বিষাদ-সিন্ধু/উদ্ধার পর্ব্ব/ঊনবিংশ প্রবাহ

ঊনবিংশ প্রবাহ

 রাত্রির পর দিন, দিনের পর রাত্রি আসিয়া দেখিতে দেখিতে সপ্তাহ কাল অতীত হইয়া গেল। মদিনাবাসীরা মোহাম্মদ হানিফাকে সসৈন্যে আর এক সপ্তাহ মদিনায় থাকিতে বিশেষ অনুরোধ করিলেন। হানিফা অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া ‘না’ কিছুই কহিলেন না।

 গাজী রহ্‌মান বলিলেন, “আপনাদের অনুরোধ অবশ্যই প্রতিপাল্য কিন্তু জয়নাল-উদ্ধারে যতই বিলম্ব, ততই আশঙ্কা—ততই বিপদ মনে করিতে হইবে। এ সময় বিশ্রামের সময় নহে, এক এক মূহুর্ত্ত এক এক যুগ বলিয়া মনে হইতেছে। বিশেষতঃ, মারওয়ানের মন্ত্রণার অন্ত নাই—কোন্ সময় এজিদকে সে কোন্ পথে চালাইয়া কি অনর্থ ঘটাইবে, তাহা কে বলিতে পারে? হয় ত, সে সময় এজিদের প্রাণান্ত করিয়া দামেস্কনগর সমভূমি করিলেও সেই দুঃখের উপশম হইবে না,—সে অনন্ত দুঃখের ইতি হইবে না। আপনারা প্রবীণ এবং প্রাচীন, যাহা ভাল হয় করুন।”

 নাগরিকদলের একজন বলিলেন, “মন্ত্রিবর! আপনার সারগর্ভ বচন অবশ্যই আদরণীয়, সন্দেহ নাই। কিন্তু আমরা যে কারণে প্রভুকে আর এক সপ্তাহকাল থাকিতে অনুরোধ করিয়াছি, সে কথা এখন বলিব না, তবে সময়ে তাহা অপ্রকাশ থাকিবে না। জয়নাল আবেদীন পাপাত্মা এজিদের বন্দীগৃহে বন্দী; প্রভু হাসান-হোসেনের স্ত্রী, পরিবার, নূরনবী মােহাম্মদের সহর্ম্মিণী বিবি সালেমা[১]—ইঁহারাও বন্দী; দিবারাত্রি, প্রহরে দণ্ডে, পলে অনুপলে আমাদের অন্তরে এ সকল কথা জাগিতেছে,—প্রাণ কাঁদিতেছে, তাহাদের দুঃখের কথা শুনিয়া হৃদয় বিদীর্ণ হইতেছে। মনে হইতেছে যদি পাখা থাকিত, যদি মুহুর্ত্ত মধ্যে যাইবার কোন উপায় থাকিত, তবে এখনই যাইয়া দামেস্ক-নগর আক্রমণ এবং নরাধম এজিদের প্রাণবধ করিয়া জয়নাল-উদ্ধারের উপায় করিতাম। আমরা ভুক্তভােগী, আমাদের পদে পদে আশঙ্কা, পদে পদে নৈরাশ্য। অধিক আর কি বলিব, এজিদের আজ্ঞায়, মারওয়ানের মন্ত্রণায়, অলীদের চক্রে, জাএদার সাহায্যে, মায়মুনার কৌশলে আমরা মহর্ষি হাসানকে হারাইয়াছি। জেয়াদের ছলনায়, সেই মহাপাপী চির-নারকী জেয়াদের প্রবঞ্চনায় প্রভু হােসেন, মহাবীর কাসেম এবং আলী আক্‌বর প্রভৃতিকে মদিনা হইতে চিরবিদায় দিয়াছি! মন্ত্রিবর! কি বলিব? মদিনার শত শত সমুজ্জ্বল রত্ন কারবালা-প্রান্তরে রক্তস্রোতে ভাসিয়া গিয়াছে—সে সকল কথা কি আমরা ভুলিয়াছি? তবে যে কেন বিলম্ব করিতেছি, বলিব। যদি ঈশ্বর সে সময়ে মুখ দেখান, তবেই বলিব। আমাদের শত অনুরােধ, মদিনাবাসী আবালবৃদ্ধ নরনারী সকলেরই অনুরােধ, আর এক সপ্তাহ আপনারা সসৈন্যে মদিনায় অবস্থান করুন। সময় হইলেই আমরা কখনই দামেস্ক-গমনে আপনাদিগকে বাধা দিব না, বরং মনের আনন্দে ‘জয় জয়’ রবে জয়নাল-উদ্ধারে আপনাদের সঙ্গে আমরাও যাত্রা করিব।”

