ব্রজবিলাস/দ্বিতীয় পরিশিষ্ট
দ্বিতীয় পরিশিষ্ট।
অনাবৃতাঃ কিল পুরা স্ক্রিয় আসন বরাননে।
কামচারবিহারিণ্যঃ স্বতন্ত্রাশ্চারুহাসিনি॥
'তাসাং ব্যুচ্চরমাণানাং কৌমারাৎ মুভগে পীন।
নাধর্ম্মোহভূরারোহে স হি ধর্মঃ পুরাভবৎ॥
প্রমাণষ্টা ধর্ম্মোহয়ং পুজ্যতে চ মহর্ষিভিঃ।
উত্তরেষু চ রস্তোরু কুরুঙ্গাপি পুজ্যতে॥
স্ত্রশমলুগ্রহকরঃ স হি ধর্মঃ সনাতনঃ
অশ্মিংন্তু লোকে ন চিরাম্মাদেয়ং শুচিস্মিতে।
স্থাপিতা যেন যচ্চ তন্মে বিস্তরতঃ শৃণু এ॥
বভুবোদালকো নাম মহর্ষিরিতি নঃ শ্রুত।
শ্বেতকেতুরিতি খ্যাতঃ পুত্রস্যাভবনিঃ॥
ম্যাদেয়ং কৃতা তেন ধর্ম্মা বৈ শ্বেতকেভুনা।
কোপাৎ কমলপাক্ষি যখং তং নিবোধ মে॥
শ্বেতকেতেঃ কিল পুৱা সমক্ষং মাতরং পিতুঃ।
জাহ ব্রাহ্মণঃ পাণৌ গচ্ছাব ইতি চাব্রবীৎ॥
ঋষিপুত্রস্তুতঃ কোপং চকারামচোদিতঃ।
মাতরং তাং তথা দৃষ্টা নীয়মানাং বলাদিব॥
কুদ্ধৎ তন্তু পিতা দৃষ্টা শ্বেতকেতুমুবাচ হ।
মা তাত কোপং কাষীমেষ ধর্ম্ম সনাতনঃ॥
শীরতা হি সর্বেষাং বর্ণানামঙ্গনা ভুবি।
যথা গাবঃ স্থিতাস্তাত থে শ্বে বর্ণে তথা প্রজাঃ॥
ঋষিপুত্রোংশ তং ধৰ্মং শ্বেতকেতু চক্ষম।
চকার চৈব মর্যাদামিৎ স্ত্রীপুংসয়োভুবি॥
মানুষেষু মহাভাগে নত্বেবানন্য জন্তু।
তদা প্রভৃতি মর্যাদা স্থিতেয়মিতি নঃ শ্রুতম॥
ব্যুচ্চরস্তাঃ পতিং নার্যা অন্য প্রভৃতি পাতকম্।
জণহত্যাসমং ঘোরং ভবিষ্যত্যসুখাবহ॥
ভার্যাং তথা ব্যুচ্চরতঃ,কৌমারব্রহ্মচারিণীম্।
পতিতামেতদেব ভবিতা পাতকং ভুবি॥
পত্যা নিযুক্ত যা চৈব পত্নী পুত্রার্থমেব চ।
ন করিষ্যতি স্যশ্চ ভবিষ্যতি তদেব হি॥
ইতি তেন পুরা ভীরু মর্যাদা স্থাপিতা বলাৎ।
উদ্দালক পুণে ধর্মা বৈ শ্বেতকেতু[১]॥
পাণ্ডু কুন্তীকে কহিতেছেন, হে সুমুখি! চারুহাসিনি। পুর্ব্ব কালে স্ত্রীলোকেরা অরুদ্ধা, স্বাধীনা, ও স্বচ্ছন্দবিহারিণী ছিল। পতিকে অতিক্রম করিয়া, পুকুরে উপগত হইলে, তাহাদের অধর্ম্ম হইত না। পূর্ব কালে এই ধর্ম ছিল; ইহা প্রামাণিক ধর্ম; ঋষিরা এই ধর্ম মান্থ করিয়া থাকেন। উত্তর কুরুদেশে অ্যাপি এই ধর্ম মন্তি ও প্রচলিত আছে। এই সনাতন ধর্ম ধীদিগের পক্ষে অত্যক্ত অনুকূল। যে ব্যক্তি যে কারণে লোকে এই নিয়ম স্থাপন করিয়াছেন, তাহা বিস্তারিত কহিতেছি, গুন। শুনিয়াছি, উদ্দালক নামে মহর্ষি ছিলেন; শ্বেতকেতু নামে তাঁহার এক পুত্র জন্যে। সেই থেকে যে কারণে কোপারিষ্ট হইয়া, এই ধর্মযুক্ত নিয়ম স্থাপন করিয়াছেন, তাহা গুন। একদা উন্দালক, শেতকেতু, ও কেতুর জননী, তিন জমে উপবিষ্ট আছেন। এমন সময়ে, এক ব্রাহ্মণ আসিয়া শেভকেতুর মাতার হস্তে ধরিলে, এবং, এস যাই বলি, একান্তে লইয়া গেলেন। তখন, বিপুত্র, এইরূপে জননীকে মীয়মানা দেখিয়া, সহ্য করিতে না পারিয়া, অত্যক্ত কুপিত হইলেন। উদ্দালক শ্বেতকেতুকে কুপিত দেখিয়া কহিলেন, বৎস! কোপ করিও না, এত ধর্ম। পৃথিবীতে সকল বর্ণেরই স্ত্রী অরক্ষিত। গোজাতি যেমন স্বচ্ছন্দ বিহার করে, মনুষ্যেরাও সেইরূপ স্ব স্ব বর্ণে স্বচ্ছন্দ বিহার করে। ঋষিপুত্র শ্বেতকেতু, সেই ধর্ম্ম সহ্য করিতে না পারিয়া, পৃথিবীতে স্ত্রীপুরুষের সম্বন্ধে এই নিয়ম স্থাপন করিয়াছেন। হে মহাভাগে! আমরা শুনিয়াছি, তদবধি এই নিয়ম মনুষ্য জাতির মধ্যে প্রচলিত আছে; কিন্তু অন্য অন্য জন্তুদিগের মধ্যে নহে। অতঃপর, যে নারী পতিকে অতিক্রম করিবেক, তাহার ভ্রূণহত্যার সমান অসুখজনক ঘোর পাতক জন্মিবেক। আর, যে পুরুষ বাল্যাবধি সাধুশীল পতিব্রত পত্নীকে অতিক্রম করিবেক, তাহারও ভূতলে সেই পাতক হইবেক। এবং যে স্ত্রী, পতি কর্ত্তৃক পুত্রার্থে নিযুক্তা হইয়া তাঁহার আজ্ঞা প্রতিপালন না করিবেক, তাহারও এই পাতক হইবেক। হে ভয়শীলে! সেই উদ্দালকপুত্র শ্বেতকেতু, বল পুর্ব্বক, পুর্ব্ব কালে এই ধর্ম্মযুক্ত নিয়ম স্থাপন করিয়াছেন।”
PRINTED BY PITAMBARA VANDYOPADHYAYA.
AT THE SANSKRIT PRESS. 62. AMHERST STREET.
1884.
- ↑ মহাভারত আদিপর্ব্ব। ১২২ অধ্যায়