পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/১৬১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Pywikibot touch edit
 
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||ছেলেদের রামায়ণ|১৬১}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
বাধিয়া গেল। যাহা হউক, ইন্দ্রজিতের আর যজ্ঞ করা হইল না। রাক্ষস আর বানরের গর্জনে লঙ্কা কাঁপিতেছে, এই গোলমালের ভিতরে কি আর যজ্ঞ হয়! আর, এখনই গিয়া লক্ষ্মণকে না আটকাইলে তাই তিনি মুহূর্তের মধ্যেই সকলকে মারিয়া শেষ করিবেন। কাজেই তখন ইন্দ্রজিৎ ছুটিয়া না আসিয়া আর যায় কোথায়। আর সেইজন্যই যজ্ঞ ফেলিয়া ছুটিয়া আসিতে হইল। প্রাণ বাঁচিলে তবে ত যজ্ঞ হইবে!
ছেলেদের রামায়ণ >や>

বাধিয়া গেল। যাহা হউক, ইন্দ্ৰজিতের আর যজ্ঞ করা হইল না। রাক্ষস আর বানরের গর্জনে লঙ্কা কঁাপিতেছে, এই গোলমালের ভিতরে কি আর যজ্ঞ হয়! আর, এখনই গিয়া লক্ষ্মণকে না আটকাইলে তাই তিনি মুহুর্তের মধ্যেই সকলকে মারিয়া শেষ করিবেন। কাজেই তখন ইন্দ্রজিৎ ছুটিয়া না আসিয়া আর যায় কোথায়! আর সেইজন্যই যজ্ঞ ফেলিয়া ছুটয়া আসিতে হইল। প্রাণ বাচিলে তবে ত যজ্ঞ হইবে!
এদিকে হনুমান প্রকাণ্ড গাছ লইয়া রাক্ষসদিগের সহিত ঘোরতর যুদ্ধ আরম্ভ করিয়াছে। রাক্ষসেরাও তাহাকে নানাবিধ অস্ত্র ছুড়িয়া মারিতে ছড়িতেছে না। এমন সময় ইন্দ্রজিৎ আসিয়া হনুমানকে তাড়া করিল। তাহা দেখিয়া বিভীষণ লক্ষ্মণকে বলিল, ইন্দ্রজিৎ আসিতেছে, এই বেলা দুষ্টকে বধ কর!’
{{gap}}এদিকে হনুমান প্রকাণ্ড গাছ লইয়া রাক্ষসদিগের সহিত ঘোরতর যুদ্ধ আরম্ভ করিয়াছে। রাক্ষসেরাও তাহাকে নানাবিধ অস্ত্র উঁড়িয়া মারিতে ছাড়িতেছে না। এমন সময় ইন্দ্রজিৎ আসিয়া হনুমানকে তাড়া করিল। তাহা দেখিয়া বিভীষণ লক্ষ্মণকে বলিল, ‘ঐ ইন্দ্রজিৎ আসিতেছে, এই বেলা দুষ্টকে বধ কর!’