 মদিনাবাসীদের মত না হইলে দামেস্ক-আক্রমণ করা হইবে না, ইহা পূর্ব্ব হইতেই সুস্থির আছে। সুতরাং গাজী রহ্‌মান আর দ্বিরুক্তি করিলেন না; অন্য অন্য আলাপে নগরবাসীদিগকে সন্তুষ্ট করিলেন। সে দিন কাটিয়া গেল। নিশাগমনে ঈশ্বর আরাধনা করিয়া সকলেই স্ব স্ব স্থানে নিদ্রাদেবীর নিয়মিত অর্চ্চনায় আশ্রয় গ্রহণ করিলেন।

 মোহাম্মদ হানিফা শয়ন করিয়া আছেন, ঘোর নিদ্রায় অভিভূত। স্বপ্ন দেখিতেছেন—যেন হজরত নূরনবী মোহাম্মদ তাঁহার শিয়রে দণ্ডায়মান হইয়া বলিতেছেন, “মোহাম্মদ হানিফা! জাগ্রত হইয়া আলস্য পরিহার কর, এ সময় তোমার বিশ্রামের সময় নহে। তোমার পরিজন দামেস্কে বন্দী, তুমি মদিনায় বিশ্রামসুখে বিহ্বল? দামেস্কে ঈশ্বরের নাম করিয়া এখনই যাত্রা কর, জয়নাল-উদ্ধার হইবেই,—কোন চিন্তা নাই। ঈশ্বর তোমার সহায়।” মোহাম্মদ হানিফা যেন স্বপ্নযোগে প্রভুর পদধূলি মস্তকে গ্রহণ করিলেন। তাঁহার নিদ্রা ভাঙ্গিয়া গেল—অঙ্গ শিহরিয়া উঠিল। ভয়ে ভীত হইয়া তিনি গাজী রহ্‌মানকে ডাকিয়া, মস্‌হাব কাক্কা, ওমর আলী এবং আর আর আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুগণকে জাগাইয়া স্বপ্ন-বিবরণ বলিলেন।

 গাজী রহ্‌মানকে তিনি বলিলেন, “প্রভুর আদেশ হইয়াছে, আর বিলম্ব নাই, এখনই যাত্রা,—এই-ই শুভ সময়। হাঁ, এখন বুঝিলাম—‘সেই সময়ের’ অর্থ এখন বুঝিলাম। আমরা কেবল রাজনীতি, সমরনীতি, বিধিব্যবস্থা, যুক্তি ও কারণের উপর নির্ভর করিয়াই কার্য্য করি। ভ্রম হইলে ঈশ্বরের দোহাই দিয়া রক্ষা পাই। কিন্তু মদিনাবাসীরা আমাদের অপেক্ষা সহস্রাংশে শ্রেষ্ঠ। আমি সেই সময়ের অর্থ বুঝিতে পারি নাই। ধন্য মদিনা। ধন্য তোমার পবিত্রতা! ধন্য তোমায় একাগ্রতা।”

 মোহাম্মদ হানিফা বলিলেন, “গাজী রহ্‌মান! আমরা বাহ্যিক ব্যবহার, বাহ্যিক কারণ দেখিয়াই কার্য্যানুষ্ঠান করি; কিন্তু মদিনাবাসীদিগের প্রতি কার্য্য ঈশ্বরে নির্ভর করে এবং নূরনবী মোহাম্মদের প্রতি তাঁহাদের অটল ভক্তি; তাহার প্রমাণ প্রাচীন কাহিনী। প্রভুর জন্মস্থান মক্কা নগরের অধিবাসীরা প্রভুর কথায় বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন করা দূরে থাকুক, বরং তাহার জীবনের বৈরী হইয়াছিল। এই মদিনাবাসীরাই তাঁহাকে সম্মানের সহিত গ্রহণ করেন এবং ঈশ্বরের সত্যধর্ম্ম এই মদিনাবাসীরাই প্রকাশ্যভাবে অকপটে গ্রহণ করেন। আর অধিক কি বলিব, মদিনাবাসীর অন্তর সরল ও প্রেমপূর্ণ। আমি এখনই যাত্রা করিব, প্রভাতের প্রতীক্ষায় আর থাকিব না।”

 আজ্ঞামাত্র ঘােররবে ভেরী বাজিতে লাগিল। সৈন্যগণ নিদ্রাসুখ পরিহার করিয়া আতঙ্কে জাগিয়া উঠিল। সাজ সাজ রবে চতুর্দ্দিকে মহা কোলাহল পড়িয়া গেল। সজ্জিত হইবার সময় প্রভাতকালীন উপাসনার জন্য আহ্বান-স্বর সকলের কর্ণকে আনন্দিত করিল। মদীনাবাসীরা প্রথমে ভেরীর শব্দে এবং পরে উপাসনার সুমধুর আহ্বান-স্বরে জাগরিত হইয়া নিয়মিতভাবে উপাসনায় যােগ দিলেন। মােহাম্মদ হানিফা, গাজী রহমান প্রভৃতি সৈন্যাধ্যক্ষগণ এবং সৈন্যগণ সজ্জিতবেশে উপাসনায় দণ্ডায়মান হইয়া একাগ্রচিত্তে উপাসনা সমাধান করিয়া জয়নাল উদ্ধারের জন্য পরমেশ্বরের নিকট প্রার্থনা করিলেন।

