে তাসের হারজিৎ ও ছক্কাপাঞ্জার পুনঃ পুনঃ আবর্তনের মধ্যে কোন্-এক সময়ে দুইটি খেলােয়াড়ের মনে মনে মিল হইয়া গেল, অন্তর্যামী ব্যতীত আর-একজন খেলােয়াড় তাহা দেখিল এবং আমােদ বােধ করিল।
একদিন দপারবেলায় বিনোদা কুসম ও নগেন্দ্র তাস খেলিতেছিল। কিছুক্ষণ পরে কুসুম তাহার রগণ শিশর কান্না শুনিয়া উঠিয়া গেল। নগেন্দ্র বিনোদার সহিত গলপ করিতে লাগিল। কিন্তু কী গল্প করিতেছিল তাহা নিজেই বুঝিতে পারিতেছিল না; রক্তস্রোত তাহার হৎপিণ্ড উদবেলিত করিয়া তাহার সব শরীরের শিরার মধ্যে তরঙ্গিত হইতেছিল।

হঠাৎ একসময় তাহার উন্দাম যৌবন বিনয়ের সমস্ত বাঁধ ভাঙিয়া ফেলিল, হঠাৎ বিনোদার হাত দটি চাপিয়া ধরিয়া সবলে তাহাকে টানিয়া লইয়া চুম্বন করিল। বিনোদা নগেন্দ্র কর্তৃক এই অবমাননায় ক্ৰোধে ক্ষোভে লজায় অধীর হইয়া নিজের হাত ছাড়াইবার জন্য টানাটানি করিতেছে এমন সময় তাহদের দৃষ্টিগোচর হইল, ঘরে তৃতীয় ব্যক্তির আগমন হইয়াছে। নগেন্দ্র নতমখে ঘর হইতে বাহির হইবার পথ অন্বেষণ করিতে লাগিল।
{{gap}}একদিন দুপুরবেলায় বিনােদা কুসুম ও নগেন্দ্র তাস খেলিতেছিল। কিছুক্ষণ পরে কুসুম তাহার রুগ্‌ণ শিশুর কান্না শুনিয়া উঠিয়া গেল। নগেন্দ্র বিনােদার সহিত গল্প করিতে লাগিল। কিন্তু কী গল্প করিতেছিল তাহা নিজেই বুঝিতে পারিতেছিল না; রক্তস্রোত তাহার হৃৎপিণ্ড উদ্‌বেলিত করিয়া তাহার সর্বশরীরের শিরার মধ্যে তরঙ্গিত হইতেছিল।
পরিচারিকা গম্ভীরত্বরে কহিল, “বোঁঠাকরন, তোমাকে পিসিমা ডাকছেন।” বিনোদা ছলছল চক্ষে নগেন্দ্রের প্রতি বিদ্যাংকটাক্ষ বর্ষণ করিয়া দাসীর সঙ্গে চলিয়া গেল ।

পরিচারিকা যেটুকু দেখিয়াছিল তাহাকে হ্রস্তব এবং যাহা না দেখিয়াছিল তাহাকেই সদীর্ঘতর করিয়া বৈদ্যনাথের অন্তঃপরে একটা ঝড় তুলিয়া দিল। বিনোদার কী দশা হইল সে কথা বর্ণনার অপেক্ষা কলপনা সহজ। সে যে কতদর নিরপরাধ কাহাকেও বাঝাইতে চেষ্টা করিল না, নতমখে সমস্ত সহিয়া গেল।
{{gap}}হঠাৎ একসময় তাহার উদ্দাম যৌবন বিনয়ের সমস্ত বাঁধ ভাঙিয়া ফেলিল, হঠাৎ বিনােদার হাত দুটি চাপিয়া ধরিয়া সবলে তাহাকে টানিয়া লইয়া চুম্বন করিল। বিনােদা নগেন্দ্র কর্তৃক এই অবমাননায় ক্রোধে ক্ষোভে লজ্জায় অধীর হইয়া নিজের হাত ছাড়াইবার জন্য টানাটানি করিতেছে এমন সময় তাহাদের দৃষ্টিগােচর হইল, ঘরে তৃতীয় ব্যক্তির আগমন হইয়াছে। নগেন্দ্র নতমুখে ঘর হইতে বাহির হইবার পথ অন্বেষণ করিতে লাগিল।
বৈদ্যনাথ আপন ভাবাঁ পিণ্ডদাতার আবিভাব-সম্পভাবনা অত্যন্ত সংশয়াচ্ছন্ন জ্ঞান করিয়া বিনোদাকে কহিল, “কলঙ্কিনী, তুই আমার ঘর হইতে দরে হইয়া যা।"

