পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৪২৮|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}গল্পগুচ্ছ একদিন সামান্য কারণে বিষ উদ্গীরিত হইয়া পড়িল। স্ত্রীর কাছে পরমানন্দকে উল্লেখ করিয়া ‘দুশ্চরিত্র ভণ্ড’ বলিয়া গালি দিলেন এবং কহিলেন, “তােমার শালগ্রাম স্পর্শ করিয়া শপথপূর্বক বলো দেখি, সেই বকধার্মিককে তুমি মনে মনে ভালােবাস না।"
३२४ গল্পগুচ্ছ

একদিন সামান্য কারণে বিষ উদ্গীরিত হইয়া পড়িল। সীর কাছে পরমানন্দকে উল্লেখ করিয়া দশচরিত্র ভণ্ড বলিয়া গালি দিলেন এবং কহিলেন, "তোমার শালগ্রাম পশ করিয়া শপথপবেক বলো দেখি, সেই বকধামিককে তুমি মনে মনে ভালোবাস না।”
দলিত ফণিনীর ন্যায় মহাতের মধ্যেই উদগ্র হইয়া মিথ্যা পধা বারা স্বামীকে বিদ্ধ করিয়া গৌরী রাধকণ্ঠে কহিল, "ভালোবাসি, তুমি কী করিতে চাও করো" পরেশ তৎক্ষণাৎ ঘরে তালাচাবি লাগাইয়া তাহাকে রন্ধ করিয়া আদালতে চলিয়া গেল। অসহ্য রোষে গৌরী কোনোমতে বার উন্মোচন করাইয়া তৎক্ষণাৎ বাড়ি হইতে বাহির হইয়া গেল।
{{gap}}দলিত ফণিনীর ন্যায় মুহুর্তের মধ্যেই উদগ্র হইয়া মিথ্যা স্পর্ধা দ্বারা স্বামীকে বিদ্ধ করিয়া গৌরী রুদ্ধকণ্ঠে কহিল, “ভালােবাসি, তুমি কী করিতে চাও করাে!" পরেশ তৎক্ষণাৎ ঘরে তালাচাবি লাগাইয়া তাহাকে রুদ্ধ করিয়া আদালতে চলিয়া গেল।
{{gap}}অসহ্য রােষে গৌরী কোনােমতে দ্বার উন্মােচন করাইয়া তৎক্ষণাৎ বাড়ি হইতে বাহির হইয়া গেল।

পরমানন্দ নিভৃত ঘরে জনহীন মধ্যাহ্নে শাস্ত্রপাঠ করিতেছিলেন। হঠাৎ অমেঘবাহিনী বিদ্যল্লেতার মতো গৌরী ব্রহমচারীর শাস্ত্ৰাধ্যয়নের মাঝখানে আসিয়া ভাঙিয়া পড়িল
{{gap}}পরমানন্দ নিভৃত ঘরে জনহীন মধ্যাহ্নে শাস্ত্রপাঠ করিতেছিলেন। হঠাৎ অমেঘবাহিনী বিদ্যুল্লতার মতাে গৌরী ব্রাহ্মচারীর শাস্ত্রধ্যয়নের মাঝখানে আসিয়া ভাঙিয়া পড়িল।
গর কহিলেন, “এ কাঁ।” শিষ্য কহিল, “গরদেব, অপমানিত সংসার হইতে আমাকে উদ্ধার করিয়া লইয়া চলো, তোমার সেবারতে আমি জীবন উৎসগা করিব।”

পরমানন্দ কঠোর ভৎসনা করিয়া গৌরীকে গহে ফিরিয়া পাঠাইলেন। কিন্তু, হয়। গরদেব, সেদিনকার সেই অকস্মাং ছিন্নবিচ্ছিন্ন অধ্যয়নসত্র আর কি তেমন করিয়া জোড়া লাগিতে পারিল।
{{gap}}গুরু কহিলেন, “এ কী।”
পরেশ গহে আসিয়া মন্তবার দেখিয়া সন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখানে কে আসিয়াছিল।”

মন্ত্ৰী কহিল, “কেহ আসে নাই, আমি গরে দেবের গহে গিয়াছিলাম।” পরেশ মহন্তকাল পাংশ এবং পরক্ষণেই রক্তবর্ণ হইয়া কহিলেন, “কেন গিয়াছিলে।"
{{gap}}শিষ্য কহিল, “গুরুদেব, অপমানিত সংসার হইতে আমাকে উদ্ধার করিয়া লইয়া চলো, তােমার সেবাব্রতে আমি জীবন উৎসর্গ করিব।”।
গৌরী কহিল, “আমার খশি।" সেদিন হইতে পাহারা বসাইয়া সীকে ঘরে রাধ করিয়া পরেশ এমনি উপদ্রব আরম্ভ করিলেন যে, শহরময় কুৎসা রটিয়া গেল।