তখন লক্ষ্মণ আর ইন্দ্ৰজিতে কি যুদ্ধই না হইল! ইন্দ্রজিৎ রথের উপরে, আর লক্ষ্মণ হনুমানের পিঠের উপরে। দুইজনেই প্রায় সমান বীর, সুতরাং অনেকক্ষণ পর্যন্ত সমানভাবেই যুদ্ধ চলিল, কাহারও হার জিত নাই। অস্ত্রের ঘায় দুইজনের শরীর দিয়াই দর দর করিয়া রক্ত পড়িতেছে। অদ্ভূত-অদ্ভুত অস্ত্র সকল দুইজনেই ছুড়িতেছেন, আবার দুইজনেই কাটিতেছেন। ইহার মধ্যে একবার ইন্দ্ৰজিতের রথের ঘোড়া আর সারথি কাটা যায়। আবার বাণের অন্ধকারের ভিতরে কখন ছুটয়া গিয়া, সে আবার নূতন রথে চড়িয়া আসে। তারপর ক্রমাগত দুইবার তাহাকে ধনুক বদলাইতে হইয়াছে। খানিক পরে আবার লক্ষ্মণের ভল্লআস্ত্রে ইন্দ্ৰজিতের নূতন রথের সারথি মারা গেল;আর বিভীষণ গদার ঘায়ে তাহার চারিটা ঘোড়া চুরমার করিয়া দিল। তখন ইন্দ্রজিৎ রথ হইতে নামিযা যে-ই বিভীষণকে একটা শক্তি ছুড়িয়া মারিয়াছে, অমনি লক্ষ্মণ তাহা খণ্ড খণ্ড করিয়া কাটিয়া ফেলিলেন।
{{gap}}তখন লক্ষ্মণ আর ইন্দ্রজিতে কি যুদ্ধই না হইল! ইন্দ্রজিৎ রথের উপরে, আর লক্ষ্মণ হনুমানের পিঠের উপরে। দুইজনেই প্রায় সমান বীর, সুতরাং অনেকক্ষণ পর্যন্ত সমানভাবেই যুদ্ধ চলিল, কাহারও হার জিত নাই। অস্ত্রের ঘায় দুইজনের শরীর দিয়াই দর দর করিয়া রক্ত পড়িতেছে। অদ্ভুত-অদ্ভুত অস্ত্র সকল দুইজনেই ছুঁড়িতেছেন, আবার দুইজনেই কাটিতেছেন।
এইরূপে আরও অনেক যুদ্ধের পর শেষে লক্ষ্মণ তাঁহার ধনুকে অস্ত্র জুড়িলেন। ইন্দ্ৰ যাহা দিয়া দৈত্যকে মারিয়াছিলেন, এ সেই অস্ত্র। তাহার চেহারা দেখিয়াই রাক্ষসদিগের প্রাণ উড়িয়া গেল। আর লক্ষ্মণ তাহ ছুড়িবামাত্রই ইন্দ্ৰজিতের মাথা কাটিয়া একেবারে দুইখান হইল।

ইন্দ্ৰজিতের মৃত্যুতে কেবল যে বানরেরাই আনন্দে জয় লক্ষ্মণ! বলিয়া লেজ নাডিল, তাহা নহে। স্বর্গ হইতে যেমন করিয়া ফুল পড়িল আর দুন্দুভিব শব্দ শুনা গেল, তাহাতে নিশ্চমই বুঝা গেল যে দেবতারাও ইহাতে কম খুশি হন নাই। দুঃখ হইল খালি রাক্ষসদেরই। তাহা ছাড়া আর কে না সুখী হইল ?
{{gap}}ইহার মধ্যে একবার ইন্দ্রজিতের রথের ঘোড়া আর সারথি কাটা যায়। আবার বাণের অন্ধকারের ভিতরে কখন ছুটিয়া গিয়া, সে আবার নূতন রথে চড়িয়া আসে। তারপর ক্রমাগত দুইবার তাহাকে ধনুক বদলাইতে হইয়াছে। খানিক পরে আবার লক্ষ্মণের ভল্লঅস্ত্রে ইন্দ্রজিতের নূতন রথের সারথি মারা গেল;আর বিভীষণ গদার ঘায়ে তাহার চারিটা ঘোড়া চুরমার করিয়া দিল। তখন ইন্দ্রজিৎ রথ হইতে নামিযা যে-ই বিভীষণকে একটা শক্তি ছুঁড়িয়া মারিয়াছে, অমনি লক্ষ্মণ তাহা খণ্ড খণ্ড করিয়া কাটিয়া ফেলিলেন।
ইন্দ্ৰজিতের মৃত্যুর কথা শুনিয়া রাবণ প্রথমে অনেক কাদিল। তারপর রাগে অস্থির হইয়া বলিল, ইন্দ্রজিৎ মায়া-সীতা কাটিয়াছিল, আমি সত্যসত্যই সীতাকুে কাটিব! মন্ত্রীরা বারণ না করিলে, সেদিন সে সীতাকে কাটিয়াই ফেলিত। মন্ত্রীদের কথায় অনেক কষ্টে রাগ থামাইয়া, সে বলিল, রাক্ষসগণ, আজ তোমরা গিযা কেবল রামকে ঘিবিয়া মার। তোমাদের হাতে আজ যদি বাঁচিতেও পারে, তবুও ইহাতে সে খুব দুর্বল হইয়া যাইবে। তাহা হইলে কাল আমি তাহাকে গিয়া মারিব।”