 নগরবাসীর মহা ব্যস্ত হইয়া হানিফার চতুর্দ্দিক বেষ্টন করিয়া জোড়করে বলিতে লাগিলেন, “হজরত! গত কল্য আমরা, যে প্রার্থনা করিয়াছিলাম, তাহা বােধ হয় গ্রাহ্য হইল না?” মােহাম্মদ হানিফা বিনয় বচনে বলিলেন, “ভ্রাতৃগণ! বিগত নিশায় স্বপ্নযােগে প্রভু মােহাম্মদ আমাকে দামেস্ক-গমনে আদেশ করিয়াছেন। আর আমার সাধ্য নাই যে, এখানে ক্ষণকালও বিলম্ব করি।”

 “হজরত! আমরা অজ্ঞ, অপরাধ মার্জ্জনা করুন। ঐ আদেশের জন্যই সপ্তাহকাল মদিনায় আপনার অবস্থিতির নিমিত্ত পূর্ব্বেও প্রার্থনা করিয়াছিলাম, গত কল্যের প্রার্থনাও ঐ কারণে। আমরা চির আজ্ঞাবহ দাস, মার্জ্জনা করুন। এখন আমাদের আর কোনও কথা নাই,—আপনিও প্রস্তুত হইয়াছেন, আমরাও প্রস্তুত আছি। আপনি অশ্বে কশাঘাত করিলেই দেখিবেন, কত লােক জয়নাল-উদ্ধারে আপনার অনুগামী হয়!”

 মােহাম্মদ হানিফা, মস্‌হাব কাক্কা, গাজী রহ্‌মান ও হানিফার আর আর আত্মীয়স্বজন এবং ভিন্ন ভিন্ন দেশীয় রাজগণ বীরদর্পে অশ্বপৃষ্ঠে ঈশ্বরের নাম করিয়া চাপিয়া বসিলেন। রণবাদ্য বাজিতে লাগিল। সৈন্যগণ শ্রেণীবদ্ধ হইয়া হানিফার বিজয়-ঘােষণা করিতে করিতে যাত্রা করিল। ধানুকী, পদাতিক ও পতাকাধারিগণ আনন্দরবে অগ্রে অগ্রে চলিল।

 সাতবার হজরতের পবিত্র রওজা ঘুরিয়া সমস্বরে ঈশ্বরের নাম উচ্চারণ করিয়া সকলে জয়নাল-উদ্ধারে যাত্রা করিলেন। মদিনাবাসীরাও অস্ত্রেশস্ত্রে সুসজ্জিত হইয়া মহানন্দে হানিফার জয়ঘােষণা করিতে করিতে সৈন্যদলে মিশিলেন। মারণ ভিন্ন মরণ-কথা কাহারও মনে নাই। সিংহদ্বার পার হইয়া তাহারা একস্বরে ঈশ্বরের নাম সপ্ত বার উচ্চারণ করিয়া যাইতে লাগিলেন। পথ প্রদর্শক উষ্ট্রারোহী মধুরস্বরে বংশীবাদন করিতে করিতে অগ্রে অগ্রে চলিল।

 দিবাভাগে গমন—রাত্রে বিশ্রাম। এই ভাবে কয়েক দিন যাইতে যাইতে একদিন পথ-প্রদর্শকদল সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করিবার জন্য ভেরী বাজাইতে লাগিল। সকলেই সমুৎসুক হইয়া সম্মুখে স্থিরনেত্রে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিতেই দেখিলেন যে, বহু দূরে শিবিরের উচ্চ চূড়ায় লােহিত নিশান উড়িতেছে। গাজী রহ্‌মান সাঙ্কেতিক নিশান উড়াইয়া সকলকে গমনে ক্ষান্ত করিলেন। সকলেই মহাব্যস্ত! তত্ত্বানুসন্ধানে তাঁহারা জানিলেন যে, সম্মুখে সম-নিশান উড়িতেছে, সবিশেষ না জানিয়া আর অগ্রসর হওয়া উচিত নহে।

 মারওয়ান-শিবিরেও মারওয়ান ভেরীবাদনধ্বনি শুনিল। শিবিরের বাহিরে আসিয়া সে যাহা দেখিল, তাহাতে তাহার মুখে অন্য কোন কথা সরিল না। অস্থির ও আতঙ্কিতভাবে সে অলীদকে জিজ্ঞাসা করিল, “ভ্রাতঃ! আবার যে পূর্ব্বগগনে কি দেখা যায়? ঐ কি আগমন?”

