করুণী

তরুলতা
যে-ভাষায় কয় কথা
সে-ভাষা সে জানে,—
তৃণ তা’র পদক্ষেপ দয়া বলি’ মানে।
পুষ্পপল্লবের ’পরে তা’র আঁখি
অদৃশ্য প্রাণের হর্ষ দিয়ে যায় রাখি’।
স্নেহ তা’র আকাশের আলোর মতন
কাননের অন্তর-বেদন
দূর করিবার লাগি’
নিত্য আছে জাগি’।
শিশু হ’তে শিশুতর
গাছগুলি বোবা প্রাণে ভর-ভর;
বাতাসে বৃষ্টিতে
চঞ্চলিয়া জাগে তা’রা অর্থহীন গীতে,
ধরণীর যে-গভীরে চির রসধারা
সেইখানে তা’রা
কাঙাল প্রসারি’ ধরে তৃষিত অঞ্জলি,
বিশ্বের করুণারাশি শাখায় শাখায় উঠে ফলি’;—
সে তরুলতারি মতো স্নিগ্ধ প্রাণ তা’র;

শ্যামল উদার
সেবা যত্ন সরল শান্তিতে
ঘনচ্ছায়া বিস্তারিয়া আছে চারিভিতে;
তাহার মমতা
সকল প্রাণীর ’পরে বিছায়েছে স্নেহের সমতা;
পশু পাখী তা’র আপনার;
জীববৎসলার
স্নেহ ঝরে শিশুপরে, বনে যেন নত মেঘভার
ঢালে বারিধার।
তরুণ প্রাণের ’পরে করুণায় নিত্য সে তরুণী,—
—নাম কি করুণী?