সেই রাক্ষসেরা যখন রামকে মারিতে গেল, তখন রাম এমনই যুদ্ধ করিলেন যে তেমন যুদ্ধ কেহ কখনও দেখে নাই। তিনি কোথায় আছেন তাহাই কেহ বুঝিতে পারিল না, এত তাড়াতাড়ি তিনি ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিলেন। তিন ঘণ্টার ভিতরে আঠার হাজার হাতি, দুই লক্ষ সৈন্য, দশ হাজার রথ, আর সওয়ারসুদ্ধ চৌদ্দ হাজার ঘোড়া তাহার বাণে খণ্ড খণ্ড
{{gap}}ইরূপে আরও অনেক যুদ্ধের পর শেষে লক্ষ্মণ তাঁহার ধনুকে অস্ত্র জুড়িলেন। ইন্দ্র যাহা দিয়া দৈত্যকে মারিয়াছিলেন, এ সেই অস্ত্র। তাহার চেহারা দেখিয়াই রাক্ষসদিগের প্রাণ উড়িয়া গেল। আর লক্ষ্মণ তাহা ছুঁড়িবামাত্রই ইন্দ্রজিতের মাথা কাটিয়া একেবারে দুইখান হইল।
উপেন্দ্ৰ—২১

{{gap}}ইন্দ্রজিতের মৃত্যুতে কেবল যে বানরেরাই আনন্দে ‘জয় লক্ষ্মণ! বলিয়া লেজ নাডিল, তাহা নহে। স্বর্গ হইতে যেমন করিয়া ফুল পড়িল আর দুন্দুভিব শব্দ শুনা গেল, তাহাতে নিশ্চই বুঝা গেল যে দেবতারাও ইহাতে কম খুশি হন নাই। দুঃখ হইল খালি রাক্ষসদেরই। তাহা ছাড়া আর কে না সুখী হইল?

{{gap}}ইন্দ্রজিতের মৃত্যুর কথা শুনিয়া রাবণ প্রথমে অনেক কাঁদিল। তারপর রাগে অস্থির হইয়া বলিল, ‘ইন্দ্রজিৎ মায়া-সীতা কাটিয়াছিল, আমি সত্যসত্যই সীতাকে কাটিব! মন্ত্রীরা বারণ না করিলে, সেদিন সে সীতাকে কাটিয়াই ফেলিত। মন্ত্রীদের কথায় অনেক কষ্টে রাগ থামাইয়া, সে বলিল, ‘রাক্ষসগণ, আজ তোমরা গিয়া কেবল রামকে ঘিরিয়া মার। তোমাদের হাতে আজ যদি বাঁচিতেও পারে, তবুও ইহাতে সে খুব দুর্বল হইয়া যাইবে। তাহা হইলে কাল আমি তাহাকে গিয়া মারিব।’

{{gap}}সেই রাক্ষসেরা যখন রামকে মারিতে গেল, তখন রাম এমনই যুদ্ধ করিলেন যে তেমন যুদ্ধ কেহ কখনও দেখে নাই। তিনি কোথায় আছেন তাহাই কেহ বুঝিতে পারিল না, এত তাড়াতাড়ি তিনি ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিলেন। তিন ঘণ্টার ভিতরে আঠার হাজার হাতি, দুই লক্ষ সৈন্য, দশ হাজার রথ, আর সওয়ারসুদ্ধ চৌদ্দ হাজার ঘোড়া তাঁহার বাণে খণ্ড খণ্ড