বিনোদা শয়নকক্ষের বার রোধ করিয়া বিছানায় শাইয়া পড়িল, তাহার আগ্রহীন চক্ষ মধ্যাহের মরভূমির মতো জলিতেছিল। যখন সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনীভূত হইয়া বাহিরের বাগানে কাকের ডাক থামিয়া গেল, তখন নক্ষত্রখচিত শান্ত আকাশের দিকে চাহিয়া তাহার বাপমায়ের কথা মনে পড়িল এবং তখন দই গণ্ড দিয়া আশ্রম বিগলিত হইয়া পড়িতে লাগিল।
{{gap}}পরিচারিকা গম্ভীরস্বরে কহিল, “বৌঠাকরুন, তােমাকে পিসিমা ডাকছেন।” বিনােদা ছলছল চক্ষে নগেন্দ্রের প্রতি বিদ্যুৎকটাক্ষ বর্ষণ করিয়া দাসীর সঙ্গে চলিয়া গেল।
সেই রাত্রে বিনোদা স্বামীগৃহ ত্যাগ করিয়া গেল। কেহ তাহার খোঁজও করিল না। তখন বিনোদা জানিত না যে, প্রজনাথ’ং মহাভাগা স্মী-জন্মের মহাভাগ্য সে

{{gap}}পরিচারিকা যেটকু দেখিয়াছিল তাহাকে হ্রস্ব এবং যাহা না দেখিয়াছিল তাহাকেই সুদীর্ঘতর করিয়া বৈদ্যনাথের অন্তঃপুরে একটা ঝড় তুলিয়া দিল। বিনােদার কী দশা হইল সে কথা বর্ণনার অপেক্ষা কল্পনা সহজ। সে যে কতদূর নিরপরাধ কাহাকেও বুঝাইতে চেষ্টা করিল না, নতমুখে সমস্ত সহিয়া গেল।

{{gap}}বৈদ্যনাথ আপন ভাবী পিণ্ডদাতার আবির্ভাব-সম্ভাবনা অত্যন্ত সংশয়াচ্ছন্ন জ্ঞান করিয়া বিনােদাকে কহিল, “কলঙ্কিনী, তুই আমার ঘর হইতে দূর হইয়া যা।”

{{gap}}বিনােদা শয়নকক্ষের দ্বার রোধ করিয়া বিছানায় শুইয়া পড়িল, তাহার অশ্রুহীন চক্ষু, মধ্যাহ্নের মরুভূমির মতাে জ্বলিতেছিল। যখন সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনীভূত হইয়া বাহিরের বাগানে কাকের ডাক থামিয়া গেল, তখন নক্ষত্রখচিত শান্ত আকাশের দিকে চাহিয়া তাহার বাপমায়ের কথা মনে পড়িল এবং তখন দুই গণ্ড দিয়া অশ্রু বিগলিত হইয়া পড়িতে লাগিল।

{{gap}}সেই রাত্রে বিনােদা স্বামীগৃহ ত্যাগ করিয়া গেল। কেহ তাহার খোঁজও করিল না।

{{gap}}তখন বিনােদা জানিত না যে, ‘প্রজনার্থং মহাভাগা’ স্ত্রী-জন্মের মহাভাগ্য সে