মানসিংহ/মানসিংহের যশোর যাত্রা
মানসিংহের যশোর যাত্রা।
ধাঁ ধাঁ গুড় গুড় বাজে নাগারা। বাজে রবাব
মৃদঙ্গ দোতারা॥ পয়দল কলবল, ভূতল
টলমল, সাজল দলবল অটল সোয়ারা।
দামিনী তক তক, জামকী ধক ধক, ঝক
মক চক মক খর তর বারা॥ ব্রাহ্মণ রজ-
পুত, ক্ষত্রিয় রাহুত, মোগল মাহুত রণ
অনিবারা। ভাঁড় কলাবত, নাচত গায়ত,
ভারত অভিমত গীত সুধারা॥ ধ্রু॥
চলে রাজা মানসিংহ যশোর নগরে। সাজ সাজ বলি ডঙ্কা হইল লস্করে॥ ঘোড়া উট হাতি পিঠে নাগারা নিশান। গাড়িতে কামান চলে বাণ চন্দ্রবান॥ হাতির আমারী ঘরে বসিয়া আমীর। আপন লস্কর লয়ে হইল বাহির॥ আগে চলে লাল পোশ খাসবরদার। সিফাই সকল চলে কাতার কাতার॥ তরকী ধানুকী চালী রায়বেশে মাল। দফাদার জমাদার চলে সদীয়াল আগে আছে হাজারীর হাজার হাজার। নটী নট হরকরা উরুতু বাজার॥ সানাই কর্ণাল বাজে রাগ আলাপিয়া। ভাট পক্ষে রায়বার যশ বর্ণাইয়া॥ ধাঢী গায় কড়খা ভাঁড়াই করে ভাঁড়া মালে করে মালাম চোয়াড়ে লোফে কাঁড়॥ আগে পাছে দুই পাশে দুসারি লস্কর। চলিলেন মানসিংহ যশোর নগর॥ মজুন্দারে সঙ্গে নিলা ঘোড়া চূড়াইয়া। কাছে কাছে অশেষ বিশেষ জিজ্ঞাসিয়া। এই রূপে যশোর নগর উত্তরিয়া। থানা দিলা চারি দিকে মূরুচা করিয়া॥ শিষ্টাচার মত আগে দিলা সমাচার। পাঠাইয়া ফরমান বেড়ী তল বার॥ প্রতাপ আদিত্য রাজা তল বার লয়ে। বেড়ী ফিরা পাঠাইয়া পাঠাইল কয়ে॥ কহ গিয়া অরে চর মানসিংহ রায়ে। বেড়ী দেউক আপনার মনিবের পায়ে॥ লইলাম তলবার কহ গিয়া তারে। যমুনার জলে ধুব এই তলবারে॥ শুনি মানসিংহ সাজে করিতে সমর। রচিলা ভারতচন্দ্র রায় গুণাকর॥