এই-সকল কুৎসিত অপমান ও অত্যাচারের সংবাদে পরমানন্দের হরিচিন্তা দর হইয়া গেল। এই নগর অবিলম্বে পরিত্যাগ করা তিনি কতব্য বোধ করিলেন অথচ উৎপীড়িতকে ফেলিয়া কোনোমতেই দরে যাইতে পারিলেন না। সন্ন্যাসীর এই কয়দিনকার দিনরাত্রের ইতিহাস কেবল অন্তযর্ণমাই জানেন।
{{gap}}'পরমানন্দ কঠোর ভৎসনা করিয়া গৌরীকে গৃহে ফিরিয়া পাঠাইলেন। কিন্তু, হায় গুররদেব, সেদিনকার সেই অকস্মাৎ ছিন্নবিচ্ছিন্ন অধ্যয়নসত্র আর কি তেমন করিয়া জোড়া লাগিতে পারিল।
অবশেষে অবরোধের মধ্যে থাকিয়া গৌরী একদিন পত্র পাইল, “বংসে, আলোচনা করিয়া দেখিলাম, ইতিপবে অনেক সাধনী সাধকরমণী কৃষ্ণপ্রেমে সংসার ত্যাগ করিয়াছেন। যদি সংসারের অত্যাচারে হরিপাদপদ্ম হইতে তোমার চিত্ত বিক্ষিপ্ত

প্রভূব অভয় পদারবিন্দে উৎসগা করিতে প্রয়াসী হইব। ২৬শে ফাল্গন বুধবারে অপরাহ্ল ২ ঘটিকার সময় ইচ্ছা করিলে তোমাদের পকেরিণীতীরে আমার সহিত সাক্ষাৎ হইতে পারবে ।”
{{gap}}পরেশ গহে আসিয়া মুক্তদ্বার দেখিয়া স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখানে কে আসিয়াছিল।”
গৌরী পত্ৰখানি কেশে বধিয়া খোঁপার মধ্যে ঢাকিয়া রাখিল। ২৬শে ফাল্গন

{{gap}}স্ত্রী কহিল, “কেহ আসে নাই, আমি গুরুদেবের গহে গিয়াছিলাম।”

{{gap}}পরেশ মহতকাল পাংশু এবং পরক্ষণেই রক্তবর্ণ হইয়া কহিলেন, “কেন গিয়াছিলে।”

{{gap}}গৌরী কহিল, “আমার খুশি।”

{{gap}}সেদিন হইতে পাহারা বসাইয়া স্ত্রীকে ঘরে রন্ধে করিয়া পরেশ এমনি উপদ্রব আরম্ভ করিলেন যে, শহরময় কুৎসা রটিয়া গেল।

{{gap}}এই-সকল কুৎসিত অপমান ও অত্যাচারের সংবাদে পরমানন্দের হরিচিন্তা দূরে হইয়া গেল। এই নগর অবিলম্বে পরিত্যাগ করা তিনি কর্তব্য বােধ করিলেন অথচ উৎপীড়িতকে ফেলিয়া কোনােমতেই দরে যাইতে পারিলেন না।সন্ন্যাসীর এই কয়দিনকার দিনরাত্রের ইতিহাস কেবল অন্তর্যামীই জানেন।

{{gap}}অবশেষে অবরােধের মধ্যে থাকিয়া গৌরী একদিন পত্র পাইল, “বৎসে, আলােচনা করিয়া দেখিলাম, ইতিপূর্বে অনেক সাধী সাধকরমণী কৃষ্ণপ্রেমে সংসার ত্যাগ করিয়াছেন। যদি সংসারের অত্যাচারে হরিপাদপদ্ম হইতে তােমার চিত্ত বিক্ষিপ্ত হইয়া থাকে তবে জানাইলে ভগবানের সহায়তায় তাঁহার সেবিকাকে উদ্ধার করিয়া প্রভুব অভয় পদারবিন্দে উৎসর্গ করিতে প্রয়াসী হইব। ২৬শে ফাগুন বুধবারে অপরাহু ২ ঘটিকার সময় ইচ্ছা করিলে তােমাদের পুষ্করিণীতীরে আমার সহিত সাক্ষাৎ হইতে পারিবে।”

{{gap}}গৌরী পত্রখানি কেশে বাঁধিয়া খোঁপার মধ্যে ঢাকিয়া রাখিল। ২৬শে ফাগুন