 “কার আগমন?”

 “আর কার? যার ভয়ে অলীদ কম্পমান—মারওয়ান অস্থির।”

 অলীদ বিশেষ লক্ষ্য করিয়া দেখিয়া বলিল, “আর সন্দেহ নাই—এক্ষণে কি করা যায়?”

 “আর কি করা যায়? কিছু দিন বিশ্রাম করিব আশা ছিল—ঘটিল না। আর ক্ষণকাল তিষ্ঠিলেই তােমার আমার দশা মিলিয়া মিশিয়া, বােধ হয়, একই হইবে। হয়ত কিছু বেশীও হইতে পারে। পূর্ব্বসঙ্কল্প ঠিক রাখিয়া, যত শীঘ্র হইতে পারে যাইয়া নগর রক্ষার উপায় করা কর্ত্তব্য। যদি নিতান্তপক্ষে উহারা আসিয়া পড়ে, তখন দামেস্ক-নগর নিকটস্থ প্রান্তরে আবার ডঙ্কা বাজাইয়া নিশান উড়াইয়া ফিরিয়া দাঁড়াইব। এক্ষণে আর কিছুই নহে; প্রস্থান—ত্রস্তে প্রস্থান।”

 “উহারা যে বিক্রমে আসিতেছে, আমরা যে উহাদের অগ্রে দামেস্কে যাইতে পারিব, তাহাতেও অনেক সন্দেহ! আপন রাজ্যে দ্বিগুণ বল, যেখানেই ‘ধর ধর’ সেইখানেই ‘মার মার’। ঐ দেখ, উহারাও গমনে ক্ষান্ত হইয়াছে। না জানিয়া বিশেষ তত্ত্ব না লইয়া, কেন অগ্রসর হইবে? আমাদের সন্ধান না লইতে লইতেই আমরা এ স্থান হইতে চলিয়া যাই। আর কথা নাই ভাই! প্রস্থান—শীঘ্র প্রস্থান!”

 তখনই শিবির-ভঙ্গের আদেশ হইল, লোহিত পাতাকা নীচে নামিল। মুহূর্ত্তমধ্যে শিবির ভঙ্গ করিয়া মারওয়ান ও অলীদ সৈন্যগণসহ দামেস্কাভিমুখে বেগে ধাবিত হইল।

 ওদিকে গাজী রহমান মহাচিন্তায় পড়িয়াছেন। ওই লোহিত নিশান উড়িতে উড়িতে কোথায় উড়িয়া গেল? দেখিতে দেখিতে উহাদের শিবিরও ভগ্ন হইল!—লোকজনও সরিতে লাগিল। ক্রমে উহারা ঈষৎ দৃষ্টিগোচর হইতে লাগিল, ক্রমেই দৃষ্টির অগোচর হইল।

 মোহাম্মদ হানিফা গাজী রহমানকে বলিলেন, “আর চিন্তা কেন, পৃষ্ঠ দেখাইয়া যখন পলাইয়া গেল, তখন আর সন্দেহ কি? পলায়িত ব্যক্তির পরিচয় নিষ্প্রয়োজন, আজ এই স্থানেই বিশ্রাম।”

 “তাহাতে ক্ষতি নাই, কিন্তু বিশেষ সতর্কভাবে থাকিতে হইবে। তাহারা পলাইল বলিয়া নিশ্চিন্তে থাকিতে পারি না। গুপ্তচরদিগকে কয়েক জন চতুর সৈন্যসহ সন্ধানে পাঠাইতেছি। সন্ধান করিয়া জানিয়া আসুক,—উহারা কে? কেন শিবির স্থাপন করিয়াছিল? কেনই বা চলিয়া গেল?”

 “ও ত ওতবে অলীদের শিবির নহে?”

 “না না; অলীদের শিবিরের অত জাঁকজমক কোথায়?”

 “তবে কে?”

 “সেই ত সন্দেহ, এখনই জানিতে পারিবে।”

  1. হজরত মােহাম্মদের সহধর্ম্মিণীদিগের নাম ১। হজরত বিবি খােদেজা—সর্ব্বশ্রেষ্ঠা প্রথমা স্ত্রী, ২। সওদা, ৩। আয়েসা, ৪। হাফেজা, ৫। জিনাত, ৬। ওম্মে সালেমা, ৭। জয়নাব, ৮। ওম্মে হাবিবা, ৯। জোবুরিয়া, ১০ সুফিয়া, ১১। মায়মুনা। মাননীয়া বিবি খোদেজার গর্ভপ্রসূতা কনিষ্ঠা মহামাননীয়া বিবি ফাতেমা—হজরত আলীর প্রাণপ্রতিম সহধর্ম্মিণী, হাসান-হোসেনের জননী।